‘এই বিদায় যেন না হয় শেষ বিদায়’

কদিন আগেও পরিবার পরিজন নিয়ে শান্ত জীবন ছিল ইগর কিয়েরেঙ্কোর। কিন্তু হায়, যুদ্ধ কেড়ে নিল জীবনের শান্তি। প্রাণ বাঁচাতে যে যেদিকে পারছে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। রাজধানী কিয়েভে মুহুর্মুহু গোলায় জীবনের অশ্চিয়তার মধ্যে ইগর তার পরিবারের সবাইকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন অন্যখানে।

 

ট্রেনে তুলে দিয়েছেন মা, স্ত্রী, দুই পুত্র, খালা ও শাশুড়িকে। ট্রেনের বন্ধ জানালার বাইরে দাঁড়ানো মধ্যবয়সী ইগর কাঁদছেন। ভেতরে বসা ছোট্ট ছেলেটির দিকে বাড়ানো এক অসহায় বাবার হাত। ক্রন্দনরত ইগর যেন অস্ফূটে বলছেন, ‘এই বিদায় যেন না হয় শেষ বিদায়’।

 

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনীয়রা কার্যত ভয়ানক এক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া সেই যুদ্ধ গড়িয়েছে ১১ দিনে। এরইমধ্যে ইউক্রেনের ১৫ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে প্রতিবেশি দেশগুলোতে শরণার্থী হয়েছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ।

 

ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগ দেওয়াকে ঘিরে প্রায় ‘অসম’ এই যুদ্ধে প্রতিদিনই হামলা-পাল্টা হামলা হচ্ছে। ইউক্রেনের একটির পর একটি শহর দখলে নিচ্ছে রুশ সেনারা। কামান, গোলা ও বোমা হামলার মধ্যেও পরিবারের নারী ও শিশুদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিলেও রাজধানী কিয়েভ ছাড়েননি অনেক পুরুষ।

আর্মিয়ানস্কের রাস্তায় রুশ সাঁজোয়া যান

আর্মিয়ানস্কের রাস্তায় রুশ সাঁজোয়া যান

ইগর কিয়েরেঙ্কো তেমনই একজন। দীর্ঘদিনের বাস প্রিয় শহরটি বাঁচাতে থেকে গেছেন এই ইউক্রেনীয়। তার মতো এমন অনেক ইউক্রেনীয় রণাঙ্গনে থেকে শহর-রক্ষার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তা কতোটুকু সম্ভব হবে সময়ই বলে দেবে।

 

কিয়েভের একটি রেলস্টেশনে স্ত্রী-পুত্রকে বিদায় দেওয়ার হৃদয়বিদারক দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। সেখানে ইগরের সঙ্গে কথা হয় আনাদুলু পোস্টের এক সাংবাদিকের সঙ্গে। কথা বলার সময় চোখের পানি অনর্গল তার গাল বেয়ে পড়ছিল।

 

আনাদুলুকে ইগর বলেন, ‘আমার পরিবারের সাত সদস্যকে কিয়েভ থেকে আরেক শহর এলভিভে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার দুই ছেলের একজন প্রতিবন্ধী। তাদেরকে আমার কাছ থেকে দূরে পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আমার শহরকে রক্ষায় আমি রয়ে গেছি।’ সূএ:ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু, সেই সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে!

» শিশু আছিয়ার পরিবারকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করল জামায়াত

» জামায়াত আমিরের হার্টে ব্লক, জরুরি সার্জারির সিদ্ধান্ত

» ফেব্রুয়ারির পর অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে না: হাবিবুর রহমান

» দুই ছাত্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

» আশুলিয়ার গণহত্যা ছাড়িয়েছে কারবালার নৃশংসতাকেও: তারেক রহমান

» এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যাতে হাসিনা ফেরার সুযোগ পায়: মির্জা ফখরুল

» আওয়ামী লীগ আমলে ভোট করা অপরাধ হলে বিএনপি-জামায়াতও অপরাধী, দাবি জাতীয় পার্টির

» ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিবি তা করবে: আখতার হোসেন

» বাংলাদেশকে অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি দিতে চায় চীন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘এই বিদায় যেন না হয় শেষ বিদায়’

কদিন আগেও পরিবার পরিজন নিয়ে শান্ত জীবন ছিল ইগর কিয়েরেঙ্কোর। কিন্তু হায়, যুদ্ধ কেড়ে নিল জীবনের শান্তি। প্রাণ বাঁচাতে যে যেদিকে পারছে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। রাজধানী কিয়েভে মুহুর্মুহু গোলায় জীবনের অশ্চিয়তার মধ্যে ইগর তার পরিবারের সবাইকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন অন্যখানে।

 

ট্রেনে তুলে দিয়েছেন মা, স্ত্রী, দুই পুত্র, খালা ও শাশুড়িকে। ট্রেনের বন্ধ জানালার বাইরে দাঁড়ানো মধ্যবয়সী ইগর কাঁদছেন। ভেতরে বসা ছোট্ট ছেলেটির দিকে বাড়ানো এক অসহায় বাবার হাত। ক্রন্দনরত ইগর যেন অস্ফূটে বলছেন, ‘এই বিদায় যেন না হয় শেষ বিদায়’।

 

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনীয়রা কার্যত ভয়ানক এক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া সেই যুদ্ধ গড়িয়েছে ১১ দিনে। এরইমধ্যে ইউক্রেনের ১৫ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে প্রতিবেশি দেশগুলোতে শরণার্থী হয়েছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ।

 

ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগ দেওয়াকে ঘিরে প্রায় ‘অসম’ এই যুদ্ধে প্রতিদিনই হামলা-পাল্টা হামলা হচ্ছে। ইউক্রেনের একটির পর একটি শহর দখলে নিচ্ছে রুশ সেনারা। কামান, গোলা ও বোমা হামলার মধ্যেও পরিবারের নারী ও শিশুদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিলেও রাজধানী কিয়েভ ছাড়েননি অনেক পুরুষ।

আর্মিয়ানস্কের রাস্তায় রুশ সাঁজোয়া যান

আর্মিয়ানস্কের রাস্তায় রুশ সাঁজোয়া যান

ইগর কিয়েরেঙ্কো তেমনই একজন। দীর্ঘদিনের বাস প্রিয় শহরটি বাঁচাতে থেকে গেছেন এই ইউক্রেনীয়। তার মতো এমন অনেক ইউক্রেনীয় রণাঙ্গনে থেকে শহর-রক্ষার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তা কতোটুকু সম্ভব হবে সময়ই বলে দেবে।

 

কিয়েভের একটি রেলস্টেশনে স্ত্রী-পুত্রকে বিদায় দেওয়ার হৃদয়বিদারক দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। সেখানে ইগরের সঙ্গে কথা হয় আনাদুলু পোস্টের এক সাংবাদিকের সঙ্গে। কথা বলার সময় চোখের পানি অনর্গল তার গাল বেয়ে পড়ছিল।

 

আনাদুলুকে ইগর বলেন, ‘আমার পরিবারের সাত সদস্যকে কিয়েভ থেকে আরেক শহর এলভিভে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার দুই ছেলের একজন প্রতিবন্ধী। তাদেরকে আমার কাছ থেকে দূরে পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আমার শহরকে রক্ষায় আমি রয়ে গেছি।’ সূএ:ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com