দেশ আঠারো কোটি মানুষের

ছবি সংগৃহীত

 

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম:আগস্ট বাঙালি জাতির জীবনে এক চরম বেদনার মাস। সারা বিশ্বে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ার মাস। আর আমার এবং আমার পুরো পরিবারের জীবনযুদ্ধে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মাস। লিখতে চেয়েছিলাম নিজের জীবনের হাসি-কান্না-দুঃখ-বেদনা নিয়ে। কিন্তু দেশের এ অগ্নিগর্ভ অবস্থায় নিজের কথা, পরিবারের কথা বলতে ভালো লাগছে না, ভালো লাগার কথাও না। তাই মাসের শেষে যদি স্বস্তি ফেরে, দেশ স্বাভাবিক হয় আর যদি বেঁচে থাকি তাহলে সেই দুর্দিনের কথা, দুর্যোগের কথা, অবিশ্বাস্য যন্ত্রণার কথা, বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার পর অনেকের মুখ ফিরিয়ে রাখার কথা আলোচনা করব। আর যদি সময় না পাই তাহলে অন্য কথা। এখন আর ১০-১৫ বছর আগের মতো অনেক কিছুতেই তেমন কষ্ট পাই না। সহ্যের সীমা মনে হয় আগের থেকে বেড়েছে। ঢিল ছুড়ে ঢিল খেলে তবু একটা সান্ত্বনা থাকে, কিন্তু না ছুড়ে ঢিল খেলে কষ্ট একটু বেশি হয়। ভুল পরিচালনায় দেশের যে উত্তাল দারুণ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এর জবাব কে দেবে? কাউকে না কাউকে তো দিতেই হবে। বহুবার বলেছি শুধু আওয়ামী লীগ, শুধু বিএনপি বা অন্য কোনো দল বা গোষ্ঠীর দেশ নয়, দেশ আরও অনেক বড় আঠারো কোটি মানুষের। যোগ্যতা অনুসারে সবার ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকা উচিত। নিজের পছন্দের ছাগল দিয়ে খেত মাড়ানো চলে না, সিংহের কাজ ছাগল দিয়ে হয় না। ধান মাড়াতে মলন দিতে গরুর দরকার, বাঘের কাজ গরুর নয়। তাই যেখানে যাকে প্রয়োজন যোগ্যতা অনুযায়ী সেখানে তাকে দেওয়া উচিত বা সেই স্থান তাকে ছেড়ে দেওয়া দরকার। অনেক আগে শুনেছি, রাজ্যে বাঘ পড়লে কিংবা আক্রমণ হলে সতীনের ছেলেকে পাঠাতে হয়। সতীনের ছেলে বাঘ মারতে পারলে রাজ্যে শান্তি অথবা সতীনের ছেলে মারা গেলে নিজের ছেলে যুবরাজ। গত কয়েক বছর সরকারে এবং আওয়ামী লীগে কোনো যোগ্য লোককে নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। যে দলে পদবাণিজ্য হয়, লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা নিয়ে পদ দেওয়া হয়, সংসদ সদস্য বানানো হয় তাদের দিয়ে এ রকম বড়োসড়ো যথার্থ আন্দোলন মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে বলে মারাত্মক অন্যায় ও ভুল করেছেন। আইয়ুব-মোনায়েমের আমলে সরকারের দালাল এনএসএফ আমাদের যত্রতত্র আঘাত করেছে। কিন্তু একসময় আমাদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তারা তুলার চাইতে হালকা হয়ে গেছে। মানুষ ওবায়দুল কাদেরের দাম্ভিকতা পছন্দ করেনি। অনেকের উগ্রতা মানুষকে বেদনাহত করে, ক্ষোভের সৃষ্টি করে। সে সবেরই সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। শুধু বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ দিলে চলবে না। বিএনপি-জামায়াতের যা যা করণীয় তারা মরিয়া হয়ে তা করবে, এটাই স্বাভাবিক। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফল কিছুই হবে না।

 

জানি না কেন, কী কারণে আজ কদিন হানিফ ফ্লাইওভার-এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ। ফ্লাইওভার বা এক্সপ্রেসওয়ে কি দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে? তা কিন্তু হয়নি। টোল প্লাজা পুড়ে ছারখার হয়েছে। টোল প্লাজা পুড়েছে তাতে কী হয়েছে? টোল প্লাজা পুড়েছে টোল নেবে না দু-চার মাস বা যে কদিন টোল প্লাজা নতুন করে তৈরি করা না যায় ততদিন টোল না নিলে দেশ কি বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাবে? প্রধান উদ্দেশ্য কি টোল আদায়, নাকি সাধারণ মানুষকে যানজটমুক্ত যাতায়াতের সুযোগ করে দেওয়া? আমরা কুয়োর ব্যাঙ সাগরের খবর রাখব কী করে? মেট্রোরেল, ঢাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছিল। দুটি স্টেশন ভাঙচুর হয়েছে। তা নাকি ঠিক করতে ৫০০ কোটি লাগবে। তা তো লাগবেই। কোনো জবাবদিহি নেই। মর্জিমাফিক সবকিছু চলে না। ৫০০ কোটি লাগুক আর ৫ হাজার কোটি -দুটি স্টেশন ভাঙচুর হলে পুরো মেট্রোরেল যদি বন্ধ থাকে তাহলে ওই খেলনা পথ বানিয়েছেন কেন? দুটি স্টেশনে যদি কার্যক্রম করা না যায় করবেন না, বাকিগুলো সচল রাখতে অসুবিধা কোথায়? অযোগ্যদের বাহানাবাজিতে দেশ অনেকটাই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে ঠেকেছে। এখনই যদি তাদের লাগাম টানা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে কী পরিণতি হবে ভেবে পাচ্ছি না। পৃথিবীর কত দেশে মেট্রো আছে কত ভাঙচুর হয় দুর্ঘটনা ঘটে সেজন্য কিন্তু পুরো প্রজেক্ট বন্ধ থাকে না। কী সব পন্ডিতের পাল্লায় পড়েছি! এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, বাংলাদেশের মানুষ কিছুই বোঝে না। একটা ভালো ইঞ্জিনিয়ারকে বললে দু-চার দিনে রেল চালিয়ে দিতে পারত। এ মেট্রোলাইন তৈরির আগে অনেকেই বলেছিলেন, হাজার বছরেও কিছু হবে না। আনুষঙ্গিক সবকিছু চুরমার হয়ে গেলেও অবলীলায় গাড়ি চলবে। কিন্তু স্টেশনের কটা জানালা-দরজার কাচ, ভিতরে ঢোকা এবং বের হওয়ার কিছু যন্ত্রপাতি ভেঙেছে তাই বলছেন মেরামত করতে পাঁচ-সাত বছর লাগবে তাহলে ওসব বানিয়েছেন কেন? এসব খেলনা মেট্রোরেল আমরা চাই না, যা টেকসই নয়, যা আমরা অবলীলায় ব্যবহার করতে পারব না। এসব নিয়ে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় আছি। চারদিকের অব্যবস্থা দেখে মারাত্মক খারাপ লাগছে।

 

২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের পীড়াপীড়িতে বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী অনতিবিলম্বে সর্বদলীয় সম্মেলন ডাকুন। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করুন। পরদিন নেত্রী বোন হাসিনা ব্যবসায়ীদের ডেকেছিলেন। তারা আমরণ প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকবেন – কথাটা মিথ্যা নয়। যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ততক্ষণ তারা সত্যিই পাশে থাকবেন। আবার তার বাড়ি থেকে বেরিয়েই অন্য কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে পারলে সুবিধা সে তৎপরতায় জানপ্রাণ পাত করেছেন। তারপর ডেকেছিলেন সংবাদপত্রের সম্পাদকদের। এটা ভালো কাজ করেছেন। সেদিন শিক্ষক-চিকিৎসক-বুদ্ধিজীবীদের। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছিলেন পিতা-মাতার মতো অভিভাবক। এখন কোনো শিক্ষক পিতা নন, মাতা নন, তারাও ব্যবসায়ী। ৫০ বছর আগে শিক্ষা আর স্বাস্থ্য ছিল অবৈতনিক। তেমন কোনো খরচ ছিল না। এখন শিক্ষা আর স্বাস্থ্য হচ্ছে সব থেকে বড় ব্যবসা। তাই শিক্ষকদের বললেই কিছু হবে না, ছাত্রের বাবা-মাকে বলতে হবে। তাতেও পুরো কাজ হবে না, অর্ধেক হবে। কেন যেন বুঝতে পারছি না প্রিয় বোন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সমস্যা ব্যবসায়ীদের দিয়ে, উকিল-মোক্তার-ডাক্তার দিয়ে সমাধান করতে চেয়েছেন, দেশটাকে একেবারে রাজনীতিবিবর্জিত করতে কেন চেয়েছিলেন। এসবের কিছুই মাথায় আসে না। আমি সারা জীবন চোখে যা দেখেছি তা-ই বলার চেষ্টা করেছি। এখন যাওয়ার সময় কারও ভয়ে নিজের বিবেক কলুষিত করব না। আইয়ুব খানের নির্যাতন দেখেছি, নিজে নির্যাতিত হয়েছি, পরিবার ভেঙে চুরমার হয়েছে। সহকর্মীরা আঘাতের পর আঘাত সহ্য করেছে। তাদের ছোটখাটো সংসার ভেঙে চুর্ণবিচুর্ণ হয়েছে। কিন্তু আমাদের দমাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত আমরাই জয়ী হয়েছি। কীভাবে কথাটা বলব, বলা উচিত হবে কি না বুঝতে পারছি না। রাস্তাঘাটে পুলিশ দেখছি, অনেক জায়গায়ই তাদের তেমন উগ্রতা দেখিনি। কোনো কোনো জায়গায় নিশ্চয়ই ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারীদের মধ্যেও উচ্ছৃঙ্খল আছে। কিন্তু প্রথম দিকে শাহবাগে বা তার আশপাশে পুলিশদের যে ধৈর্য দেখেছি তার প্রশংসা না করে থাকা যায় না। আজ কদিন সেনাবাহিনী নেমেছে, কারফিউ দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলছে ইমারজেন্সি ডিক্লেয়ার করা হবে, মানে জরুরি অবস্থা। এযাবৎ দেখেছি আগে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। তাতে কাজ না হলে কারফিউ দেওয়া হয়। কারফিউ তো দেওয়া হয়েই গেছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে তেমন আকার-বিকার নেই। কারফিউর মধ্যে গাড়ি-ঘোড়া চলছে, দোকানপাট খুলছে সব স্বাভাবিক। তাহলে এরপর আর কী হবে? একটা সমাধান তো চাই। সেদিন সাভার হর্টিকালচারে গিয়েছিলাম। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ছিল। আসার পথে গেটে ১৫-২০ জন দাঁড়িয়ে ছিল। আমার বদভ্যাস, লোকজনের সঙ্গে হাত না মিলিয়ে সরতে পারি না। কেউ ভাই, কেউ চাচা, কেউ দাদা, কেউ আঙ্কেল বলে সম্বোধন করছিল, কেউ আবার স্যার বলছিল। দু-তিন জনের কাছে শুনলাম, ‘স্যার, জানেন এখন পুলিশদের পাহারা দিচ্ছে মিলিটারিরা।’ কথাটা আমাকে স্পর্শ করেছিল। পরে ভেবেছি, সত্যিই তো কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়। কারফিউ দিয়ে রাস্তাঘাটে মিলিটারি নেমেছে প্রায় ১৫ দিন। কোথাও কোনো মিলিটারি একটা গুলিও চালায়নি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে যেমন ওঠাবসা ছিল, তখনকার সেনাপ্রধান নূরুদ্দিনের সঙ্গেও ছিল। সেনাপ্রধান নূরুদ্দিন আপন ভাইয়ের মতো সম্মান করতেন, বড় ভাই বলে ডাকতেন। নূরুদ্দিন বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন বলেছিলেন সেনাবাহিনী নামাতে। আমি বলেছিলাম জনগণের মুখোমুখি হওয়া আমাদের কাজ নয়, সেনাবাহিনীর কাজ নয়। যতক্ষণ আপনি জনগণকে সামাল দেবেন দিতে পারবেন ততক্ষণই আপনার সঙ্গে আছি।’ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও খেদ ব্যক্ত করে দু-চার বার বলেছেন, ‘নূরুদ্দিন আমাকে বাবা বলে ডাকত। কিন্তু তাকে সেনাবাহিনী নামাতে বললে কথা শোনেনি।

 

দেশবাসী সত্যিই এর একটা সমাধান চায় এবং সে সমাধান এখনো মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই অনেক বেশি। তিনি আন্তরিক হলে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করতে চাইলে তাঁকে সবার সঙ্গে বসতে হবে। আন্দোলনরতদের সঙ্গে সমন্বয় করতে দায়িত্ব দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে। আনিসুল হক অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের ছেলে হতে পারেন। কিন্তু তিনি সিরাজুল হক নন। তাঁর তেমন ব্যক্তিত্ব-নেতৃত্ব-গুরুত্ব নেই। ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানোর মতো। যাদের দিয়ে কথা হতে পারত তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ডিবির অফিসে হারুন তার নিজের ক্ষমতাতেই আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের ধরে নিয়ে যায়নি, হেফাজতে রাখেনি। ওপর থেকে কেউ না কেউ হুকুম দিয়েছে। হারুনকে অন্যত্র বদলি জাতির ক্রোধ প্রশমনের পথ নয়। তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল। যারা কলকাঠি নাড়িয়েছে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। এক বেনজীর গেছে, আরেকজনকে নতুন বেনজীর বানানোর কোনো মানে হয় না। দেশ যদি ভালোভাবে চলত আমাকে বলতেন, আমি যদি আন্দোলনকারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে বসতে না পারতাম ১০ হাত নাকে খত দিতাম। আপনারা কাউকে সম্মান করবেন না, সরকারে আছেন বলে আপনাদের সবাই সম্মান করবে এটা সত্য নয়। কোনো একসময় পাগল-ছাগল বলা সেটাও সহ্য করেছি। কারণ আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সন্তান। কিন্তু সবাই সহ্য করবে কেন? ঠিক জানি না এখনো সময় আছে কি না। তবে ট্যাংকের পাহারায় থাকা কোনো রাজনৈতিক দল, সরকার কিংবা কোনো নেতার জন্য খুব একটা সম্মান দেখি না।

 

একজন স্বাধীনতা যোদ্ধা ও দেশের প্রবীণ নাগরিক হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ করে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ -আপনারা জনগণের মুখোমুখি হবেন না। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি কোনো নিষ্ঠুর আচরণ করবেন না। বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি দেশের আপামর জনসাধারণের বিশ্বাস ও আস্থা আপনারা পুরোপুরি রক্ষা করবেন এবং দেশকে এ দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচাবেন এটাই সবার প্রত্যাশা।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com      সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান রিজভীর

» বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

» জনগণের ৭০ ভাগ পিআরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে: মতিউর রহমান আকন্দ

» বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বহু রাজনীতিবীদের শিক্ষক: মির্জা ফখরুল

» বিএনপি সেই গণতন্ত্রের কথা বলে, যে গণতন্ত্রে মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে  : ড. মঈন খান

» সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে শাপলা বিক্রি করেই চলছে দিনমজুর হানিফের সংসার, সরকারী সহায়তা বঞ্চিত!

» লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রস্তুত ৪ শত ৬৮ টি পূজা মন্ডব

» আগৈলঝাড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ ললিতা সরকার শিক্ষা ও নৃত্যকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

» ঢাকা থেকে জামালপুরের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি ওলামা পরিষদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দেশ আঠারো কোটি মানুষের

ছবি সংগৃহীত

 

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম:আগস্ট বাঙালি জাতির জীবনে এক চরম বেদনার মাস। সারা বিশ্বে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ার মাস। আর আমার এবং আমার পুরো পরিবারের জীবনযুদ্ধে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মাস। লিখতে চেয়েছিলাম নিজের জীবনের হাসি-কান্না-দুঃখ-বেদনা নিয়ে। কিন্তু দেশের এ অগ্নিগর্ভ অবস্থায় নিজের কথা, পরিবারের কথা বলতে ভালো লাগছে না, ভালো লাগার কথাও না। তাই মাসের শেষে যদি স্বস্তি ফেরে, দেশ স্বাভাবিক হয় আর যদি বেঁচে থাকি তাহলে সেই দুর্দিনের কথা, দুর্যোগের কথা, অবিশ্বাস্য যন্ত্রণার কথা, বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার পর অনেকের মুখ ফিরিয়ে রাখার কথা আলোচনা করব। আর যদি সময় না পাই তাহলে অন্য কথা। এখন আর ১০-১৫ বছর আগের মতো অনেক কিছুতেই তেমন কষ্ট পাই না। সহ্যের সীমা মনে হয় আগের থেকে বেড়েছে। ঢিল ছুড়ে ঢিল খেলে তবু একটা সান্ত্বনা থাকে, কিন্তু না ছুড়ে ঢিল খেলে কষ্ট একটু বেশি হয়। ভুল পরিচালনায় দেশের যে উত্তাল দারুণ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এর জবাব কে দেবে? কাউকে না কাউকে তো দিতেই হবে। বহুবার বলেছি শুধু আওয়ামী লীগ, শুধু বিএনপি বা অন্য কোনো দল বা গোষ্ঠীর দেশ নয়, দেশ আরও অনেক বড় আঠারো কোটি মানুষের। যোগ্যতা অনুসারে সবার ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকা উচিত। নিজের পছন্দের ছাগল দিয়ে খেত মাড়ানো চলে না, সিংহের কাজ ছাগল দিয়ে হয় না। ধান মাড়াতে মলন দিতে গরুর দরকার, বাঘের কাজ গরুর নয়। তাই যেখানে যাকে প্রয়োজন যোগ্যতা অনুযায়ী সেখানে তাকে দেওয়া উচিত বা সেই স্থান তাকে ছেড়ে দেওয়া দরকার। অনেক আগে শুনেছি, রাজ্যে বাঘ পড়লে কিংবা আক্রমণ হলে সতীনের ছেলেকে পাঠাতে হয়। সতীনের ছেলে বাঘ মারতে পারলে রাজ্যে শান্তি অথবা সতীনের ছেলে মারা গেলে নিজের ছেলে যুবরাজ। গত কয়েক বছর সরকারে এবং আওয়ামী লীগে কোনো যোগ্য লোককে নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। যে দলে পদবাণিজ্য হয়, লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা নিয়ে পদ দেওয়া হয়, সংসদ সদস্য বানানো হয় তাদের দিয়ে এ রকম বড়োসড়ো যথার্থ আন্দোলন মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে বলে মারাত্মক অন্যায় ও ভুল করেছেন। আইয়ুব-মোনায়েমের আমলে সরকারের দালাল এনএসএফ আমাদের যত্রতত্র আঘাত করেছে। কিন্তু একসময় আমাদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তারা তুলার চাইতে হালকা হয়ে গেছে। মানুষ ওবায়দুল কাদেরের দাম্ভিকতা পছন্দ করেনি। অনেকের উগ্রতা মানুষকে বেদনাহত করে, ক্ষোভের সৃষ্টি করে। সে সবেরই সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। শুধু বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ দিলে চলবে না। বিএনপি-জামায়াতের যা যা করণীয় তারা মরিয়া হয়ে তা করবে, এটাই স্বাভাবিক। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফল কিছুই হবে না।

 

জানি না কেন, কী কারণে আজ কদিন হানিফ ফ্লাইওভার-এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ। ফ্লাইওভার বা এক্সপ্রেসওয়ে কি দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে? তা কিন্তু হয়নি। টোল প্লাজা পুড়ে ছারখার হয়েছে। টোল প্লাজা পুড়েছে তাতে কী হয়েছে? টোল প্লাজা পুড়েছে টোল নেবে না দু-চার মাস বা যে কদিন টোল প্লাজা নতুন করে তৈরি করা না যায় ততদিন টোল না নিলে দেশ কি বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাবে? প্রধান উদ্দেশ্য কি টোল আদায়, নাকি সাধারণ মানুষকে যানজটমুক্ত যাতায়াতের সুযোগ করে দেওয়া? আমরা কুয়োর ব্যাঙ সাগরের খবর রাখব কী করে? মেট্রোরেল, ঢাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছিল। দুটি স্টেশন ভাঙচুর হয়েছে। তা নাকি ঠিক করতে ৫০০ কোটি লাগবে। তা তো লাগবেই। কোনো জবাবদিহি নেই। মর্জিমাফিক সবকিছু চলে না। ৫০০ কোটি লাগুক আর ৫ হাজার কোটি -দুটি স্টেশন ভাঙচুর হলে পুরো মেট্রোরেল যদি বন্ধ থাকে তাহলে ওই খেলনা পথ বানিয়েছেন কেন? দুটি স্টেশনে যদি কার্যক্রম করা না যায় করবেন না, বাকিগুলো সচল রাখতে অসুবিধা কোথায়? অযোগ্যদের বাহানাবাজিতে দেশ অনেকটাই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে ঠেকেছে। এখনই যদি তাদের লাগাম টানা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে কী পরিণতি হবে ভেবে পাচ্ছি না। পৃথিবীর কত দেশে মেট্রো আছে কত ভাঙচুর হয় দুর্ঘটনা ঘটে সেজন্য কিন্তু পুরো প্রজেক্ট বন্ধ থাকে না। কী সব পন্ডিতের পাল্লায় পড়েছি! এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, বাংলাদেশের মানুষ কিছুই বোঝে না। একটা ভালো ইঞ্জিনিয়ারকে বললে দু-চার দিনে রেল চালিয়ে দিতে পারত। এ মেট্রোলাইন তৈরির আগে অনেকেই বলেছিলেন, হাজার বছরেও কিছু হবে না। আনুষঙ্গিক সবকিছু চুরমার হয়ে গেলেও অবলীলায় গাড়ি চলবে। কিন্তু স্টেশনের কটা জানালা-দরজার কাচ, ভিতরে ঢোকা এবং বের হওয়ার কিছু যন্ত্রপাতি ভেঙেছে তাই বলছেন মেরামত করতে পাঁচ-সাত বছর লাগবে তাহলে ওসব বানিয়েছেন কেন? এসব খেলনা মেট্রোরেল আমরা চাই না, যা টেকসই নয়, যা আমরা অবলীলায় ব্যবহার করতে পারব না। এসব নিয়ে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় আছি। চারদিকের অব্যবস্থা দেখে মারাত্মক খারাপ লাগছে।

 

২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের পীড়াপীড়িতে বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী অনতিবিলম্বে সর্বদলীয় সম্মেলন ডাকুন। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করুন। পরদিন নেত্রী বোন হাসিনা ব্যবসায়ীদের ডেকেছিলেন। তারা আমরণ প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকবেন – কথাটা মিথ্যা নয়। যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ততক্ষণ তারা সত্যিই পাশে থাকবেন। আবার তার বাড়ি থেকে বেরিয়েই অন্য কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে পারলে সুবিধা সে তৎপরতায় জানপ্রাণ পাত করেছেন। তারপর ডেকেছিলেন সংবাদপত্রের সম্পাদকদের। এটা ভালো কাজ করেছেন। সেদিন শিক্ষক-চিকিৎসক-বুদ্ধিজীবীদের। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছিলেন পিতা-মাতার মতো অভিভাবক। এখন কোনো শিক্ষক পিতা নন, মাতা নন, তারাও ব্যবসায়ী। ৫০ বছর আগে শিক্ষা আর স্বাস্থ্য ছিল অবৈতনিক। তেমন কোনো খরচ ছিল না। এখন শিক্ষা আর স্বাস্থ্য হচ্ছে সব থেকে বড় ব্যবসা। তাই শিক্ষকদের বললেই কিছু হবে না, ছাত্রের বাবা-মাকে বলতে হবে। তাতেও পুরো কাজ হবে না, অর্ধেক হবে। কেন যেন বুঝতে পারছি না প্রিয় বোন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সমস্যা ব্যবসায়ীদের দিয়ে, উকিল-মোক্তার-ডাক্তার দিয়ে সমাধান করতে চেয়েছেন, দেশটাকে একেবারে রাজনীতিবিবর্জিত করতে কেন চেয়েছিলেন। এসবের কিছুই মাথায় আসে না। আমি সারা জীবন চোখে যা দেখেছি তা-ই বলার চেষ্টা করেছি। এখন যাওয়ার সময় কারও ভয়ে নিজের বিবেক কলুষিত করব না। আইয়ুব খানের নির্যাতন দেখেছি, নিজে নির্যাতিত হয়েছি, পরিবার ভেঙে চুরমার হয়েছে। সহকর্মীরা আঘাতের পর আঘাত সহ্য করেছে। তাদের ছোটখাটো সংসার ভেঙে চুর্ণবিচুর্ণ হয়েছে। কিন্তু আমাদের দমাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত আমরাই জয়ী হয়েছি। কীভাবে কথাটা বলব, বলা উচিত হবে কি না বুঝতে পারছি না। রাস্তাঘাটে পুলিশ দেখছি, অনেক জায়গায়ই তাদের তেমন উগ্রতা দেখিনি। কোনো কোনো জায়গায় নিশ্চয়ই ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারীদের মধ্যেও উচ্ছৃঙ্খল আছে। কিন্তু প্রথম দিকে শাহবাগে বা তার আশপাশে পুলিশদের যে ধৈর্য দেখেছি তার প্রশংসা না করে থাকা যায় না। আজ কদিন সেনাবাহিনী নেমেছে, কারফিউ দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলছে ইমারজেন্সি ডিক্লেয়ার করা হবে, মানে জরুরি অবস্থা। এযাবৎ দেখেছি আগে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। তাতে কাজ না হলে কারফিউ দেওয়া হয়। কারফিউ তো দেওয়া হয়েই গেছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে তেমন আকার-বিকার নেই। কারফিউর মধ্যে গাড়ি-ঘোড়া চলছে, দোকানপাট খুলছে সব স্বাভাবিক। তাহলে এরপর আর কী হবে? একটা সমাধান তো চাই। সেদিন সাভার হর্টিকালচারে গিয়েছিলাম। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ছিল। আসার পথে গেটে ১৫-২০ জন দাঁড়িয়ে ছিল। আমার বদভ্যাস, লোকজনের সঙ্গে হাত না মিলিয়ে সরতে পারি না। কেউ ভাই, কেউ চাচা, কেউ দাদা, কেউ আঙ্কেল বলে সম্বোধন করছিল, কেউ আবার স্যার বলছিল। দু-তিন জনের কাছে শুনলাম, ‘স্যার, জানেন এখন পুলিশদের পাহারা দিচ্ছে মিলিটারিরা।’ কথাটা আমাকে স্পর্শ করেছিল। পরে ভেবেছি, সত্যিই তো কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়। কারফিউ দিয়ে রাস্তাঘাটে মিলিটারি নেমেছে প্রায় ১৫ দিন। কোথাও কোনো মিলিটারি একটা গুলিও চালায়নি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে যেমন ওঠাবসা ছিল, তখনকার সেনাপ্রধান নূরুদ্দিনের সঙ্গেও ছিল। সেনাপ্রধান নূরুদ্দিন আপন ভাইয়ের মতো সম্মান করতেন, বড় ভাই বলে ডাকতেন। নূরুদ্দিন বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন বলেছিলেন সেনাবাহিনী নামাতে। আমি বলেছিলাম জনগণের মুখোমুখি হওয়া আমাদের কাজ নয়, সেনাবাহিনীর কাজ নয়। যতক্ষণ আপনি জনগণকে সামাল দেবেন দিতে পারবেন ততক্ষণই আপনার সঙ্গে আছি।’ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও খেদ ব্যক্ত করে দু-চার বার বলেছেন, ‘নূরুদ্দিন আমাকে বাবা বলে ডাকত। কিন্তু তাকে সেনাবাহিনী নামাতে বললে কথা শোনেনি।

 

দেশবাসী সত্যিই এর একটা সমাধান চায় এবং সে সমাধান এখনো মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই অনেক বেশি। তিনি আন্তরিক হলে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করতে চাইলে তাঁকে সবার সঙ্গে বসতে হবে। আন্দোলনরতদের সঙ্গে সমন্বয় করতে দায়িত্ব দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে। আনিসুল হক অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের ছেলে হতে পারেন। কিন্তু তিনি সিরাজুল হক নন। তাঁর তেমন ব্যক্তিত্ব-নেতৃত্ব-গুরুত্ব নেই। ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানোর মতো। যাদের দিয়ে কথা হতে পারত তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ডিবির অফিসে হারুন তার নিজের ক্ষমতাতেই আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের ধরে নিয়ে যায়নি, হেফাজতে রাখেনি। ওপর থেকে কেউ না কেউ হুকুম দিয়েছে। হারুনকে অন্যত্র বদলি জাতির ক্রোধ প্রশমনের পথ নয়। তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল। যারা কলকাঠি নাড়িয়েছে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। এক বেনজীর গেছে, আরেকজনকে নতুন বেনজীর বানানোর কোনো মানে হয় না। দেশ যদি ভালোভাবে চলত আমাকে বলতেন, আমি যদি আন্দোলনকারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে বসতে না পারতাম ১০ হাত নাকে খত দিতাম। আপনারা কাউকে সম্মান করবেন না, সরকারে আছেন বলে আপনাদের সবাই সম্মান করবে এটা সত্য নয়। কোনো একসময় পাগল-ছাগল বলা সেটাও সহ্য করেছি। কারণ আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সন্তান। কিন্তু সবাই সহ্য করবে কেন? ঠিক জানি না এখনো সময় আছে কি না। তবে ট্যাংকের পাহারায় থাকা কোনো রাজনৈতিক দল, সরকার কিংবা কোনো নেতার জন্য খুব একটা সম্মান দেখি না।

 

একজন স্বাধীনতা যোদ্ধা ও দেশের প্রবীণ নাগরিক হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ করে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ -আপনারা জনগণের মুখোমুখি হবেন না। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি কোনো নিষ্ঠুর আচরণ করবেন না। বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি দেশের আপামর জনসাধারণের বিশ্বাস ও আস্থা আপনারা পুরোপুরি রক্ষা করবেন এবং দেশকে এ দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচাবেন এটাই সবার প্রত্যাশা।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com      সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com