হার্ট অ্যাটাক পরবর্তী ১ থেকে ২ ঘণ্টা কেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

ছবি সংগৃহীত

 

একটি আতঙ্কের নাম হার্ট অ্যাটাক। কম বয়সী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ অনেকেই এই স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হঠাৎ বুকে ব্যথা, সারা শরীরে ঘামানো আর তারপরই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে আসা। হার্ট অ্যাটাকের ধরন অনেকটা এমন। প্রতিনিয়ত এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের পর পরবর্তী ১ থেকে ২ ঘণ্টা রোগীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য এই সময়কে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা করা গেলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।

 

যেসব লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন 

  • রোগী অতিরিক্ত ঘামাতে শুরু করবেন। পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। এটিই হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ।
  • রোগীর দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকবে। বুকে হালকা চাপযুক্ত ব্যথা অনুভূত হবে।
  • এসময় রোগীর শীত শীত লাগতে পারে।
  • ব্যথা বুক থেকে ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • নারীদের ক্ষেত্রে ওপরের লক্ষণগুলোর পাশাপাশি পেটে অস্বস্তি, পিঠে ব্যথার মতো কিছু লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

heart-attack3

হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে বাঁচাতে বাড়ি কিংবা আশেপাশের লোকজনের করণীয় 

দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া 

রোগীর অবস্থা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরের ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে ইকো কার্ডিয়োগ্রাফি, ইসিজি করতে হবে। এতে বোঝা যাবে হার্টের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধেছে কি না। বাঁধলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি বা থ্রম্বোলাইসিস করে রক্ত বের করতে হবে।

 

সিপিআর দেওয়া 

চিকিৎসকের আসতে দেরি হলে কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিলম্ব হলে বাড়িতেই রোগীকে সিপিআর দিতে হবে। এটি হাতের মাধ্যমে বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম ভাবে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখার একটি কার্যকরী উপায়। ইউটিউব দেখে সিপিআর দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সবার শিখে নেওয়া উচিত।

 

আশেপাশে কেউ না থাকলে 

যদি এমন হয় যে আপনার নিজের শরীরে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো দেখা দিয়েছে এবং আশেপাশে কেউ নেই সেক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে ‘সেলফ সিপিআর’ শুরু করুন। নিজেকে নিজে সিপিআর দেওয়ার এই পদ্ধতিকে ‘কাফ সিপিআর’ বলা হয়। এটি সম্পূর্ণ বিপদ দূর করতে না পারলেও সাময়িক স্বস্তি দেয়।

 

খুব জোরে জোরে কাশতে থাকুন। সেসঙ্গে গভীর ভাবে শ্বাস টানুন আর কাশতে শুরু করুন। কাশির সঙ্গে সঙ্গেই গভীর ভাবে শ্বাস নিতে হবে আর ছাড়তে হবে। কয়েক সেকেন্ড অন্তর-অন্তর এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।

 

‘ডিপ ব্রিদিং’ করলে হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ চালু থাকবে এবং জোরে কাশতে থাকলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও হার্টে রক্ত সঞ্চালন বজায় থাকবে।

 

হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকলে সবসময় সঙ্গে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ রাখতে হবে।

 

বাড়িতে হার্টের রোগী থাকলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। একইসঙ্গে নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়ায়। ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস ছাড়াতে হবে। কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া চলবে না। কমাতে হবে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। হার্টের অসুখ থাকলে, কী ধরনের শরীরচর্চা করা যাবে তা চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকের থেকে জেনে নিন।  সূএ: ঢাকা মেইল  ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ

» বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে বিএনপির শুভেচ্ছা

» আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগের বিষয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা

» জুলাই আন্দোলন দমাতে ব্যবহৃত হয় শুটিং ফেডারেশনের অস্ত্র: ক্রীড়া উপদেষ্টা

» ৭১ এর রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে : উপদেষ্টা শারমীন

» একজন মুসল্লির মতো এলেন জীর্ণশীর্ণ দেখতে, এমন শাসক আর শাসনই আমাদের স্বপ্নময় ছিল! : প্রেস সচিব

» হুয়াওয়ে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশ’-এর নিবন্ধন শুরু

» লোকসাহিত্য গবেষক ও কবি অ আ আবীর আকাশ এর জন্মদিনে বিভিন্ন মহলের উষ্ণ অভ্যর্থনা

» প্রাইম ব্যাংকের অগ্রযাত্রার ৩০ বছর: টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসাথে পথ চলার অঙ্গীকার

» বাগেরহাটের বলভদ্রপুর বাস-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হার্ট অ্যাটাক পরবর্তী ১ থেকে ২ ঘণ্টা কেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

ছবি সংগৃহীত

 

একটি আতঙ্কের নাম হার্ট অ্যাটাক। কম বয়সী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ অনেকেই এই স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হঠাৎ বুকে ব্যথা, সারা শরীরে ঘামানো আর তারপরই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে আসা। হার্ট অ্যাটাকের ধরন অনেকটা এমন। প্রতিনিয়ত এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের পর পরবর্তী ১ থেকে ২ ঘণ্টা রোগীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য এই সময়কে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা করা গেলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।

 

যেসব লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন 

  • রোগী অতিরিক্ত ঘামাতে শুরু করবেন। পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। এটিই হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ।
  • রোগীর দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকবে। বুকে হালকা চাপযুক্ত ব্যথা অনুভূত হবে।
  • এসময় রোগীর শীত শীত লাগতে পারে।
  • ব্যথা বুক থেকে ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • নারীদের ক্ষেত্রে ওপরের লক্ষণগুলোর পাশাপাশি পেটে অস্বস্তি, পিঠে ব্যথার মতো কিছু লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

heart-attack3

হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে বাঁচাতে বাড়ি কিংবা আশেপাশের লোকজনের করণীয় 

দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া 

রোগীর অবস্থা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরের ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে ইকো কার্ডিয়োগ্রাফি, ইসিজি করতে হবে। এতে বোঝা যাবে হার্টের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধেছে কি না। বাঁধলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি বা থ্রম্বোলাইসিস করে রক্ত বের করতে হবে।

 

সিপিআর দেওয়া 

চিকিৎসকের আসতে দেরি হলে কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিলম্ব হলে বাড়িতেই রোগীকে সিপিআর দিতে হবে। এটি হাতের মাধ্যমে বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম ভাবে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখার একটি কার্যকরী উপায়। ইউটিউব দেখে সিপিআর দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সবার শিখে নেওয়া উচিত।

 

আশেপাশে কেউ না থাকলে 

যদি এমন হয় যে আপনার নিজের শরীরে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো দেখা দিয়েছে এবং আশেপাশে কেউ নেই সেক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে ‘সেলফ সিপিআর’ শুরু করুন। নিজেকে নিজে সিপিআর দেওয়ার এই পদ্ধতিকে ‘কাফ সিপিআর’ বলা হয়। এটি সম্পূর্ণ বিপদ দূর করতে না পারলেও সাময়িক স্বস্তি দেয়।

 

খুব জোরে জোরে কাশতে থাকুন। সেসঙ্গে গভীর ভাবে শ্বাস টানুন আর কাশতে শুরু করুন। কাশির সঙ্গে সঙ্গেই গভীর ভাবে শ্বাস নিতে হবে আর ছাড়তে হবে। কয়েক সেকেন্ড অন্তর-অন্তর এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।

 

‘ডিপ ব্রিদিং’ করলে হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ চালু থাকবে এবং জোরে কাশতে থাকলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও হার্টে রক্ত সঞ্চালন বজায় থাকবে।

 

হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকলে সবসময় সঙ্গে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ রাখতে হবে।

 

বাড়িতে হার্টের রোগী থাকলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। একইসঙ্গে নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়ায়। ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস ছাড়াতে হবে। কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া চলবে না। কমাতে হবে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। হার্টের অসুখ থাকলে, কী ধরনের শরীরচর্চা করা যাবে তা চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকের থেকে জেনে নিন।  সূএ: ঢাকা মেইল  ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com