প্রবল বন্যার কবলে দক্ষিণ জার্মানি

ফাইল ছবি

 

প্রবল বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ জার্মানি। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বাঁধ। তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ ত্রাণশিবিরে নেওয়া হয়েছে।

 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ভোর ছয়টা থেকে ছুটছেন তোবিয়াস কুনজ। তিনি নর্ডেনডর্ফের মেয়র। দক্ষিণ জার্মানির এই ছোট শহরে ২৬০০ মানুষ থাকেন। সেই শহরে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। আর মেয়র ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে দিনরাত শহর বাঁচানোর জন্য লড়ে যাচ্ছেন।

 

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমরা ৪০ হাজার বালির বস্তা দিয়ে ২৪০ মিটার বাঁধ বানাবার চেষ্টা করেছি। কিছু স্বেচ্ছাসেবক টানা ৪০ ঘণ্টা ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। দুই চোখের পাতা এক করেননি। কিন্তু নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।”

 

স্বেচ্ছাসেবকরা একটার পর একটা বালির বস্তা ফেলছিলেন। তাদের কাজের দেখভাল করছিলেন মেয়র। তিনি ম্লান হেসে বললেন, স্কুল সোমবার বন্ধ থাকবে। কিন্তু তিনি হতাশার সঙ্গে বলছিলেন, “নতুন খেলার মাঠের কাছে বাঁধ ভেঙে গেছে। আমদের লড়াই সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন করে সবকিছু ঠিক করতে প্রচুর অর্থ লাগবে। পুরো পরিকাঠামো ভেসে গেছে। স্কুল ও হোস্টেলের নিকাশি ব্যবস্থা কাজ করছে না। শিক্ষার্থীরা টয়লেটে যেতে পারছে না।”

 

নর্ডেনডর্ফের বাকি এলাকার অবস্থাও খারাপ। গোটা ১২ গ্রাম থেকে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। গোটা মাসে যা বৃষ্টিপাত হয়, তা একদিনে হয়েছে। ফলে নদীতে পানির স্তর খুবই বেড়ে গেছে।

 

বাভারিয়া এবং বাডেন উইরটেমবার্গ সপ্তাহান্তের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। এতে একজন দমকলকর্মী মারা গেছেন। একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

অনেকেই এরকম বন্যার তাণ্ডবে রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে। চারজন যুবকও এই ভয়াবহ বন্যা দেখে অবাক। তারা তাদের বাড়ির কয়েক কিলোমিটার আগে দ্বিধাগ্রস্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না। সামনে যে পরিমাণ বন্যার পানি আছে, তাতে তারা বাড়ি যেতে পারছেন না। তারা একদিন ধরে বাঁধে বালির বস্তা ফেলে তা সুরক্ষিত করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এখন তাদের বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ। পুরো এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

 

ওই যুবকরা জানিয়েছেন, “আগের দিন একটি বাড়ি থেকে দু’টি গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের দিকে রেখে আসতে পেরেছি। কিন্তু এখন আর কিছু করা সম্ভব নয়। চারদিক থেকে পানি আসছে।’

 

যাদের উদ্ধার করা হচ্ছে, তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী শহরের স্পোর্টস স্টেডিয়ামে। সেখানে রিসেপশন ও এক্সিবিশন হলে ৩০০টি খাট পাতা হয়েছে। রেকর্ড সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হয়েছে।

 

শিবিরে থাকা ফিশার বলেন, “আমরা জানি না, বাড়িতে কতটা পানি ঢুকেছে। আমরা ভাবতে পারিনি, পরিস্থিতি এতটা খারাপ হবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাই।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে ভারত: নীরব

» খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে

» ভিডিও বার্তায় মইন ইউ আহমেদ মুন্নি সাহার লাইভ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে

» ক্ষমতায় গেলে দেশের সকল ফরম থেকে ধর্মালম্বী অপশন তুলে দেওয়া হবে—- ড. মঈন খান

» পলাশে হামলা ভাংচুরের পর বন্ধ হয়ে গেল জনতা জুটমিল, কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৭ হাজার শ্রমিক

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পরেও যে কারণে পর্যটক নেই

» হাতীবান্ধা রিপোর্টার্স ক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি মোস্তফা সম্পাদক রহিম

» ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইসলামপুর উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন

» এক্সিম ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার অভিযোগে ১০ জন আটক

» ‘লুকিয়ে রাখা’ পুতিনের দুই ছেলের তথ্য ফাঁস!

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রবল বন্যার কবলে দক্ষিণ জার্মানি

ফাইল ছবি

 

প্রবল বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ জার্মানি। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বাঁধ। তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ ত্রাণশিবিরে নেওয়া হয়েছে।

 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ভোর ছয়টা থেকে ছুটছেন তোবিয়াস কুনজ। তিনি নর্ডেনডর্ফের মেয়র। দক্ষিণ জার্মানির এই ছোট শহরে ২৬০০ মানুষ থাকেন। সেই শহরে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। আর মেয়র ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে দিনরাত শহর বাঁচানোর জন্য লড়ে যাচ্ছেন।

 

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমরা ৪০ হাজার বালির বস্তা দিয়ে ২৪০ মিটার বাঁধ বানাবার চেষ্টা করেছি। কিছু স্বেচ্ছাসেবক টানা ৪০ ঘণ্টা ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। দুই চোখের পাতা এক করেননি। কিন্তু নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।”

 

স্বেচ্ছাসেবকরা একটার পর একটা বালির বস্তা ফেলছিলেন। তাদের কাজের দেখভাল করছিলেন মেয়র। তিনি ম্লান হেসে বললেন, স্কুল সোমবার বন্ধ থাকবে। কিন্তু তিনি হতাশার সঙ্গে বলছিলেন, “নতুন খেলার মাঠের কাছে বাঁধ ভেঙে গেছে। আমদের লড়াই সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন করে সবকিছু ঠিক করতে প্রচুর অর্থ লাগবে। পুরো পরিকাঠামো ভেসে গেছে। স্কুল ও হোস্টেলের নিকাশি ব্যবস্থা কাজ করছে না। শিক্ষার্থীরা টয়লেটে যেতে পারছে না।”

 

নর্ডেনডর্ফের বাকি এলাকার অবস্থাও খারাপ। গোটা ১২ গ্রাম থেকে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। গোটা মাসে যা বৃষ্টিপাত হয়, তা একদিনে হয়েছে। ফলে নদীতে পানির স্তর খুবই বেড়ে গেছে।

 

বাভারিয়া এবং বাডেন উইরটেমবার্গ সপ্তাহান্তের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। এতে একজন দমকলকর্মী মারা গেছেন। একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

অনেকেই এরকম বন্যার তাণ্ডবে রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে। চারজন যুবকও এই ভয়াবহ বন্যা দেখে অবাক। তারা তাদের বাড়ির কয়েক কিলোমিটার আগে দ্বিধাগ্রস্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না। সামনে যে পরিমাণ বন্যার পানি আছে, তাতে তারা বাড়ি যেতে পারছেন না। তারা একদিন ধরে বাঁধে বালির বস্তা ফেলে তা সুরক্ষিত করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এখন তাদের বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ। পুরো এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

 

ওই যুবকরা জানিয়েছেন, “আগের দিন একটি বাড়ি থেকে দু’টি গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের দিকে রেখে আসতে পেরেছি। কিন্তু এখন আর কিছু করা সম্ভব নয়। চারদিক থেকে পানি আসছে।’

 

যাদের উদ্ধার করা হচ্ছে, তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী শহরের স্পোর্টস স্টেডিয়ামে। সেখানে রিসেপশন ও এক্সিবিশন হলে ৩০০টি খাট পাতা হয়েছে। রেকর্ড সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হয়েছে।

 

শিবিরে থাকা ফিশার বলেন, “আমরা জানি না, বাড়িতে কতটা পানি ঢুকেছে। আমরা ভাবতে পারিনি, পরিস্থিতি এতটা খারাপ হবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাই।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com