ন্যাটোর ৩০ দেশের চেয়ে রাশিয়ার একার কাছেই রয়েছে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র!

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোরে এই হামলা শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার হামলার অষ্টমদিন। রাশিয়া-ইউক্রেনের এই যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় সংঘাত বলে মনে করা হচ্ছে।

 

গত সাত দিনে রুশ সেনারা ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়েছে। একযোগে বিভিন্ন দিক থেকে অভিযান চালিয়ে রাশিয়া এখন পর্যন্ত দখলে নিয়েছে কয়েকটি নগরী।

 

ইউক্রেন সামরিক অভিযান শুরুর পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকে পশ্চিমা বিশ্ব। আমেরিকা, ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলো রাশিয়ার ওপর আরোপ করতে শুরু করে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়াকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তারা।

 

এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার পারমাণবিক ইউনিটকে ‘উচ্চ সতর্কতায়’ থাকার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে রাশিয়ার?

যদিও বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার কাছে মোট কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায় না। তবে ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের মতে, রাশিয়ার প্রায় ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে।

 

অনুমান করা হয়, এর মধ্যে প্রায় ১৫০০ ওয়ারহেডের বয়স অনেক বেশি হওয়ায় সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

 

বাকি সাড়ে ৪ হাজারের বেশি অস্ত্রের মধ্যে বেশিরভাগই কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো মূলত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট জাতীয়, যা অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে।

 

এর বাইরে যেসব অস্ত্র রয়েছে সেগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট, কম ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্র; এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে বা সমুদ্রে স্বল্প-পরিসরের হামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞদের অনুমান, রাশিয়ার প্রায় দেড় হাজার পারমাণবিক অস্ত্র বর্তমানে ‘মোতায়েন’রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিমানঘাঁটি বা সাবমেরিনে স্থাপন করা আছে।

 

রাশিয়া ছাড়া আরও ৮টি দেশের পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এগুলো হলো চীন, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

 

ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের তথ্যানুযায়ী, ন্যাটোর আছে ৫ হাজার ৯৪৩টি পারমাণবিক অস্ত্র—এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ হাজার ৪২৮টি, ফ্রান্সের ২৯০টি এবং যুক্তরাজ্যের ২২৫টি।

 

এছাড়া চীনের ৩৫০টি, পাকিস্তান ১৬৫টি, ভারতের ১৬০টি, ইসরায়েলের ৯০টি ও উত্তর কোরিয়ার ২০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

পারমাণবিক অস্ত্র থাকা ৯টি দেশে মধ্যে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি-এনপিটিতে সই করেছে।

 

ইউক্রেনের কাছে কোনও পারমাণবিক অস্ত্র নেই। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা হাসনাতের

» আমরা যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী দল আছি, তারা যেন ঐক্য ধরে রাখি: সারজিস

» সরকারের ইশারাতেই আবদুল হামিদ দেশ ছাড়েন : ভিপি নুর

» পলাশ থানা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আলম মোল্লা

» ভোটের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই: মির্জা ফখরুল

» রাষ্ট্রপতির দেশ ত্যাগের দায় উপদেষ্টাদের নিতে হবে- ওসমান হাদী

» আমাদের লড়াইয়ের মূল বিষয় গণতন্ত্রের সংস্কার, যা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়ছি :মির্জা ফখরুল

» ৯ মাস পরে আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা : সারজিস

» দলের নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে এনসিপি, জানালেন নাহিদ ইসলাম

» জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ন্যাটোর ৩০ দেশের চেয়ে রাশিয়ার একার কাছেই রয়েছে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র!

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোরে এই হামলা শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার হামলার অষ্টমদিন। রাশিয়া-ইউক্রেনের এই যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় সংঘাত বলে মনে করা হচ্ছে।

 

গত সাত দিনে রুশ সেনারা ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়েছে। একযোগে বিভিন্ন দিক থেকে অভিযান চালিয়ে রাশিয়া এখন পর্যন্ত দখলে নিয়েছে কয়েকটি নগরী।

 

ইউক্রেন সামরিক অভিযান শুরুর পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকে পশ্চিমা বিশ্ব। আমেরিকা, ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলো রাশিয়ার ওপর আরোপ করতে শুরু করে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়াকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তারা।

 

এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার পারমাণবিক ইউনিটকে ‘উচ্চ সতর্কতায়’ থাকার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে রাশিয়ার?

যদিও বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার কাছে মোট কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায় না। তবে ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের মতে, রাশিয়ার প্রায় ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে।

 

অনুমান করা হয়, এর মধ্যে প্রায় ১৫০০ ওয়ারহেডের বয়স অনেক বেশি হওয়ায় সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

 

বাকি সাড়ে ৪ হাজারের বেশি অস্ত্রের মধ্যে বেশিরভাগই কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো মূলত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট জাতীয়, যা অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে।

 

এর বাইরে যেসব অস্ত্র রয়েছে সেগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট, কম ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্র; এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে বা সমুদ্রে স্বল্প-পরিসরের হামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞদের অনুমান, রাশিয়ার প্রায় দেড় হাজার পারমাণবিক অস্ত্র বর্তমানে ‘মোতায়েন’রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিমানঘাঁটি বা সাবমেরিনে স্থাপন করা আছে।

 

রাশিয়া ছাড়া আরও ৮টি দেশের পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এগুলো হলো চীন, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

 

ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের তথ্যানুযায়ী, ন্যাটোর আছে ৫ হাজার ৯৪৩টি পারমাণবিক অস্ত্র—এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ হাজার ৪২৮টি, ফ্রান্সের ২৯০টি এবং যুক্তরাজ্যের ২২৫টি।

 

এছাড়া চীনের ৩৫০টি, পাকিস্তান ১৬৫টি, ভারতের ১৬০টি, ইসরায়েলের ৯০টি ও উত্তর কোরিয়ার ২০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

পারমাণবিক অস্ত্র থাকা ৯টি দেশে মধ্যে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি-এনপিটিতে সই করেছে।

 

ইউক্রেনের কাছে কোনও পারমাণবিক অস্ত্র নেই। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com