সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে বসে খুনি হাসিনা দেশব্যাপী সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের টার্গেট কিলিংয়ে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সোমবার বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বানে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি ঘটেনি। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পর্যাপ্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও তৎপরতার ঘাটতি স্পষ্ট। ফলে অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে শুধু এসব সংস্থার ওপর নির্ভর করে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মরিয়া খুনের কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ক্রমবর্ধমান এ হুমকি রুখতে হলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে সর্বস্তরে জননিরাপত্তার নিজস্ব সংস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বিনোদনমূলক ইভেন্টের টিকিটএ লক্ষে আগামীকাল থেকে দেশের সবগুলো ওয়ার্ডে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার গণকমিটি’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান আমার দেশ সম্পাদক। এসব কমিটির কাজ হবে-
এক. ফ্যাসিস্ট রাজনীতির নেতাকর্মী ও তাদের সমর্থক এবং অনুচরদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা এবং এদের মধ্যে যাদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে, এদের ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা। এক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ওপর সব ধরনের শারীরিক নির্যাতন থেকে বিরত থাকবেন।
দুই. স্থানীয় প্রশাসনের ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই পতিত সরকারের সহযোগী ও অনুচর হিসেবে গোপনে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা যেনো কোনোভাবেই এসব সন্দেহভাজন অপরাধীকে ছেড়ে দিতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তিন. স্থানীয় আদালতগুলোর আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানাতে হবে, যাতে তারা বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব অপরাধীর জামিনের ব্যবস্থা করা বা তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা দুর্বল করার মতো কোনো অসৎ কার্যকলাপে জড়িয়ে না পড়েন। একই সঙ্গে স্থানীয় আদালতের সার্বিক কার্যক্রমের ওপরও কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।
আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশের আদালতে প্রমাণিত সবচেয়ে বড় অপরাধী, মহাসন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ খুনি শেখ হাসিনাকে ভারত যেভাবে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, তা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাকে ফিরিয়ে এনে আইন, বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি করা না গেলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে না। কারণ, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বছরের পর বছর, এমনকি যুগের পর যুগ ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও নাগরিকদের বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেগুলোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সর্বাত্মক সহযোগী ও প্রশ্রয়দাতা হিসেবে ভারত ভূমিকা রেখেছে এবং বর্তমানেও তারা এই ঘাতকের পেছনে অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, খুনি হাসিনাকে যদি ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা না যায়, তবে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়বে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে নির্বাচিত প্রতিটি সরকারকে ভারত ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নিজেদের শর্তে বাংলাদেশ পরিচালনা করতে বাধ্য করবে—এমন আশঙ্কাও অমূলক নয়। তাই আমাদের দ্বিতীয় কর্মসূচি হবে, ভারতীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া যে আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে খুনি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে হবে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সরকারের হাতে এই ঘাতককে তুলে দেওয়ার দাবিতে আজ থেকেই সারা দেশে সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু করুন। আমরা ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে খুনি হাসিনাকে ধরে আনার পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।







