সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ) দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের আহবান জানিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জিএসএর নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালক ছিলেন জিএসএর কেন্দ্রীয় সদস্য জুলহাসনাইন বাবু। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিএসএর প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, কেন্দ্রীয় সদস্য বাচ্চু ভূইঁয়া, মনিরুল হুদা বাবন, আমজাদ হোসেন, গোলাম মোস্তফা, জাহিদ সুজনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
গণসংহতি আন্দোলনের ১১ দফা প্রস্তাবনা:
১. অর্থনীতির উৎপাদনশীল রূপান্তরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির বিকাশ। বখরাতন্ত্রের বিদায়। কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীর শ্রম, মেধাকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাজে লাগানো। অনানুষ্ঠানিক খাত পরিচালনায় সুনির্দিষ্ট আইনগত ব্যবস্থা।
২. দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী সংস্থায় পরিণত করা। দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত তদন্ত, তদন্তে পর্যাপ্ত বাজেট, প্রযুক্তি ও জনবল নিশ্চিত করা।
৩. ব্যাংক কোম্পানি আইনসহ আর্থিক খাতের আইনসমূহ সংস্কার। আর্থিক খাতে জমিদারি সুলভ কর্তৃত্বের অবসান। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক বরাদ্দ বন্ধ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে স্বাধীনভাবে অডিট নিষ্পত্তি ও অনিয়মের সাগর পরিমাণ চুরির বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করে শাস্তি বিধান।
৪. টেন্ডার ও ক্রয় প্রক্রিয়ায়ই-টেন্ডার বাধ্যতামূলক করা। ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য ওপেন ডেটা পোর্টালে প্রকাশ করা। বড় প্রকল্পে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অডিট ব্যবস্থা।
৫. সরকারি কর্মচারীদের জবাবদিহিতা, পদোন্নতি ও বদলি মেধা ও কর্মদক্ষতা অনুযায়ী করা। দুর্নীতির অভিযোগে সুস্পষ্ট শাস্তি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিচারক ও জনপ্রতিনিধিদের (স্ত্রী-সন্তানসহ) সম্পদ বিবরণ বাধ্যতামূলক করা।
৬. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্ন ব্যতিরেকে অফিশিয়াল সিক্রেসি এক্টের নামে তথ্য গোপনের আইন বাতিল করা। সরকারি কাজের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা। নাগরিক সমাজকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া।
৭. সেবা প্রদান– যেমন : লাইসেন্স, অনুমোদন, জমি রেজিস্ট্রি-ডিজিটাল করা ঘুষ নেওয়ার সুযোগ কমাতে মানবসম্পৃক্ততা হ্রাস নাগরিক সেবা কেন্দ্রগুলোতে এক টেবিল সেবা (One-stop Service) চালু।
৮. দুর্নীতি সম্পর্কে তথ্যদাতাকে আইনগত সুরক্ষা। পরিচয় গোপন রেখে তদন্ত করা, তদন্তে সঠিক প্রমাণিত হলে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি সম্পর্কে অভিযোগ গ্রহণ সেল গঠন।
৯. বিচার ব্যবস্থার সংস্কার; আদালতকে রাজনৈতিক চাপমুক্ত রাখা। বড় দুর্নীতির মামলা পৃথক ট্রাইবুনালের মাধ্যমে পরিচালনা করা। সাইবার ফরেনসিক ও আর্থিক তদন্ত দক্ষতা বৃদ্ধি।
১০. সকল সরকারি অফিসে নাগরিকের হয়রানিমুক্ত সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা। হয়রানি রোধে সরকারি অফিসে অভিযোগ বক্স চালু করা। নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটলে অভিযোগ বক্সে অভিযোগ দাখিলের ব্যবস্থা এবং দ্রুততার সাথে তার নিষ্পত্তির জন্য ব্যবস্থা।
১১. স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় নৈতিকতা ও দুর্নীতি-বিরোধী শিক্ষা। দুর্নীতিকে সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য করে তোলা।







