পরিবেশ সুরক্ষায় শিগগিরই বাংলাদেশ-জাপান সমঝোতা স্মারক: রিজওয়ানা হাসান

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সইরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

রবিবার পরিবেশ অধিদফতরে জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত Joint Crediting Mechanism (JCM) Project Matchmaking and Advancing Article 6 Implementation in Bangladesh শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ তথ্য জানান।

এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা কার্বন ট্রেডিংকে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জলবায়ু প্রশমন উদ্যোগের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘COP30-এ জাতীয় কার্বন বাজার কাঠামোর প্রাক-ঘোষণা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য স্পষ্ট নীতি পরিবেশ তৈরি করেছে।’ একই সঙ্গে তিনি চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মতামত সংগ্রহের ওপরও জোর দেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের হালনাগাদ এনডিসি অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে শর্তহীনভাবে ৬.৩৯% এবং শর্তসাপেক্ষে ১৩.৯২% কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দ্রুত রোডম্যাপ চূড়ান্ত করতে হবে।

‘এনডিসি জমা দিলেই দায়িত্ব শেষ নয়,’ উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘অভিযোজন তহবিল পেলেও উপকূল রক্ষায় তা যথেষ্ট নয়, যদি প্রশমন কার্যক্রম জোরদার না হয়।’ অভিযোজনের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই স্থিতিস্থাপকতার জন্য প্রশমনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

উপদেষ্টা জানান, আন্তর্জাতিক সরবরাহচেইনের পরিবেশবান্ধব নীতিমালার কারণে রফতানিমুখী শিল্পগুলো সবচেয়ে দ্রুত টেকসই উৎপাদনে রূপান্তর ঘটায়। তাই তিনি বেসরকারি খাতকে বৃক্ষরোপণভিত্তিক সিএসআর কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা, টেকসই কৃষি ও প্রকৃতিনির্ভর সমাধানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে উন্নত প্রযুক্তি, তৃতীয় পক্ষের কঠোর পর্যবেক্ষণ, পরিবেশগত মান রক্ষা, সঠিক স্থান নির্বাচন ও তথ্য উন্মুক্তকরণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

জলবায়ু আলোচনার দীর্ঘসূত্রতা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারে না।’ উন্নত দেশগুলোর পর্যাপ্ত সহায়তার অভাব অভিযোজন সক্ষমতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তবে তিনি জাপানকে ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, অংশীদারিত্ব, প্রযুক্তি সহযোগিতা ও প্রশমন–অভিযোজন উদ্যোগে জাপান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

জাপানের পরিচ্ছন্ন নগরায়ন, মানবিক নকশা ও জনবান্ধব উন্মুক্ত স্থানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এসব অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের নগর পরিকল্পনায় অনুপ্রেরণা হতে পারে।

তিনি জানান, পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে—যা দুই দেশের পরিবেশগত সহযোগিতার নতুন মাইলফলক হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাজশাহীতে পৃথক অভিযানে ৩৬ জন গ্রেফতার

» জাতীয় স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

» জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীদের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেবে : আব্দুল হালিম

» হত্যা মামলার আসামি কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার

» এনসিপিসহ ৩ দলের নতুন জোটের ঘোষণা বিকেলে

» শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ

» ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ, দেখে নিন কবে কার খেলা

» বিটিআরসি ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ মোবাইল ব্যবসায়ীদের

» মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা

» পরিবেশ সুরক্ষায় শিগগিরই বাংলাদেশ-জাপান সমঝোতা স্মারক: রিজওয়ানা হাসান

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পরিবেশ সুরক্ষায় শিগগিরই বাংলাদেশ-জাপান সমঝোতা স্মারক: রিজওয়ানা হাসান

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সইরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

রবিবার পরিবেশ অধিদফতরে জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত Joint Crediting Mechanism (JCM) Project Matchmaking and Advancing Article 6 Implementation in Bangladesh শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ তথ্য জানান।

এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা কার্বন ট্রেডিংকে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জলবায়ু প্রশমন উদ্যোগের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘COP30-এ জাতীয় কার্বন বাজার কাঠামোর প্রাক-ঘোষণা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য স্পষ্ট নীতি পরিবেশ তৈরি করেছে।’ একই সঙ্গে তিনি চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মতামত সংগ্রহের ওপরও জোর দেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের হালনাগাদ এনডিসি অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে শর্তহীনভাবে ৬.৩৯% এবং শর্তসাপেক্ষে ১৩.৯২% কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দ্রুত রোডম্যাপ চূড়ান্ত করতে হবে।

‘এনডিসি জমা দিলেই দায়িত্ব শেষ নয়,’ উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘অভিযোজন তহবিল পেলেও উপকূল রক্ষায় তা যথেষ্ট নয়, যদি প্রশমন কার্যক্রম জোরদার না হয়।’ অভিযোজনের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই স্থিতিস্থাপকতার জন্য প্রশমনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

উপদেষ্টা জানান, আন্তর্জাতিক সরবরাহচেইনের পরিবেশবান্ধব নীতিমালার কারণে রফতানিমুখী শিল্পগুলো সবচেয়ে দ্রুত টেকসই উৎপাদনে রূপান্তর ঘটায়। তাই তিনি বেসরকারি খাতকে বৃক্ষরোপণভিত্তিক সিএসআর কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা, টেকসই কৃষি ও প্রকৃতিনির্ভর সমাধানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে উন্নত প্রযুক্তি, তৃতীয় পক্ষের কঠোর পর্যবেক্ষণ, পরিবেশগত মান রক্ষা, সঠিক স্থান নির্বাচন ও তথ্য উন্মুক্তকরণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

জলবায়ু আলোচনার দীর্ঘসূত্রতা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারে না।’ উন্নত দেশগুলোর পর্যাপ্ত সহায়তার অভাব অভিযোজন সক্ষমতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তবে তিনি জাপানকে ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, অংশীদারিত্ব, প্রযুক্তি সহযোগিতা ও প্রশমন–অভিযোজন উদ্যোগে জাপান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

জাপানের পরিচ্ছন্ন নগরায়ন, মানবিক নকশা ও জনবান্ধব উন্মুক্ত স্থানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এসব অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের নগর পরিকল্পনায় অনুপ্রেরণা হতে পারে।

তিনি জানান, পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে—যা দুই দেশের পরিবেশগত সহযোগিতার নতুন মাইলফলক হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com