১৫ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার যা করেছে, অতীতে কেউ করতে পারেনি : প্রেস সচিব

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম সময়ে কোনো সরকার এত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, যতটা অর্জন করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরে। তার ভাষায়, অন্তর্বর্তী সরকার কয়েক দশকে দেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর একটি।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা লেখেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের নির্ধারিত প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জিত হয়েছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন, নাম ছাড়া সব দিক থেকেই এই সরকার একটি এনজিও-গ্রাম-স্তরের কাঠামোর মতো সাধারণ ও দুর্বল হিসেবে দেখা গেছে। অনেকের কাছেই এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল প্রশাসন হিসেবে পরিচিত। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্ক চুক্তিতে এগোতে চায়নি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০টিরও বেশি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নতুন আইন পাসে জটিলতা এবং ছোট গোষ্ঠীর চাপেও নতি স্বীকার করাকে কেন্দ্র করে অনেকেই এই সরকারকে ‘ভীতু’ হিসেবে দেখেছেন। পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অদক্ষতা ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ শোনা গেছে। কেউ কেউ তাদের ‘কিছু না করা সরকার’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন।

কিন্তু এসব সমালোচনার পরও শফিকুল আলম দাবি করেন, বাস্তবতা ভিন্ন। তার ভাষায়, তবু পেছনে তাকিয়ে আমি দৃঢ়ভাবে বলি, এটি গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর একটি। তারা তাদের প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জন করেছে।

hhh

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য হিসেবে বেশ কয়েকটি দিক উল্লেখ করেন-

বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।

কোনো লবিং ফার্ম নিয়োগ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।

১৫ মাসেই রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার রয়েছে।

জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটি নতুন পথরেখা তৈরি করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, ফলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মামলা ও জামিন প্রভাবিত করা কঠিন হবে।

ইউরোপীয় শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগের চুক্তি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ।

নতুন নীতিমালা বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

অর্থনীতি পুনরায় উন্নয়নমুখী হয়েছে। ব্যাংক খাতের লুটপাট কমেছে, টাকা স্থিতিশীল হয়েছে এবং খাদ্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশে নেমেছে।

অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

জোরপূর্বক গুম বন্ধ হয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা-নির্ভর রাজনীতি নিষ্ক্রিয় হয়েছে।

নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জনমত তৈরি করেছে, যাকে অনেকে ‘ফারুকী ইফেক্ট’ বলছেন।

র‍্যাব আইন মেনে কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিরোধীদের হয়রানি কমিয়েছে এবং গত ১৬ মাসে কোনো সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ ওঠেনি।

সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধের পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

» ছাত্ররাজনী‌তিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ: শিবির সভাপতি

» বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৪৯ জন গ্রেপ্তার

» পাচারের উদ্দেশে জিম্মি করে রাখা নারী-শিশুসহ ৮ জন উদ্ধার,আটক ৫

» কিবরিয়া হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়: যুবদল সভাপতি

» অমুসলিম সালাম দিলে জবাব দেয়ার নিয়ম কী

» দেশি মুরগির মাংস রান্নার রেসিপি

» প্রকাশ্যে ‘সোলজার’-এর ফার্স্ট লুক পোস্টার, তানজিন তিশার চমক

» কাস্টিং কাউচের বিষয়ে মুখ খুললেন পায়েল

» ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে ২ ঘণ্টা অবরোধ

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

১৫ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার যা করেছে, অতীতে কেউ করতে পারেনি : প্রেস সচিব

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম সময়ে কোনো সরকার এত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, যতটা অর্জন করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরে। তার ভাষায়, অন্তর্বর্তী সরকার কয়েক দশকে দেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর একটি।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা লেখেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের নির্ধারিত প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জিত হয়েছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন, নাম ছাড়া সব দিক থেকেই এই সরকার একটি এনজিও-গ্রাম-স্তরের কাঠামোর মতো সাধারণ ও দুর্বল হিসেবে দেখা গেছে। অনেকের কাছেই এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল প্রশাসন হিসেবে পরিচিত। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্ক চুক্তিতে এগোতে চায়নি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০টিরও বেশি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নতুন আইন পাসে জটিলতা এবং ছোট গোষ্ঠীর চাপেও নতি স্বীকার করাকে কেন্দ্র করে অনেকেই এই সরকারকে ‘ভীতু’ হিসেবে দেখেছেন। পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অদক্ষতা ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ শোনা গেছে। কেউ কেউ তাদের ‘কিছু না করা সরকার’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন।

কিন্তু এসব সমালোচনার পরও শফিকুল আলম দাবি করেন, বাস্তবতা ভিন্ন। তার ভাষায়, তবু পেছনে তাকিয়ে আমি দৃঢ়ভাবে বলি, এটি গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর একটি। তারা তাদের প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জন করেছে।

hhh

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য হিসেবে বেশ কয়েকটি দিক উল্লেখ করেন-

বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।

কোনো লবিং ফার্ম নিয়োগ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।

১৫ মাসেই রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার রয়েছে।

জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটি নতুন পথরেখা তৈরি করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, ফলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মামলা ও জামিন প্রভাবিত করা কঠিন হবে।

ইউরোপীয় শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগের চুক্তি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ।

নতুন নীতিমালা বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

অর্থনীতি পুনরায় উন্নয়নমুখী হয়েছে। ব্যাংক খাতের লুটপাট কমেছে, টাকা স্থিতিশীল হয়েছে এবং খাদ্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশে নেমেছে।

অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

জোরপূর্বক গুম বন্ধ হয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা-নির্ভর রাজনীতি নিষ্ক্রিয় হয়েছে।

নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জনমত তৈরি করেছে, যাকে অনেকে ‘ফারুকী ইফেক্ট’ বলছেন।

র‍্যাব আইন মেনে কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিরোধীদের হয়রানি কমিয়েছে এবং গত ১৬ মাসে কোনো সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ ওঠেনি।

সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com