ঐতিহ্যবাহী দুবলার চরে আজ শুরু হচ্ছে রাস উৎসব

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরের পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে আজ শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। সোমবার ভোর থেকে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই ও ঢাংমারী স্টেশন দিয়ে পাস নিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেতে শুরু করেছেন দুবলার চরে। সোমবার রাতে দুবলার চরের আলোরকোলে স্থাপিত অস্থায়ী মন্দিরে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর বুধবার ভোরে সাগরে পূর্ণ স্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এ রাস উৎসব। তবে এবারও সেখানে থাকছে না রাস উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা। তবে এবারও রাস উৎসবকে ঘিরে দুবলার চরে যেতে পারছেন না হিন্দু বাদে অন্য ধর্মের লোকজন। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকে দুবলার চরে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয় হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনের। সেই সাথে বন্ধ করে দেয়া হয় সেখানে রাসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন। শুধু পূজা ও স্নান শেষে ফিরতে হবে পূণ্যার্থীদের।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, নির্ধারিত রাজস্ব জমা দিয়ে ও বনবিভাগ থেকে পাস (অনুমতি) নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত রুট দিয়ে পূণ্যার্থীরা রাস উৎসবে যেতে পারবেন এবং একই রুট দিয়ে তাদের ফিরতে হবে। সুন্দররবনের দুবলার চরের রাস উৎসব ঘিরে এবারও ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থী ছাড়া অন্য কোনো ট্যুরিস্টও যাওয়ার অনুমতি নেই। বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, হরিণ শিকার ও প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণরোধে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, ১৮শ শতকের শেষভাগে বা ১৯ শতকের শুরুর দিকে সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূজা শুরু হয়। হরভজন দাস নামে এক হিন্দু সন্ন্যাসী এই রাস পূজার গোড়াপত্তন করেন। তিনি তার ভক্তদের নিয়ে রাস পূর্ণিমার তিথিতে দুবলার চরে পূজাঅর্চনা ও সাগরের লোণা জলে পুণ্যস্নান করতেন। সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকেই ধীরে ধীরে ‘দুবলার চরের রাস মেলা’র প্রচলন ঘটে। এর পর থেকে দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের আয়োজনে দুবলার চরের আলোরকোলে রাস পূর্ণিমায় সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, ৩ নভেম্বর থেকে রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে মূল পূজাস্থল আলোরকোলে শুরু হবে রাধা-কৃষ্ণের অস্থায়ী মন্দিরে নানা আনুষ্ঠানিকতা। এই মন্দিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিন্দু ধর্মের ভক্তবৃন্দরা এসে তাদের মনবাসনা পূরণের আশায় পূজাঅর্চনা করবেন। ৫ নভেম্বর প্রত্যুষে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূণ্যস্নান শেষে যে যার গন্তব্যে ফিরে যাবেন পূণ্যার্থীরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে কমিটি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মন ক্ষয়ে যায়

» আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্ভব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» ১২ আসনে নারী প্রার্থী, নেই রুমিন ফারহানা

» ৩ দিনের রিমান্ডে ক্যাসিনো সেলিম

» অমিতাভকে ‘আই হেট ইউ’ বলতে গিয়ে যে অবস্থা হয়েছিল রেখার

» ঢাকা-১৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মায়ের ডাকের তুলি

» বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী তারেক রহমান

» নেত্রকোনা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী বাবর

» ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা

» ঢাকার আসনগুলোতে বিএনপির প্রার্থী হলেন যারা

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঐতিহ্যবাহী দুবলার চরে আজ শুরু হচ্ছে রাস উৎসব

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরের পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে আজ শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। সোমবার ভোর থেকে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই ও ঢাংমারী স্টেশন দিয়ে পাস নিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেতে শুরু করেছেন দুবলার চরে। সোমবার রাতে দুবলার চরের আলোরকোলে স্থাপিত অস্থায়ী মন্দিরে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর বুধবার ভোরে সাগরে পূর্ণ স্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এ রাস উৎসব। তবে এবারও সেখানে থাকছে না রাস উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা। তবে এবারও রাস উৎসবকে ঘিরে দুবলার চরে যেতে পারছেন না হিন্দু বাদে অন্য ধর্মের লোকজন। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকে দুবলার চরে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয় হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনের। সেই সাথে বন্ধ করে দেয়া হয় সেখানে রাসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন। শুধু পূজা ও স্নান শেষে ফিরতে হবে পূণ্যার্থীদের।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, নির্ধারিত রাজস্ব জমা দিয়ে ও বনবিভাগ থেকে পাস (অনুমতি) নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত রুট দিয়ে পূণ্যার্থীরা রাস উৎসবে যেতে পারবেন এবং একই রুট দিয়ে তাদের ফিরতে হবে। সুন্দররবনের দুবলার চরের রাস উৎসব ঘিরে এবারও ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থী ছাড়া অন্য কোনো ট্যুরিস্টও যাওয়ার অনুমতি নেই। বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, হরিণ শিকার ও প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণরোধে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, ১৮শ শতকের শেষভাগে বা ১৯ শতকের শুরুর দিকে সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূজা শুরু হয়। হরভজন দাস নামে এক হিন্দু সন্ন্যাসী এই রাস পূজার গোড়াপত্তন করেন। তিনি তার ভক্তদের নিয়ে রাস পূর্ণিমার তিথিতে দুবলার চরে পূজাঅর্চনা ও সাগরের লোণা জলে পুণ্যস্নান করতেন। সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকেই ধীরে ধীরে ‘দুবলার চরের রাস মেলা’র প্রচলন ঘটে। এর পর থেকে দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের আয়োজনে দুবলার চরের আলোরকোলে রাস পূর্ণিমায় সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, ৩ নভেম্বর থেকে রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে মূল পূজাস্থল আলোরকোলে শুরু হবে রাধা-কৃষ্ণের অস্থায়ী মন্দিরে নানা আনুষ্ঠানিকতা। এই মন্দিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিন্দু ধর্মের ভক্তবৃন্দরা এসে তাদের মনবাসনা পূরণের আশায় পূজাঅর্চনা করবেন। ৫ নভেম্বর প্রত্যুষে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূণ্যস্নান শেষে যে যার গন্তব্যে ফিরে যাবেন পূণ্যার্থীরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে কমিটি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com