বাগেরহাটে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ৯ উপজেলায় ৩২৭৮ হেক্টর জমিতে চাষ , কৃষকরা লাভবান, বাজারে আসছে টাটকা সবজি

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি  :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের নয়টি উপজেলার  শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও সারাদেশে সবজি রফতানি করা সম্ভব হবে বলে তারা জানান।

শীতকালীন সবজির ব্যাপক উৎপাদনে একদিকে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে সহনীয় দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। অতিবৃষ্টির কারণে এবারের শীত মৌসুমের সবজি চাষে বিলম্ব হলেও মাটির লবণাক্ততা কেটে গেছে। এবার বাগেরহাট জেলায় ৩২৭৮ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে চিতলমারীসহ কয়েকটি উপজেলার ক্ষেতে টমেটোর ফলন শুরু হয়েছে। কাঁচা টমেটো বাজারে আসতে শুরু করেছে। এছাড়াও যাত্রাপুর, বারুইপাড়ার বিশাল ক্ষেতের মাঠজুড়ে শিম, লালশাক, সবুজ শাক ও পালংশাক বাজারে আসতে শুরু করেছে।

সবজি চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে শীত মৌসুমের সবজি স্থানীয় বাজারে আসতে শুরু করবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা, কচুয়া, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, মোরেলগঞ্জ, শরনখোলা, রামপাল, মোংলা এবং চিতলমারীসহ নয়টি উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে টমেটোর চাষ হয়েছে। এতে ব্যাপক ফলন আশা করছেন কৃষকরা। বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় জমির পরিমাণ ও সবজি উৎপাদনের হার বিশেষভাবে লক্ষনীয়।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার সদর উপজেলায় মোট ৪৬০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ৩০ হেক্টর জমিতে লালশাক, ৩০ হেক্টর পালংশাক, ৪০ হেক্টর টমেটো, ১৭০ হেক্টর লাউ, ৪০ হেক্টর বরবটি, ২০ হেক্টর শিম, ১২০ হেক্টর বেগুন এবং ১০ হেক্টর জমিতে ওলকপি চাষ করা হয়েছে।

ফকিরহাট উপজেলায় মোট ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে মূলা ৫০ হেক্টর জমিতে, লালশাক ৫০ হেক্টর, পালংশাক ৪০ হেক্টর, ফুলকপি ২৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ২৫ হেক্টর, ওলকপি ৩০ হেক্টর, টমেটো ৮৫ হেক্টর, লাউ ৮৫ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১০ হেক্টর, পুঁইশাক ৫ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২০ হেক্টর, পেঁপে ১০ হেক্টর এবং ৩০ হেক্টর জমিতে খিরাই আবাদ করা হয়েছে।

মোল্লারহাট উপজেলায় মোট ৫৬০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে শুধু টমেটো চাষ হয়েছে ৫২৩ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও মূলা ৩ হেক্টর, লালশাক ৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, ফুলকপি ২ হেক্টর, বাঁধাকপি ৩ হেক্টর, ওলকপি ৪ হেক্টর, লাউ ৩ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৫ হেক্টর, শসা ৫ হেক্টর, পুঁইশাক ৫ হেক্টর এবং ২ হেক্টর জমিতে ধনিয়াপাতা চাষ করা হয়েছে।

রামপাল উপজেলায় মোট ৯৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ৫ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, ওলকপি ৫ হেক্টর, টমেটো ৫ হেক্টর, লাউ ২৫ হেক্টর, বরবটি ১০ হেক্টর, শিম ২০ হেক্টর এবং ৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলার কচুয়া উপজেলায় মোট ৪৭৭ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ২৮ হেক্টর, লালশাক ৩০ হেক্টর, পালংশাক ১৫ হেক্টর, ফুলকপি ১০ হেক্টর, বাঁধাকপি ১১ হেক্টর, ওলকপি ১২ হেক্টর, টমেটো ২৭৫ হেক্টর, লাউ ৩০ হেক্টর, বরবটি ১০ হেক্টর, শিম ১৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ২ হেক্টর, বেগুন ১০ হেক্টর, পুঁইশাক ১২ হেক্টর, ডাটা ৫ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ৫ হেক্টর, পেঁপে ৩ হেক্টর, খিরাই ১ হেক্টর এবং ৩ হেক্টর জমিতে কাঁচকলা চাষ করা হয়েছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১০ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, টমেটো ৩ হেক্টর, লাউ ৪০ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১০ হেক্টর, বেগুন ৮ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ৩ হেক্টর এবং ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে।

শরনখোলা উপজেলায় মোট ৪০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ৫ হেক্টর, লালশাক ৮ হেক্টর, পালংশাক ২ হেক্টর, লাউ ৫ হেক্টর, বরবটি ১ হেক্টর, শিম ১০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৫ হেক্টর, বেগুন ২ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২ হেক্টর, পেঁপে ১০ হেক্টর এবং ৩০ হেক্টর জমিতে খিরাইয়ের আবাদ হয়েছে।

জেলার বন্দর উপজেলা মোংলায় মোট ২০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১ হেক্টর, লালশাক ৫ হেক্টর, ওলকপি ১ হেক্টর, টমেটো ২ হেক্টর, লাউ ৫ হেক্টর, শিম ১ হেক্টর এবং ৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে সবজি চাষ করেছে চিতলমারী উপজেলার কৃষকরা। এ উপজেলায় মোট ৯৯১ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে কেবল টমেটো চাষ করা হয়েছে ৮৫৪ হেক্টর জমিতে। এছাড়া মূলা ১২ হেক্টর, লালশাক ১২ হেক্টর, পালংশাক ১১ হেক্টর, ফুলকপি ১ হেক্টর, বাঁধাকপি ১ হেক্টর, ওলকপি ১ হেক্টর, লাউ ২১ হেক্টর, বরবটি ৮ হেক্টর, শিম ৪ হেক্টর, উচ্ছে ১ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ২০ হেক্টর, বেগুন ২৫ হেক্টর, পেঁপে ৯ হেক্টর এবং ১১ হেক্টর জমিতে কাঁচকলা চাষ করা হয়েছে।

কৃষি অধিদপ্তর বাগেরহাটের অতিরিক্ত উপপরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, চলতি বছরে বাগেরহাট জেলায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে রবি ফসল আবাদ বিলম্বে শুরু হলেও মাটি ও পানির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় সবজির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
‎‎কৃষি অধিদপ্তর বাগেরহাটের উপপরিচালক আলহাজ মো. মোতাহার হোসেন জানান, চলতি বছর সার ও বীজের কোন ঘাটতি না থাকায় কৃষকেরা অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি ফসল আবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজি উৎপাদন বেশী হবে বলে কৃষকেরা আশা করছে। এতে একদিকে সবজির উৎপাদন বেশী হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হবেন অন্যদিকে ক্রেতারা কম দামে কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনতে পারবে।

মোতাহার হোসেন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সবসময় কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে। বিভিন্ন সময় সবজির রোগ নির্ণয় ও পোকা দমন, উন্নত বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন মাছের ঘেরের পাড়ে বেশিরভাগ সবজি টমেটো, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ওলকপি ও করলা আবাদ করায় কীটনাশক ব্যবহারও কম হয়। আবার কোথাও কোথাও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। এতে ক্রেতারা নিরাপদ সবজি খেতে পারছে।

তিনি বলেন, চলতি বছর টমেটো, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, ওলকপি, করলা, বাঁধাকপি ও ফুলকপি আবাদ করে একেক জন কৃষক একর প্রতি ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা লাভ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চিতলমারী ও মোল্লাহাটে মৌসুমের শেষের দিকে প্রচুর পরিমাণে টমেটো উৎপাদিত হওয়ায় তখন কৃষকরা আশানুরূপ দাম পায় না। তখন ক্ষেতেই টমেটো পচে যায়। এ বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার টমেটো সংরক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে সেখানে ৩টি কোল্ডস্টোরেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে কৃষকরা আরও বেশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ব্যবহারে জবাবদিহিতা জরুরি: এম সাখাওয়াত

» সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহারের চিন্তা করছে সরকার

» সালমান শাহ হত্যা মামলায় বড় মোড়: ২৯ বছর পর ফেঁসে যাচ্ছেন যারা

» উদ্বোধনী জুটিতে ১০ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভাঙলেন সাইফ-সৌম্য

» যারা ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, এনসিপিতে তাদের কোনো অবস্থান নেই: সারজিস

» আওয়ামী লীগ ডাকাতদের চেয়েও নৃশংস, পুনর্বাসিত হওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই: আখতার

» অর্থের পেছনে না ছুটে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির

» ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঢাকায় আসছেন ডিসেম্বরে

» বাতিল ইভিএম, ফিরল ‘না ভোট’

» প্রশাসন থেকে ধর্ষণের ঘটনাকে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ হিসেবে চিত্রিত করা দুর্ভাগ্যজনক: শায়ক আহমাদুল্লাহ

উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বাগেরহাটে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ৯ উপজেলায় ৩২৭৮ হেক্টর জমিতে চাষ , কৃষকরা লাভবান, বাজারে আসছে টাটকা সবজি

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি  :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের নয়টি উপজেলার  শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও সারাদেশে সবজি রফতানি করা সম্ভব হবে বলে তারা জানান।

শীতকালীন সবজির ব্যাপক উৎপাদনে একদিকে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে সহনীয় দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। অতিবৃষ্টির কারণে এবারের শীত মৌসুমের সবজি চাষে বিলম্ব হলেও মাটির লবণাক্ততা কেটে গেছে। এবার বাগেরহাট জেলায় ৩২৭৮ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে চিতলমারীসহ কয়েকটি উপজেলার ক্ষেতে টমেটোর ফলন শুরু হয়েছে। কাঁচা টমেটো বাজারে আসতে শুরু করেছে। এছাড়াও যাত্রাপুর, বারুইপাড়ার বিশাল ক্ষেতের মাঠজুড়ে শিম, লালশাক, সবুজ শাক ও পালংশাক বাজারে আসতে শুরু করেছে।

সবজি চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে শীত মৌসুমের সবজি স্থানীয় বাজারে আসতে শুরু করবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা, কচুয়া, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, মোরেলগঞ্জ, শরনখোলা, রামপাল, মোংলা এবং চিতলমারীসহ নয়টি উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে টমেটোর চাষ হয়েছে। এতে ব্যাপক ফলন আশা করছেন কৃষকরা। বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় জমির পরিমাণ ও সবজি উৎপাদনের হার বিশেষভাবে লক্ষনীয়।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার সদর উপজেলায় মোট ৪৬০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ৩০ হেক্টর জমিতে লালশাক, ৩০ হেক্টর পালংশাক, ৪০ হেক্টর টমেটো, ১৭০ হেক্টর লাউ, ৪০ হেক্টর বরবটি, ২০ হেক্টর শিম, ১২০ হেক্টর বেগুন এবং ১০ হেক্টর জমিতে ওলকপি চাষ করা হয়েছে।

ফকিরহাট উপজেলায় মোট ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে মূলা ৫০ হেক্টর জমিতে, লালশাক ৫০ হেক্টর, পালংশাক ৪০ হেক্টর, ফুলকপি ২৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ২৫ হেক্টর, ওলকপি ৩০ হেক্টর, টমেটো ৮৫ হেক্টর, লাউ ৮৫ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১০ হেক্টর, পুঁইশাক ৫ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২০ হেক্টর, পেঁপে ১০ হেক্টর এবং ৩০ হেক্টর জমিতে খিরাই আবাদ করা হয়েছে।

মোল্লারহাট উপজেলায় মোট ৫৬০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে শুধু টমেটো চাষ হয়েছে ৫২৩ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও মূলা ৩ হেক্টর, লালশাক ৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, ফুলকপি ২ হেক্টর, বাঁধাকপি ৩ হেক্টর, ওলকপি ৪ হেক্টর, লাউ ৩ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৫ হেক্টর, শসা ৫ হেক্টর, পুঁইশাক ৫ হেক্টর এবং ২ হেক্টর জমিতে ধনিয়াপাতা চাষ করা হয়েছে।

রামপাল উপজেলায় মোট ৯৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ৫ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, ওলকপি ৫ হেক্টর, টমেটো ৫ হেক্টর, লাউ ২৫ হেক্টর, বরবটি ১০ হেক্টর, শিম ২০ হেক্টর এবং ৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলার কচুয়া উপজেলায় মোট ৪৭৭ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ২৮ হেক্টর, লালশাক ৩০ হেক্টর, পালংশাক ১৫ হেক্টর, ফুলকপি ১০ হেক্টর, বাঁধাকপি ১১ হেক্টর, ওলকপি ১২ হেক্টর, টমেটো ২৭৫ হেক্টর, লাউ ৩০ হেক্টর, বরবটি ১০ হেক্টর, শিম ১৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ২ হেক্টর, বেগুন ১০ হেক্টর, পুঁইশাক ১২ হেক্টর, ডাটা ৫ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ৫ হেক্টর, পেঁপে ৩ হেক্টর, খিরাই ১ হেক্টর এবং ৩ হেক্টর জমিতে কাঁচকলা চাষ করা হয়েছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১০ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, টমেটো ৩ হেক্টর, লাউ ৪০ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১০ হেক্টর, বেগুন ৮ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ৩ হেক্টর এবং ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে।

শরনখোলা উপজেলায় মোট ৪০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ৫ হেক্টর, লালশাক ৮ হেক্টর, পালংশাক ২ হেক্টর, লাউ ৫ হেক্টর, বরবটি ১ হেক্টর, শিম ১০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৫ হেক্টর, বেগুন ২ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২ হেক্টর, পেঁপে ১০ হেক্টর এবং ৩০ হেক্টর জমিতে খিরাইয়ের আবাদ হয়েছে।

জেলার বন্দর উপজেলা মোংলায় মোট ২০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১ হেক্টর, লালশাক ৫ হেক্টর, ওলকপি ১ হেক্টর, টমেটো ২ হেক্টর, লাউ ৫ হেক্টর, শিম ১ হেক্টর এবং ৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে সবজি চাষ করেছে চিতলমারী উপজেলার কৃষকরা। এ উপজেলায় মোট ৯৯১ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে কেবল টমেটো চাষ করা হয়েছে ৮৫৪ হেক্টর জমিতে। এছাড়া মূলা ১২ হেক্টর, লালশাক ১২ হেক্টর, পালংশাক ১১ হেক্টর, ফুলকপি ১ হেক্টর, বাঁধাকপি ১ হেক্টর, ওলকপি ১ হেক্টর, লাউ ২১ হেক্টর, বরবটি ৮ হেক্টর, শিম ৪ হেক্টর, উচ্ছে ১ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ২০ হেক্টর, বেগুন ২৫ হেক্টর, পেঁপে ৯ হেক্টর এবং ১১ হেক্টর জমিতে কাঁচকলা চাষ করা হয়েছে।

কৃষি অধিদপ্তর বাগেরহাটের অতিরিক্ত উপপরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, চলতি বছরে বাগেরহাট জেলায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে রবি ফসল আবাদ বিলম্বে শুরু হলেও মাটি ও পানির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় সবজির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
‎‎কৃষি অধিদপ্তর বাগেরহাটের উপপরিচালক আলহাজ মো. মোতাহার হোসেন জানান, চলতি বছর সার ও বীজের কোন ঘাটতি না থাকায় কৃষকেরা অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি ফসল আবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজি উৎপাদন বেশী হবে বলে কৃষকেরা আশা করছে। এতে একদিকে সবজির উৎপাদন বেশী হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হবেন অন্যদিকে ক্রেতারা কম দামে কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনতে পারবে।

মোতাহার হোসেন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সবসময় কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে। বিভিন্ন সময় সবজির রোগ নির্ণয় ও পোকা দমন, উন্নত বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন মাছের ঘেরের পাড়ে বেশিরভাগ সবজি টমেটো, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ওলকপি ও করলা আবাদ করায় কীটনাশক ব্যবহারও কম হয়। আবার কোথাও কোথাও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। এতে ক্রেতারা নিরাপদ সবজি খেতে পারছে।

তিনি বলেন, চলতি বছর টমেটো, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, ওলকপি, করলা, বাঁধাকপি ও ফুলকপি আবাদ করে একেক জন কৃষক একর প্রতি ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা লাভ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চিতলমারী ও মোল্লাহাটে মৌসুমের শেষের দিকে প্রচুর পরিমাণে টমেটো উৎপাদিত হওয়ায় তখন কৃষকরা আশানুরূপ দাম পায় না। তখন ক্ষেতেই টমেটো পচে যায়। এ বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার টমেটো সংরক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে সেখানে ৩টি কোল্ডস্টোরেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে কৃষকরা আরও বেশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com