ছাত্ররাজনীতির মডেল দেখিয়েছে শিবির : সাদিক কায়েম

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘শিবির পরিচয়কে ক্রিমিনালাইজড করা হয়েছিল। একক সংগঠন হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার শিবির। আমাদের ৬ জন ভাইয়ের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির মডেল কেমন হবে? তা ছাত্রশিবির গত এক বছরে করে দেখিয়েছে।’

 

সোমবার (১৩ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত শহীদ সাজিদ স্মৃতি আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাদিক কায়েম বলেন, ‘সুষ্ঠু রাজনীতির যে চিন্তা, তার সব কিছু আমরা সৃজনশীলতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চাই। শিবির সব সময় সৃজনশীলতাকে প্রমোট করে, কারণ সুন্দর সমাজ, সুন্দর ক্যাম্পাস ও সুন্দর দেশ গঠনে এর ভূমিকা অপরিসীম।’

 

তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সমাজ গঠনের জন্য বিতর্কের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিতর্কের মাধ্যমে সমাজের সমস্যাগুলোকে সামনে আনতে চাই। এতে যুক্তিনির্ভর চিন্তার বিকাশ ঘটে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে গিয়ে আমরা দল-মত-নির্বিশেষে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। গত ১৬ বছর আমরা মুক্তির জন্য লড়াই করেছি।’

 

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গণমাধ্যম, সিভিল সমাজ ও কিছু ব্যবসায়ী সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। মুখে মুক্তির কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর নির্যাতন চালানোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবীও এতে ভূমিকা রেখেছিলেন।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা আজ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ৫ আগস্টের পর সবাই বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এর আগে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে, কেউ যদি শিবির করে, তার কোনো অধিকার থাকবে না।’ গুম কমিশনের তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি দাবি করেন, ‘সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে জামায়াত ও শিবির। একক সংগঠন হিসেবে বিএনপির পরই শিবিরের অবস্থান।’

 

শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম দাবি ছিল প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের আতুরঘর। এখানে জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানউৎপাদন হবে—যা সমগ্র সমাজের উন্নয়নে ‘হাব’ হিসেবে কাজ করবে।’

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. বিলাল হোসাইন। তিনি বলেন, ‘বিতর্ক মানুষকে ভাবতে শেখায়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি—যারা বিতর্ক করে, তারা পরীক্ষায় ভালো ফল করে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসি মূলত ভালো মানুষ হওয়ার জন্য। যদি বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে ব্যর্থ হয়, তবে জাতীয় পর্যায়ে তার কোনো ইতিবাচক অবদান থাকবে না। আমাদের হতে হবে জ্ঞাননির্ভর।’

 

এ সময় শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি মডারেটর অধ্যাপক নুরুল্লাহ, শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শহীদ একরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মোট ২৪টি দল অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগকে হারিয়ে ইতিহাস বিভাগ বিজয়ী হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» এনসিপির চেয়ে ৫ গুণ বড় দল গণ অধিকার পরিষদ: রাশেদ খান

» জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বড় বিজয়: আখতার হোসেন

» ছাত্ররাজনীতির মডেল দেখিয়েছে শিবির : সাদিক কায়েম

» ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবো: প্রধান উপদেষ্টা

» বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন

» আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে মেয়েদের সমান শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে মাশা, জেসিয়া এবং তাসফির বার্তা

» ৩০ বছর পর উপজেলা ১০ নম্বর ইউনিয়নে জমি উদ্ধার

» বেতন বোনাসের দাবিতে দেশবন্ধু পলিমারে শ্রমিক বিক্ষোভ

» আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে, নিম্নে কক্ষে পিআরের পক্ষে নই- জামালপুরে সারজিস আলম 

» মোরেলগঞ্জে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ছাত্ররাজনীতির মডেল দেখিয়েছে শিবির : সাদিক কায়েম

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘শিবির পরিচয়কে ক্রিমিনালাইজড করা হয়েছিল। একক সংগঠন হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার শিবির। আমাদের ৬ জন ভাইয়ের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির মডেল কেমন হবে? তা ছাত্রশিবির গত এক বছরে করে দেখিয়েছে।’

 

সোমবার (১৩ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত শহীদ সাজিদ স্মৃতি আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাদিক কায়েম বলেন, ‘সুষ্ঠু রাজনীতির যে চিন্তা, তার সব কিছু আমরা সৃজনশীলতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চাই। শিবির সব সময় সৃজনশীলতাকে প্রমোট করে, কারণ সুন্দর সমাজ, সুন্দর ক্যাম্পাস ও সুন্দর দেশ গঠনে এর ভূমিকা অপরিসীম।’

 

তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সমাজ গঠনের জন্য বিতর্কের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিতর্কের মাধ্যমে সমাজের সমস্যাগুলোকে সামনে আনতে চাই। এতে যুক্তিনির্ভর চিন্তার বিকাশ ঘটে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে গিয়ে আমরা দল-মত-নির্বিশেষে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। গত ১৬ বছর আমরা মুক্তির জন্য লড়াই করেছি।’

 

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গণমাধ্যম, সিভিল সমাজ ও কিছু ব্যবসায়ী সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। মুখে মুক্তির কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর নির্যাতন চালানোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবীও এতে ভূমিকা রেখেছিলেন।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা আজ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ৫ আগস্টের পর সবাই বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। কিন্তু এর আগে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে, কেউ যদি শিবির করে, তার কোনো অধিকার থাকবে না।’ গুম কমিশনের তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি দাবি করেন, ‘সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে জামায়াত ও শিবির। একক সংগঠন হিসেবে বিএনপির পরই শিবিরের অবস্থান।’

 

শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম দাবি ছিল প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের আতুরঘর। এখানে জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানউৎপাদন হবে—যা সমগ্র সমাজের উন্নয়নে ‘হাব’ হিসেবে কাজ করবে।’

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. বিলাল হোসাইন। তিনি বলেন, ‘বিতর্ক মানুষকে ভাবতে শেখায়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি—যারা বিতর্ক করে, তারা পরীক্ষায় ভালো ফল করে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসি মূলত ভালো মানুষ হওয়ার জন্য। যদি বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে ব্যর্থ হয়, তবে জাতীয় পর্যায়ে তার কোনো ইতিবাচক অবদান থাকবে না। আমাদের হতে হবে জ্ঞাননির্ভর।’

 

এ সময় শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি মডারেটর অধ্যাপক নুরুল্লাহ, শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শহীদ একরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মোট ২৪টি দল অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগকে হারিয়ে ইতিহাস বিভাগ বিজয়ী হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com