২ বছর পূর্ণ হলে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো কি হারাম?

সংগৃহীত ছবি

 

মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার যেন কোনোভাবে খর্ব না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা কর্তব্য। শিশুর দুধের প্রয়োজনে মায়ের ওপর রোজা রাখার বাধ্য-বাধকতা পর্যন্ত শিথিল করেছে ইসলামি শরিয়ত। অবশ্য রোজাগুলো পরে কাজা করে নিতে হবে। (মুসনাদে আহমদ: ১৯০৪৭; মুসান্নাফ আব্দুর রাজজাক: ৭৫৬৪)

 

ইসলামি শরিয়তে শিশুকে চান্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না। উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েজ হবে না এবং সন্তানের জন্য তা উপকারীও হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহ তাআলা বিধান দিয়েছেন।

 

অনেকে বলে থাকেন, শিশুকে আড়াই বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়ানো যাবে। এ কথা সঠিক নয়। কেননা কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সুরা বাকারা: ২৩৩)

আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তার (সন্তান) দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে।’ (সুরা লুকমান: ১৪)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন- لا رضاع إلا في الحولين ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’

 

সুতরাং দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর সন্তানকে আর দুধ পান করানো যাবে না। কেউ কেউ এটাও বলে থাকেন যে, শিশুর স্বাস্থ্যহানীর  আশঙ্কা থাকলে কিংবা অন্য খাবারে অভ্যস্থ না হলে আড়াই বছর বুকের দুধ খাওয়ানোর সুয়োগ আছে। এ ধারণাও ভুল। কোনোভাবেই শিশুকে দুই বছরের বেশি বুকের দুধ খাওয়ানোর সুযোগ নেই। শিশু অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও।

 

আজকাল বাজারে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি অনুপাতে বিভিন্ন কোম্পানির গুড়ো দুধ পাওয়া যায়। সুতরাং অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও তেমন অসুবিধা নেই। দুই বছরের বেশি যেন বুকের দুধ খাওয়াতে না হয় সেজন্য পূর্ব থেকেই শিশুকে অন্য খাবারে অভ্যস্ত করা উচিত এবং এক বছর আট-নয় মাস হলেই বুকের দুধ কমিয়ে দেওয়া উচিত। যেন যথাসময়ে দুধ ছাড়ানো শিশুর জন্য কষ্টের কারণ না হয়ে যায়।

 

(সুরা বাকারা: ২৩৩; তাফসিরে তাবারি: ৪৯৬২; মুখতাসারুত তহাবি: ২২০; আলবাহরুর রায়েক: ৩/২২৩; দারাকুতনি: ৪/১৭৪; তাফসিরে মাজহারি: ১/৩২৩; মাজমাউল আনহুর: ১/৫৫২; আত্তাসহিহ ওয়াত্তারজিহ: ৩৩৫; ফাতহুল কাদির: ৩/৩০৭-৩০৯)  সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ২ বছর পূর্ণ হলে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো কি হারাম?

» মোটরসাইকেলের ধাক্কায় যুবক নিহত

» ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে রাজনীতি প্রবেশ করবে না : অর্থ উপদেষ্টা

» ভারত ‘বোকার স্বর্গে’ বাস করছে : রিজভী

» মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে বেতনের বাইরে জমা হয় ১৩৪ কোটি

» টেকনাফে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা জব্দ

» তারেক রহমান খালাস পাওয়ায় নিউইয়র্কে বিএনপির শোকরানা সমাবেশ

» আগামিকাল ২৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» যৌথবাহিনীর অভিযানে তিন মাদক কারবারি আটক

» অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ভারতীয় নারীসহ আটক ২

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

২ বছর পূর্ণ হলে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো কি হারাম?

সংগৃহীত ছবি

 

মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার যেন কোনোভাবে খর্ব না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা কর্তব্য। শিশুর দুধের প্রয়োজনে মায়ের ওপর রোজা রাখার বাধ্য-বাধকতা পর্যন্ত শিথিল করেছে ইসলামি শরিয়ত। অবশ্য রোজাগুলো পরে কাজা করে নিতে হবে। (মুসনাদে আহমদ: ১৯০৪৭; মুসান্নাফ আব্দুর রাজজাক: ৭৫৬৪)

 

ইসলামি শরিয়তে শিশুকে চান্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না। উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েজ হবে না এবং সন্তানের জন্য তা উপকারীও হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহ তাআলা বিধান দিয়েছেন।

 

অনেকে বলে থাকেন, শিশুকে আড়াই বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়ানো যাবে। এ কথা সঠিক নয়। কেননা কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সুরা বাকারা: ২৩৩)

আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তার (সন্তান) দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে।’ (সুরা লুকমান: ১৪)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন- لا رضاع إلا في الحولين ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’

 

সুতরাং দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর সন্তানকে আর দুধ পান করানো যাবে না। কেউ কেউ এটাও বলে থাকেন যে, শিশুর স্বাস্থ্যহানীর  আশঙ্কা থাকলে কিংবা অন্য খাবারে অভ্যস্থ না হলে আড়াই বছর বুকের দুধ খাওয়ানোর সুয়োগ আছে। এ ধারণাও ভুল। কোনোভাবেই শিশুকে দুই বছরের বেশি বুকের দুধ খাওয়ানোর সুযোগ নেই। শিশু অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও।

 

আজকাল বাজারে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি অনুপাতে বিভিন্ন কোম্পানির গুড়ো দুধ পাওয়া যায়। সুতরাং অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও তেমন অসুবিধা নেই। দুই বছরের বেশি যেন বুকের দুধ খাওয়াতে না হয় সেজন্য পূর্ব থেকেই শিশুকে অন্য খাবারে অভ্যস্ত করা উচিত এবং এক বছর আট-নয় মাস হলেই বুকের দুধ কমিয়ে দেওয়া উচিত। যেন যথাসময়ে দুধ ছাড়ানো শিশুর জন্য কষ্টের কারণ না হয়ে যায়।

 

(সুরা বাকারা: ২৩৩; তাফসিরে তাবারি: ৪৯৬২; মুখতাসারুত তহাবি: ২২০; আলবাহরুর রায়েক: ৩/২২৩; দারাকুতনি: ৪/১৭৪; তাফসিরে মাজহারি: ১/৩২৩; মাজমাউল আনহুর: ১/৫৫২; আত্তাসহিহ ওয়াত্তারজিহ: ৩৩৫; ফাতহুল কাদির: ৩/৩০৭-৩০৯)  সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com