২০ বছর পর স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ফেনীতে ৮ মাসের অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে হত্যার দায়ে ২০ বছর পর রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আবদুল কাদেরকে (৪৬) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

 

রোববার  সকালে তাকে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

 

এর আগে শনিবার মধ্যরাতে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের একটি বাড়ী থেকে আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠানগড় গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে।

 

র‌্যাব-৭ এর সদর কোম্পানী কমান্ডার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরী তাকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

 

গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বামী আবদুল কাদেরের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওসমান হায়দার। রায় ঘোষণার সময় আসামী আবদুল কাদের আদালতে অনুপস্থিত (পলাতক) ছিলেন।

 

এছাড়া একই মামলার অপর দুই আসামী মকবুল আহম্মদ ও হাফেজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে মামলা চলাকালে শরিফা খাতুন ও আমেনা খাতুন নামে দুইজন আসামী মারা যায়।

 

মামলার এজাহার ও পুলিশ জানায়, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম পাঠানগড় গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে আবদুল কাদেরের সাথে একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে আবু তারার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূর পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না পেয়ে তারা নিয়মিত গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। গত ২৩/০৭/২০০০ ইং তারিখ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন।

 

গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। যৌতুক না পেয়ে গত ১৫/৪/২০০১ স্বামী আবদুল কাদের ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূ আবু তারাকে বেধড়ক মারধর ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ওই রাতেই তারা গৃহবধূকে গলায় রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করতে থাকে। মৃত্যুর সময় আবু তারা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা মোহাম্মদ আলী ছাগলনাইয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ৩১/০৭/২০০১ ইং ছাগলনাইয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।

 

ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গ্রেপ্তার স্বামী আবদুল কাদেরকে ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে বার বার পত্র দিয়েছে বিএনপি’

» রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো : জামায়াত আমির

» গাজায় মৃত্যু ঝুঁকিতে ৬৫ হাজার শিশু

» ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

» জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছোঁয়া ক্রীড়াঙ্গনেও লেগেছিল : যুব ও ক্রীড়া উ পদেষ্টা

» ফেসবুক-ইউটিউব-গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রচারণা নিষিদ্ধ

» ওয়ানশুটার গান ও দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজন আটক

» রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

» নিজের আকিকা করা যাবে?

» যুবককে কুপিয়ে হত্যা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

২০ বছর পর স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ফেনীতে ৮ মাসের অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে হত্যার দায়ে ২০ বছর পর রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আবদুল কাদেরকে (৪৬) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

 

রোববার  সকালে তাকে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

 

এর আগে শনিবার মধ্যরাতে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের একটি বাড়ী থেকে আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠানগড় গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে।

 

র‌্যাব-৭ এর সদর কোম্পানী কমান্ডার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরী তাকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

 

গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বামী আবদুল কাদেরের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওসমান হায়দার। রায় ঘোষণার সময় আসামী আবদুল কাদের আদালতে অনুপস্থিত (পলাতক) ছিলেন।

 

এছাড়া একই মামলার অপর দুই আসামী মকবুল আহম্মদ ও হাফেজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে মামলা চলাকালে শরিফা খাতুন ও আমেনা খাতুন নামে দুইজন আসামী মারা যায়।

 

মামলার এজাহার ও পুলিশ জানায়, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম পাঠানগড় গ্রামের মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে আবদুল কাদেরের সাথে একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে আবু তারার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূর পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না পেয়ে তারা নিয়মিত গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। গত ২৩/০৭/২০০০ ইং তারিখ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন।

 

গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। যৌতুক না পেয়ে গত ১৫/৪/২০০১ স্বামী আবদুল কাদের ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূ আবু তারাকে বেধড়ক মারধর ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ওই রাতেই তারা গৃহবধূকে গলায় রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করতে থাকে। মৃত্যুর সময় আবু তারা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা মোহাম্মদ আলী ছাগলনাইয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ৩১/০৭/২০০১ ইং ছাগলনাইয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।

 

ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গ্রেপ্তার স্বামী আবদুল কাদেরকে ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com