ঢাকা, বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫: ব্র্যাক ব্যাংক ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি–জুন) সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় (এনপিএটি) ৫৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের সমন্বিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ ব্যাংকটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৯০৬ কোটি টাকায়, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে অর্জিত ৫৯১ কোটি টাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
এ সময়ে এককভাবে (স্ট্যান্ডঅ্যালন) ব্র্যাক ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬২০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের ৫১৯ কোটি টাকার তুলনায় ২০% বেশি। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি মার্কেট অ্যাভারেজ প্রবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি হারে ব্যালেন্স শিট প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বার্ষিক ভিত্তিতে গ্রাহক আমানত বেড়েছে ২৮% এবং গ্রাহক ঋণ বেড়েছে ৭%।
২১ আগস্ট ২০২৫ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত আর্নিংস ডিসক্লোজার অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের এই আর্থিক তথ্যগুলো প্রকাশ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন ব্যাংকটির স্থানীয় ও বিদেশি স্টেকহোল্ডার, বিনিয়োগ-বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞবৃন্দ।
আয়োজনে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যাংকটির আর্থিক ফলাফল, সাফল্য, সক্ষমতা উপস্থাপনের পাশাপাশি ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসের উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ:
সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ৩.৫৬ টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ২.৬২ টাকা।
২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪২.৬০ টাকা, যা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে ছিল ৩৯.৩৮ টাকা।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের একক (স্ট্যান্ডঅ্যালন) আমানত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি কৌশল ও গ্রাহক আস্থার প্রতিফলন।
সমন্বিত রিটার্ন অন ইক্যুইটি (আরওই) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ) যথাক্রমে ১৭.৩৬% এবং ১.২৭%-এ উন্নীত হয়েছে।
সমন্বিত মোট আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯% বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মধ্যে সুদ আয়ের পাশাপাশি নন-ফান্ডেড আয়ের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৩.৩৭%, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২.৬৩%।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন আর্থিক সাফল্য সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংকের এ সাফল্য গ্রাহক, সমাজ ও দেশের প্রতি আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির উদাহরণ। গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের আস্থা ও বিশ্বাসকে সাথে নিয়ে আমরা উদ্ভাবন, ক্ষমতায়ন এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সকল স্টেকহোল্ডারদের কাছে ব্র্যাক ব্যাংক এখন এক আস্থার নাম। কর্পোরেট সুশাসন, কমপ্লায়েন্স এবং মূল্যবোধ-নির্ভর ব্যাংকিংয়ে ব্র্যাক ব্যাংক রোল-মডেল হিসেবে স্বীকৃত। এমন অর্জনের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহকদের প্রতি— তাঁদের অবিচল আস্থার জন্য, আমাদের চেয়ারপারসন ও পরিচালনা পর্ষদের প্রতি— তাঁদের ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি— তাঁদের দূরদর্শী রেগুলেটরি দিকনির্দেশনা ও নিরবচ্ছিন্ন সহায়তার জন্য।”
আর্থিক তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে: https://www.bracbank.com/en/investor-relations#financialStatements