সংগৃহীত ছবি
ডেস্ক রিপোর্ট :১৪ বছরেও বিচার হয়নি ফেলানী হত্যার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি, কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ গুলি চালিয়ে, হত্যা করে ফেলানীকে। শুধু ফেলানী নয়, পনেরো বছরে সীমান্তে ৬ শতাধিক হত্যার একটিরও বিচার হয়নি।
আন্তর্জাতিক মহলের চাপে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। তবে সাজানো বিচারে মাত্র এক মাসের মধ্যে বেকসুর খালাস দেওয়া হয় আসামি বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষকে। বাদীপক্ষের না রাজিতে ২০১৪ সালে ফের শুরু হয় পুনঃবিচার। তাতেও সাজা হয়নি আসামির। ২০১৫ সালে ফেলানীর পরিবারের পক্ষে সেদেশের সুপ্রিম কোর্টে রিট করে মানবাধিকার সংস্থা-সুরক্ষা মঞ্চ। এরপর দফায় দফায় পেছাতে থাকে শুনানির তারিখ। ৯ বছর ধরে বিচারের নামে চলছে প্রহসন।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি চোখের সামনে ছটফট করে মেয়েকে মরতে দেখেছেন মা। ফেলানীর সেই মৃত্যুযন্ত্রণা আজও তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। ফেলানীর মা জাহানারা বেগম আক্ষেপ করে জানান, ৩ ঘণ্টা পানির জন্য চিৎকার করেছিল ফেলানী। তবে তিনি মা হয়ে তার মেয়ের পাশে যেতে পারেননি।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নতুন সরকার অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারকে এই মামলাটি দেখভাল করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বছরওয়ারি হিসাব অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সীমান্তে ৬ শতাধিক মানুষ হত্যা করেছে বিএসএফ। আহত ও পঙ্গু হয়েছে সাড়ে সাতশ মানুষ। এসব ঘটনার একটিরও বিচার হয়নি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, দীর্ঘদীন ধরে বিএসএফের দেখা মাত্রই গুলি করার যে বিষয়টি যা আসলে তাদের করার কথা নয় এ কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে।
কুড়িগ্রামের সাবেক পিপি এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করা হয়েছে সেটির নিষ্পত্তি হলে শুধু ন্যায় বিচারই নয় বরং ভবিষ্যতে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে। নিরস্ত্র নাগরিকদের সুরক্ষা ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ-ভারত স্বাক্ষরিত যৌথ প্রটোকল পুনর্মূল্যায়ন ও পূর্ণ প্রয়োগের পরামর্শও দেন তিনি।