ছবি সংগৃহীত
সকল দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ না ফেরা পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে চায় জামায়াত। বেশিও না কমও না, ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু সময় দেবে দলটি।
আজ দুপুরে গাইবান্ধার হোটেল আর রহমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গাইবান্ধার শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিয়ম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন তা দেওয়া হবে। এখন যেসব পুলিশ, ডিসি, এসপি, এসআই প্রশাসনে বসে আছে, ভোট ডাকাতে যারা সহযোগিতা করেছে, তারা এখনো যায় নাই। ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করা লাগবে। ১৫ বছরের জঞ্জাল ১৫ দিনে শেষ করা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের আইন বদলাতে হবে, সংস্কার করতে হবে। দলবাজ, সরকারি পদে থেকে যারা আওয়ামী লীগ করেছিল তাদেরকে সরাতে হবে। এই সংস্কারের কাজগুলো করতে যতটুকু সময় লাগে যতটুকু সময় দিতে জামায়াতে ইসলামী রাজি আছে। এটার জন্য কোনো মাস, দিন, ঘণ্টা আমরা বেঁধে দিতে পারি না। তবে আমরা বলেছি এটা যেন খুব লম্বা সময় না হয়।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এক মাসও হয়নি অনেকেই বলছেন ভোট দেন, ভোট দেন, ভোট দেন। এখন ভোট দিলেতো ওই ভোটই হবে। ভোট দিতে যখন যাবেন পথে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ বাধা দেবে। আর পুলিশ বলবে ভোট হয়ে গেছে। গ্রহণযোগ্য ভোটের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করব।
এ সময় শহীদ পরিবারগুলোর পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সব সময় গাইবান্ধার ছয় শহীদ পরিবারের খোঁজ-খবর রাখতে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের নির্দেশনাও দেন এই জামায়াত নেতা।
এর আগে সভায় গাইবান্ধায় শহীদ ছয় পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। এ সময় ঢাকার আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগমের বক্তব্যে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কান্নায় চোখ ভিজে যায় জামায়াত সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দের। নিহত প্রত্যেক পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।
পরে শহীদ পরিবারের প্রত্যেকের হাতে নগদ এক লাখ করে টাকা তুলে দেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ সময় সজলের এক বছর এক মাস বয়সী মেয়েকে কোলেও তুলে নেন তিনি।
গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহিম, বর্তমান আমির ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল করিম প্রমুখ।