সংগৃহীত ছবি
রাজধানীর পল্লবী থানা হেফাজতে ইশতিয়াক হোসেন জনি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও বরখাস্ত এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদসহ তিন জনের জামিন আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে তাদের আইনজীবী এ আবেদন করেন।
অন্য দুই সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন পল্লবী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ও এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর আসামিদের খালাস চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই মামলার আপিল আবেদন করা হয়।
২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জাহিদসহ পুলিশের সাবেক তিন সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-পল্লবী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ও এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু।
এ ছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ তিন আসামির প্রত্যেককে ভুক্তভোগী পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেও বলা হয়।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ২০১৩ সালের ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন বাতিল’ চাওয়া হচ্ছিল পুলিশের পক্ষ থেকে।
এর মধ্যেই আইনটি পাস হওয়ার সাত বছর পর ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ আইনে প্রথম রায় হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছিলেন। জনি ও তার ভাই এ সময় সুমনকে সেখান থেকে চলে যেতে বললে তিনি পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ এসে জনিকে আটক করে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে ধাওয়া দিলে তারা গুলি ছোড়ে।
আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের একপর্যায়ে জনির অবস্থার অবনতি হয়। এ সময় প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।
জনির মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেন তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওসি জিয়াউর রহমানসহ পাঁচজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে প্রতিবেদনে নতুনভাবে অভিযুক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। অভিযোগ গঠনের পর প্রায় সাড়ে চার বছরে এ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। সূএ :জাগোনিউজ২৪.কম