হৃৎপিন্ডের যত্ন নিয়ে কিছু কথা

ছবি সংগৃহীত

 

ডা. আমিরউজ্জামান খান : সুস্থ থাকা মানেই কিন্তু শরীর সুস্থ থাকা। কারণ শরীরে মূল কাণ্ডারি হলো হার্ট। তাই সবার আগে হার্টের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে গেলে হার্ট ভালো রাখতেই হবে। আজকাল খুব কম বয়স থেকেই অনেকে হৃদরোগের আক্রান্ত। হার্টের নানা সমস্যায় ভুগছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, পৃথিবীতে প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়, এর বড় একটি অংশ হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়।  হার্টের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণগুলো হলো- ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি অথবা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কম, পরিবারে হার্ট অ্যাটাক রোগের ইতিহাস। কারণগুলোর কোনোটি না থাকলে শুধু বয়স বৃদ্ধির (পুরুষের ক্ষেত্রে ৪৫ ও নারীদের ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

 

আমরা যদি হৃদরোগ নিয়ে সতর্ক হই তাহলে প্রাথমিক অবস্থা থেকেই এ রোগ আয়ত্তে আনা সম্ভব। আর ডায়াবেটিস রোগীদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেকের হার্ট অ্যাটাকের সময় বুকে ব্যথা না-ও হতে পারে। এ রকম রোগী হঠাৎ করে ঘামতে শুরু করেন এবং রক্তচাপ কমে যায়। এ অবস্থা মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিনা নিরূপণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা সুস্থ জীবনের লক্ষ্য নিয়ে বাঁচতে হবে।

 

হৃৎপিন্ডের একটি রোগ আছে, সেই রোগটির নাম করোনারি আর্টারি ডিজিস বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিস। কোনো কারণে যদি করনারি আর্টারির ভিতর চর্বি জমে হৃৎপিন্ডের মাংসপেশির অক্সিজেন ও নিউট্রিশন সরবরাহে ব্যাহত করে, তখন বুকে ব্যথা হতে পারে। এসব রোগীর করোনারি এনজিওগ্রাম করা উচিত। যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, তবে বুকে প্রচ- ব্যথা হয়। বমি হতে পারে। ঘাম হতে পারে ও বুক ধড়ফড় করতে পারে।

 

এই রোগকে তখন Acute Myocardial Infarction বলে থাকে। হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমার জন্য অক্সিজেন ও নিউট্রিশন না পেলে হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি শুকিয়ে যায় এবং হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি তখন Pump করতে পারে না। ফলে শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং Acute Myocardial Infarction হওয়ার আগে এনজিওগ্রাম করাটা বাঞ্ছনীয়।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, কার্ডিওলজি বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা।

সূএ:  বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আরেক দফা কমলো স্বর্ণের দাম

» নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ

» মন্ত্রণালয়ের চলমান কার্যক্রম দ্রুত সমাপ্ত করতে হবে: তথ্য উপদেষ্টা

» নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’

» গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

» ‘স্বৈরাচারের দোসররা গুজব ছড়িয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে দমাতে চাইছে’

» কুষ্টিয়ায় ডিবি পুলিশের অভিযানে ট্যাপেন্টাডলসহ যুবক আটক

» বাটা স্টারলাইট কালেকশনের সাথে আপনার ঈদ হোক আরও জমজমাট!

» চার দিনের মাথায় যমুনা সার কারখানা আবারও উৎপাদন বন্ধ

» সার্কুলার ইকোনমি নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক, ইআইবি এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুলের বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হৃৎপিন্ডের যত্ন নিয়ে কিছু কথা

ছবি সংগৃহীত

 

ডা. আমিরউজ্জামান খান : সুস্থ থাকা মানেই কিন্তু শরীর সুস্থ থাকা। কারণ শরীরে মূল কাণ্ডারি হলো হার্ট। তাই সবার আগে হার্টের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে গেলে হার্ট ভালো রাখতেই হবে। আজকাল খুব কম বয়স থেকেই অনেকে হৃদরোগের আক্রান্ত। হার্টের নানা সমস্যায় ভুগছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, পৃথিবীতে প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়, এর বড় একটি অংশ হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়।  হার্টের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণগুলো হলো- ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি অথবা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কম, পরিবারে হার্ট অ্যাটাক রোগের ইতিহাস। কারণগুলোর কোনোটি না থাকলে শুধু বয়স বৃদ্ধির (পুরুষের ক্ষেত্রে ৪৫ ও নারীদের ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

 

আমরা যদি হৃদরোগ নিয়ে সতর্ক হই তাহলে প্রাথমিক অবস্থা থেকেই এ রোগ আয়ত্তে আনা সম্ভব। আর ডায়াবেটিস রোগীদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেকের হার্ট অ্যাটাকের সময় বুকে ব্যথা না-ও হতে পারে। এ রকম রোগী হঠাৎ করে ঘামতে শুরু করেন এবং রক্তচাপ কমে যায়। এ অবস্থা মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিনা নিরূপণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা সুস্থ জীবনের লক্ষ্য নিয়ে বাঁচতে হবে।

 

হৃৎপিন্ডের একটি রোগ আছে, সেই রোগটির নাম করোনারি আর্টারি ডিজিস বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিস। কোনো কারণে যদি করনারি আর্টারির ভিতর চর্বি জমে হৃৎপিন্ডের মাংসপেশির অক্সিজেন ও নিউট্রিশন সরবরাহে ব্যাহত করে, তখন বুকে ব্যথা হতে পারে। এসব রোগীর করোনারি এনজিওগ্রাম করা উচিত। যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, তবে বুকে প্রচ- ব্যথা হয়। বমি হতে পারে। ঘাম হতে পারে ও বুক ধড়ফড় করতে পারে।

 

এই রোগকে তখন Acute Myocardial Infarction বলে থাকে। হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমার জন্য অক্সিজেন ও নিউট্রিশন না পেলে হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি শুকিয়ে যায় এবং হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি তখন Pump করতে পারে না। ফলে শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং Acute Myocardial Infarction হওয়ার আগে এনজিওগ্রাম করাটা বাঞ্ছনীয়।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, কার্ডিওলজি বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা।

সূএ:  বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com