হৃদরোগের অস্বাভাবিক আচরণ

প্রতীকী ছবি
 ডা. এম শমশের আলী: হৃৎপিন্ডে অক্সিজেনের চাহিদা বিশ্রামকালীন সময়ের চাহিদার চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পায়। সুতরাং যারা হৃদরোগে ভুগছেন তাদের রক্ত সরবরাহের অপ্রতুলতা থাকায় পরিশ্রমকালীন সময় প্রয়োজনীয় পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে হৃৎপিন্ডের ব্যথা বা বুক ব্যথা যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এনজিনা বলা হয়ে থাকে তা পরিলক্ষিত হয়। আবার বিশ্রামকালীন বা পরিশ্রম করা থেকে বিরত হলে হৃৎপিন্ডে অক্সিজেনের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরবরাহের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। ফলে উপসর্গগুলো দ্রুত কমে যেতে থাকে। এত গেল হৃদরোগের স্বাভাবিক বর্ণনা যা শতকরা ৮০ জন হৃদরোগীর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। তবে শতকরা ২০ জন রোগীর ক্ষেত্রে হৃদরোগের স্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত না হয়ে অন্য ধরনের উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এসব রোগী প্রাথমিক অবস্থায় নিজেও বুঝতে পারেন না যে, তারা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সাধারণ চিকিৎসকরাও প্রায় ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয়ে জটিলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যার ফলে রোগীরা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। কেউ কেউ কবিরাজি বা হোমিও চিকিৎসকেরও শরণাপন্ন হয়ে রোগমুক্তির চেষ্টা করতে থাকেন। অনেক ডায়াবেটিস রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, অনেক বয়োবৃদ্ধ রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে অস্বাভাবিক উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যেমন- পরিশ্রম করতে গেলে তারা খুব তাড়াতাড়ি হাঁপিয়ে উঠেন, তাদের হাঁটা চলাফেরার যোগ্যতা খুব তাড়াতাড়ি কমে যায়, অনেকের চোয়ালে ব্যথা অনুভব করেন, অনেকে মনে করেন দাঁতে ব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন। কারও কারও ঘাড় বা পিঠে ব্যথা হয়ে থাকে, কেউ কেউ খাবার পরে শ্বাসকষ্টে বা অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ রাতে শুতে গেলে শ্বাসকষ্ট, শুকনো কাশি অথবা অস্থিরতা বোধ করে থাকেন। কারও শ্বাসকষ্টের জন্য রাতে ঘুম ভেঙে যায় এবং প্রায়ই বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত হয়। আবার অনেকে শুধু হাত বা বাহু বা কাঁধের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ পেটের উপরের অংশের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং এসব ব্যথার জন্য গ্যাসের ঔষধ সেবন করেও কোনো পরিত্রাণ লাভ করেন না। কারও কারও মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এ জন্য নিজের শরীরের প্রতি যত্নবান হতে হবে। প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

লেখক: চিফ কনসালটেন্ট, শমশের হার্ট কেয়ার, শ্যামলী, ঢাকা।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাত বছর পর মা-ছেলের মিলন দেখে কেঁদেছে পুরো জাতি: ইশরাক

» ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন ঘোষণা চাই : হাসনাত আবদুল্লাহ

» এবার যুক্তরাষ্ট্রের নাম পাল্টে ‘মেক্সিকান আমেরিকা’ রাখার পরামর্শ

» ফেব্রুয়ারির মধ্যে সবাই হাতে নতুন বই পাবে: প্রেস সচিব

» ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হচ্ছে না জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র: মাহফুজ

» এ মাসেই চীন সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

» জিপির ‘ফ্যান্টাস্টিক ফ্রাইডে অফার

» কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম উপন্যাস “অতল জলে জলাঞ্জলি”

» শিশুদের সৃজনশীলতার নতুন দ্বার উন্মোচনে ভিভো ও এসওএস-এর যৌথ উদ্যোগ

» গ্রাহকদের অনলাইন এয়ার টিকিট পেমেন্ট সুবিধা দিতে আকিজ লজিস্টিকসের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হৃদরোগের অস্বাভাবিক আচরণ

প্রতীকী ছবি
 ডা. এম শমশের আলী: হৃৎপিন্ডে অক্সিজেনের চাহিদা বিশ্রামকালীন সময়ের চাহিদার চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পায়। সুতরাং যারা হৃদরোগে ভুগছেন তাদের রক্ত সরবরাহের অপ্রতুলতা থাকায় পরিশ্রমকালীন সময় প্রয়োজনীয় পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে হৃৎপিন্ডের ব্যথা বা বুক ব্যথা যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এনজিনা বলা হয়ে থাকে তা পরিলক্ষিত হয়। আবার বিশ্রামকালীন বা পরিশ্রম করা থেকে বিরত হলে হৃৎপিন্ডে অক্সিজেনের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরবরাহের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। ফলে উপসর্গগুলো দ্রুত কমে যেতে থাকে। এত গেল হৃদরোগের স্বাভাবিক বর্ণনা যা শতকরা ৮০ জন হৃদরোগীর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। তবে শতকরা ২০ জন রোগীর ক্ষেত্রে হৃদরোগের স্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত না হয়ে অন্য ধরনের উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এসব রোগী প্রাথমিক অবস্থায় নিজেও বুঝতে পারেন না যে, তারা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সাধারণ চিকিৎসকরাও প্রায় ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয়ে জটিলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যার ফলে রোগীরা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। কেউ কেউ কবিরাজি বা হোমিও চিকিৎসকেরও শরণাপন্ন হয়ে রোগমুক্তির চেষ্টা করতে থাকেন। অনেক ডায়াবেটিস রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, অনেক বয়োবৃদ্ধ রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে অস্বাভাবিক উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যেমন- পরিশ্রম করতে গেলে তারা খুব তাড়াতাড়ি হাঁপিয়ে উঠেন, তাদের হাঁটা চলাফেরার যোগ্যতা খুব তাড়াতাড়ি কমে যায়, অনেকের চোয়ালে ব্যথা অনুভব করেন, অনেকে মনে করেন দাঁতে ব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন। কারও কারও ঘাড় বা পিঠে ব্যথা হয়ে থাকে, কেউ কেউ খাবার পরে শ্বাসকষ্টে বা অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ রাতে শুতে গেলে শ্বাসকষ্ট, শুকনো কাশি অথবা অস্থিরতা বোধ করে থাকেন। কারও শ্বাসকষ্টের জন্য রাতে ঘুম ভেঙে যায় এবং প্রায়ই বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত হয়। আবার অনেকে শুধু হাত বা বাহু বা কাঁধের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ পেটের উপরের অংশের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং এসব ব্যথার জন্য গ্যাসের ঔষধ সেবন করেও কোনো পরিত্রাণ লাভ করেন না। কারও কারও মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এ জন্য নিজের শরীরের প্রতি যত্নবান হতে হবে। প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

লেখক: চিফ কনসালটেন্ট, শমশের হার্ট কেয়ার, শ্যামলী, ঢাকা।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com