হাসিনা নয়, মোদির পথপ্রদর্শক এখন বাংলাদেশের ড. ইউনূস!

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের সিদ্ধান্ত সেই সময় ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করে। ভারতের ওপর একইভাবে শুল্ক আরোপ করা হলেও, তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের ওপর শুল্কহার বেশি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিশেষ আলোচনার জন্ম দেয়।

 

এই প্রেক্ষাপটে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পকে একটি চিঠি লেখেন। এতে তিনি বিশ্ব অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্যযুদ্ধ এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। ড. ইউনূসের চিঠির পর দুই দিন না যেতেই চীন ব্যতীত অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের কূটনৈতিক কারিশমা এবং অর্থনৈতিক যুক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত বদলে বাধ্য করে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে বাধ্য হন, কারণ ভারতের ওপরও শুল্ক চাপ অনেকটা কমে আসে। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ব শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে তার আকস্মিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ফলে পরিস্থিতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় এবং শেয়ারবাজারে তেজিভাব ফিরে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাতটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের সম্মিলিত বাজারমূল্য এক দিনে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বেড়ে যায়।

 

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের জবাবে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে ট্রাম্পের ইউ-টার্নের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নও ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং আলোচনায় বসার আগ্রহ জানায়। এই বিষয়ে ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে অনেক কিছু নিয়ে ভাবছিলাম। আজ সকালেই আমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোনো আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সময় ছিল না—আমি কেবল নিজের অন্তরের কথা শুনে, যেটি সঠিক মনে হয়েছে, সেটিই করেছি।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর পুরোনো শুল্কহার বহাল থাকলেও নতুনভাবে আরোপিত শুল্কগুলো ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» স্যোশাল মিডিয়ায় ‘ইন্নালিল্লাহ’ লিখে বিমানবন্দরে কাঁদলেন নোরা ফতেহি

» ১০ লাখ চাঁদা দাবির অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী দুই নেতার বিরুদ্ধে, অডিও ফাঁস

» শুধুই নিজেকে খোঁজা

» থানা থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার

» হেফাজত আমিরের সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

» বোচাগঞ্জে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ৬ নেতা গ্রেফতার

» চালের দাম বৃদ্ধি বন্ধে নজরদারি চলছে: খাদ্য উপদেষ্টা

» দুদকের মামলায় খালাস পেলেন হানিফ পরিবহনের মালিক

» বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে শিশুসহ ১১জন যাত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার

» বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাসিনা নয়, মোদির পথপ্রদর্শক এখন বাংলাদেশের ড. ইউনূস!

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের সিদ্ধান্ত সেই সময় ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করে। ভারতের ওপর একইভাবে শুল্ক আরোপ করা হলেও, তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের ওপর শুল্কহার বেশি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিশেষ আলোচনার জন্ম দেয়।

 

এই প্রেক্ষাপটে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পকে একটি চিঠি লেখেন। এতে তিনি বিশ্ব অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্যযুদ্ধ এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। ড. ইউনূসের চিঠির পর দুই দিন না যেতেই চীন ব্যতীত অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের কূটনৈতিক কারিশমা এবং অর্থনৈতিক যুক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত বদলে বাধ্য করে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে বাধ্য হন, কারণ ভারতের ওপরও শুল্ক চাপ অনেকটা কমে আসে। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ব শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে তার আকস্মিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ফলে পরিস্থিতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় এবং শেয়ারবাজারে তেজিভাব ফিরে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাতটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের সম্মিলিত বাজারমূল্য এক দিনে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বেড়ে যায়।

 

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের জবাবে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে ট্রাম্পের ইউ-টার্নের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নও ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং আলোচনায় বসার আগ্রহ জানায়। এই বিষয়ে ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে অনেক কিছু নিয়ে ভাবছিলাম। আজ সকালেই আমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোনো আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সময় ছিল না—আমি কেবল নিজের অন্তরের কথা শুনে, যেটি সঠিক মনে হয়েছে, সেটিই করেছি।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর পুরোনো শুল্কহার বহাল থাকলেও নতুনভাবে আরোপিত শুল্কগুলো ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com