সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে ও জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, আল্লামা সাঈদীকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওই ট্রাইব্যুনালের সামনে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের সব আলেম হত্যার বিচার চাই।
১৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) রাতে মিরসরাই উপজেলার পূর্ব কিসমত জাফরাবাদ রহমাতুল্লিল আলআমিন ইসলামিক একাডেমি আয়োজিত একটি মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
মাসুদ বিন সাঈদী বলেন, ২০১০ সালের ২৯ জুন আল্লামা সাঈদীকে খুনি হাসিনা সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে গ্রেফতার করেছেন। যখন তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল যুদ্ধাপরাধ নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা। যে মানুষটি ৫২ বছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৫০টি দেশ ঘুরে মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, যার মুখে কোরআন শুনে পৃথিবীতে প্রায় এক হাজারের অধিক বিধর্মী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সে মানুষটি নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। এ হাস্যকর মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে ১৩টি বছর রেখেছিলেন। সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আপনারা জানেন মামলার সাক্ষীদের ঢাকার সেফ হাউজ নামক একটি জায়গায় দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করা হতো।
তিনি বলেন, আমরা কারাগারে আব্বার সঙ্গে প্রতি মাসে এক বার করে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট যখন আব্বাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ২৬ দিন আগে আমরা আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আর ৪ দিনপর আব্বার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত একজন সুস্থ মানুষকে কারাগার থেকে নিয়ে এসে পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে হত্যা করা হয়েছে। যখন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে আসা হয় আমি তখন হাসপাতালে অবস্থান করছিলাম, আমি অসংখ্যবার তাদের কাছে অনুরোধ করেছি আমার সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করার জন্য। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। কারণ আমার সঙ্গে যদি দেখা করতে দেওয়া হতো তাহলে যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আল্লামা সাঈদীকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে সেটা ধরা পড়ে যেতো। আমি যদি দেখা করতে পারতাম তাহলে আমার বাবা নিশ্চয়ই আমাকে বলতেন আমার বুকে কোন ব্যথা নেই আমাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে এনেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে বিধায় তারা আমাকে আব্বার সঙ্গে এক মুহুর্তের জন্য দেখা করতে দেয়নি।
উপজেলা পরিষদের সাবেক এ চেয়ারম্যান আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের কোনো নেতৃবৃন্দের অপরাধ ছিল না। তাদের একটি মাত্র অপরাধ ছিল-তারা শুধুমাত্র স্বপ্রশংসিত আল্লাহর প্রশংসা করেছিল। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েমের রাজনীতি বাংলাদেশে করেছিল এটাই তাদের অপরাধ।
আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাহেরখালী আহমদিয়া হাবিবিয়া গণিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আনোয়ারুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় মাহফিলে নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি কাজী ইব্রাহীম, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও কোরআন গবেষক অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর মৌসুমী আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আলা উদ্দিন শিকদার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল কবির, সাবেক আমির মাওলানা নুরুল করিম, জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমির নুরুল হুদা হামিদী প্রমুখ।