হাতীবান্ধায় বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম

আসাদ হোসেন রিফাতঃ  লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে ভাবে সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম। বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এ নারী উদ্যোক্তা। তার ই”ছা সুপারির বাগানে বস্তায় আদা চাষে নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন। তাকে দেখে এখন অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
আদা একটি লাভজনক চাষাবাদ। সঠিক পরিকল্পনায় চাষাবাদ করলে ২ থেকে ৩ গুণ লাভ হতে পারে। পাশাপাশি ছায়া জমি বা যে জমিতে অন্য ফসল হয় না, সেই জমিতেও আদা চাষ করা সম্ভব। বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ কৃষকের কাছে একটি নতুন ধারণা। এভাবে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি বিভাগ। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ যেমন চাহিদা মেটাতে পারবে, একইভাবে কৃষকও লাভবান হবেন।
ময়না বেগম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী (ভারত-বাংলাদেশ বিনিময়কৃত,সিটমহল) এলাকার আজম আলী এর স্ত্রী। সরজমিনে মঙ্গলবার তিনি বলেন, আমি আনসার ভিডিপি’র মৌলিক প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করি সেখানে একদিন কৃষি অফিসার প্রশিক্ষন দেন সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায়। আমার বাগানে অনেক ফাঁকা জায়গা আছে, এগুলো অব্যবহৃতই থাকে। এই ফাঁকা জায়গা ব্যবহারের চিন্তা থেকে অবসর সময়ে বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে বাড়তি কোনো ফসল ফলানো যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। এক পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেই। পরে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৩০ শতক জমিতে বস্তায় আদা চাষ শুর“ করি। এখন পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে আদা চাষে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন। তিনি আরো বলেন, আদা চাষে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার এবং দানাদার কীটনাশক বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বস্তায় ভরেছেন। প্রত্যক বস্তায় তিনটি করে আদার গাছ আছে। সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে রেখেছেন এক হাজার আট শত বস্তা। সাধারণভাবে আদা চাষের চেয়ে এই পদ্ধতিতে ফলন বেশি হবে। আমি আশা করছি এই পদ্ধতিতে লাভবান হতে পারব। আমি প্রথম এই পদ্ধতিতে আদা চাষ শুর“ করেছি। এ অঞ্চলে প্রত্যেক কৃষকের সুপারি বাগান আছে। আমি সফল হলে অন্যান্য নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করব।  আমার ৩০ শতাংশ জমির সুপারির বাগানের ভিতর বস্তায় আদা চাষ করতে খরচ হয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। ৩৫ হাজার টাকার বীজ আদা কিনেছেন এবং জৈব ও রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ইত্যেমধ্যে তিনি ৩৫ হাজার টার আদা বিক্রয় করেছেন। আশা করছি ভালো লাভ পাব। এখনও তিনি তিন লক্ষ টাকার আদা বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া জানান, অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। আশা রাখছি, সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষীগণ শতভাগ সফল ও লাভবান হবেন।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি

» এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হবে : মির্জা ফখরুল

» স্বৈরাচার হাসিনা পালালেও তার লেজ রয়ে গেছে : তারেক রহমান

» বিচার যেন বিগত দিনের মতো না হয় : জয়নুল আবদিন ফারুক

» ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

» অভিষেক ছাড়তে চেয়েছিলেন অভিনয়, ফেরালেন কে?

» রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলেন সদ্য সাবেক আইজিপি ময়নুল

» ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আইনজীবী হত্যার তদন্তের নির্দেশ, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» ‌আমরা কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে দেব না : হাসনাত আব্দুল্লাহ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাতীবান্ধায় বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম

আসাদ হোসেন রিফাতঃ  লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে ভাবে সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম। বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এ নারী উদ্যোক্তা। তার ই”ছা সুপারির বাগানে বস্তায় আদা চাষে নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন। তাকে দেখে এখন অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
আদা একটি লাভজনক চাষাবাদ। সঠিক পরিকল্পনায় চাষাবাদ করলে ২ থেকে ৩ গুণ লাভ হতে পারে। পাশাপাশি ছায়া জমি বা যে জমিতে অন্য ফসল হয় না, সেই জমিতেও আদা চাষ করা সম্ভব। বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ কৃষকের কাছে একটি নতুন ধারণা। এভাবে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি বিভাগ। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ যেমন চাহিদা মেটাতে পারবে, একইভাবে কৃষকও লাভবান হবেন।
ময়না বেগম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী (ভারত-বাংলাদেশ বিনিময়কৃত,সিটমহল) এলাকার আজম আলী এর স্ত্রী। সরজমিনে মঙ্গলবার তিনি বলেন, আমি আনসার ভিডিপি’র মৌলিক প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করি সেখানে একদিন কৃষি অফিসার প্রশিক্ষন দেন সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায়। আমার বাগানে অনেক ফাঁকা জায়গা আছে, এগুলো অব্যবহৃতই থাকে। এই ফাঁকা জায়গা ব্যবহারের চিন্তা থেকে অবসর সময়ে বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে বাড়তি কোনো ফসল ফলানো যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। এক পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেই। পরে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৩০ শতক জমিতে বস্তায় আদা চাষ শুর“ করি। এখন পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে আদা চাষে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন। তিনি আরো বলেন, আদা চাষে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার এবং দানাদার কীটনাশক বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বস্তায় ভরেছেন। প্রত্যক বস্তায় তিনটি করে আদার গাছ আছে। সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে রেখেছেন এক হাজার আট শত বস্তা। সাধারণভাবে আদা চাষের চেয়ে এই পদ্ধতিতে ফলন বেশি হবে। আমি আশা করছি এই পদ্ধতিতে লাভবান হতে পারব। আমি প্রথম এই পদ্ধতিতে আদা চাষ শুর“ করেছি। এ অঞ্চলে প্রত্যেক কৃষকের সুপারি বাগান আছে। আমি সফল হলে অন্যান্য নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করব।  আমার ৩০ শতাংশ জমির সুপারির বাগানের ভিতর বস্তায় আদা চাষ করতে খরচ হয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। ৩৫ হাজার টাকার বীজ আদা কিনেছেন এবং জৈব ও রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ইত্যেমধ্যে তিনি ৩৫ হাজার টার আদা বিক্রয় করেছেন। আশা করছি ভালো লাভ পাব। এখনও তিনি তিন লক্ষ টাকার আদা বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া জানান, অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। আশা রাখছি, সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষীগণ শতভাগ সফল ও লাভবান হবেন।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com