টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল যতটা শক্তিশালী, ওয়ানডেতে ঠিক ততটাই যেন দুর্বল। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডের আগে জয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্যারিবীয় অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডই যেমন বলে দিয়েছিলেন, পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করাই তাদের লক্ষ্য।
এমন ডিফেন্সিভ মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামা দলটি আসলেই ৫০ ওভার খেলতে পারেনি। আহমেদাবাদে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ১৭৬ রানে গুটিয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা। যে রান ভারত পার করে ফেলেছে ২৮ ওভারেই, ৬ উইকেট হাতে রেখে।
ভারতের এটি ছিল ওয়ানডেতে হাজারতম ম্যাচ। বিশ্বের প্রথম দল হিসেবে এমন মাইলফলকে পা রাখা ভারত সহজ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে।
১৭৭ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইশান কিশানকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের ভিত গড়ে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ১৩ ওভারের ওপেনিং জুটিতে তারা তোলেন ৮৪ রান।
৫১ বলে ১০ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে রোহিত সাজঘরের পথ ধরেন। এরপর দ্রুত বেশ কয়েকটি (৩২ রানে ৪টি) উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। বিরাট কোহলি করেন মাত্র ৮, রিশাভ পান্ত ১১। ইশান কিশানের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান।
তবে লক্ষ্য ছোট হওয়ায় বড় কোনো বিপদ হয়নি। পঞ্চম উইকেটে ৬৩ বলে ৬২ রানের জুটিতে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন সূর্যকুমার যাদব আর দীপক হুদা। সূর্য ৩৬ বলে ৩৪ আর হুদা ৩২ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ইনিংসের ৬.১ ওভার বাকি থাকতেই ১৭৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল টস হেরে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ২৩ ওভারের মধ্যে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর হাল ধরেছিলেন জেসন হোল্ডার ও ফাবিয়ান অ্যালেন। নয়তো আরও আগেই গুটিয়ে যেতো ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাজঘরে ফেরেন ৮ রান করা শাই হোপ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩১ রান যোগ করেন ব্রেন্ডন কিং ও ড্যারেন ব্রাভো। দলীয় ৪৪ রানে কিং (১৩) ও ৪৫ রানে আউট হন ব্রাভো (১৮)। একই অবস্থা হয় শামার ব্রুকস (১২) এবং নিকোলাস পুরানের (১৮)।
রানের খাতাই খুলতে পারেননি অধিনায়ক পোলার্ড। ইয়ুজভেন্দ্র চাহালের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে নিজের স্ট্যাম্প হারিয়েছেন এ মারকুটে অলরাউন্ডার। রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হয়েছেন আকিল হোসেনও। তার বিদায়েই ২২.৫ ওভারে ৭ উইকেটে ৭৯ রানের দলে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেখান থেকে অষ্টম উইকেট জুটিতে ৭৮ রান যোগ করেন হোল্ডার ও অ্যালেন। ইনিংসের ৩৮তম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ২ চারের মারে ৪৩ বলে ২৯ রান করেন অ্যালেন। অন্যপ্রান্তে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি তুলে নেন হোল্ডার। তার ব্যাটেই দুইশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছিল সফরকারিরা।
কিন্তু ৪১তম ওভারে প্রাসিদ কৃষ্ণার হালকা লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা হোল্ডার। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪টি ছক্কার মারে ৫৭ রানের ইনিংস। শেষ দিকে আলজারি জোসেফ একটি করে চার-ছয়ের মারে ১৩ রান করলে ১৭৬ রান পর্যন্ত যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
ভারতের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছিলেন লেগস্পিনার চাহাল। এছাড়া ওয়াশিংটন সুন্দর ৩, প্রাসিদ কৃষ্ণা ২ ও মোহাম্মদ সিরাজের শিকার ১টি উইকেট। সাত ওভার হাত ঘুরিয়ে উইকেটের দেখা পাননি শার্দুল ঠাকুর।