হাঁপানির কারণ ও প্রতিকার

ফাইল ছবি

অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন :শ্বাসকষ্টজনিত কারণে সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির সৃষ্টি হয়ে থাকে। হাঁপানি মানুষের দেহের এক অসহনীয় ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। আর এই শ্বাসকষ্টের উপদ্রব হয় নানা রকম অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী এলার্জনের কারণে। এলার্জেন হচ্ছে, ধুলোবালি, ফুলের রেণু, মাইটের মল, পরিবেশের ধুলা, পোষা প্রাণীর লোম ইত্যাদি। অ্যালার্জিজনিত হাঁপানির একটি প্রধান কারণ হচ্ছে ধুলো। বাসাবাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা ধুলোবালি, অফিসের খাতাপত্র বা ফাইলে জমে থাকা ধুলো এবং রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত যে ধুলো উড়ছে তা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রধান উদ্রেগকারী। ধুলোবালি মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অন্য সব এলার্জেনের চেয়ে ধুলো খুব সহজে নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। ফলে খুব দ্রুত সর্দি-কাশি হয় এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের বা সব জায়গায় ধুলোই যে হাঁপানি বা অ্যাজমার জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। ঘরে বা অফিসে জমে থাকা ধুলো রাস্তার ধুলোর চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। রাস্তার ধুলোতে থাকে অজৈব পদার্থ যাতে হাঁপানি, অ্যাজমা, সর্দি, কাশি, হাঁচি বা শ্বাসকষ্টের তেমন কষ্ট হয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইটের কারণেই প্রধানত ধুলোবালি অ্যাজমা রোগীদের জন্য বিপজ্জনক। এটি হচ্ছে এক প্রকার অর্থোপড জীব। এই পোকা এত ছোট যে খালি চোখে দেখা যায় না। আর্দ্রতাপূর্ব আবহাওয়া মাইট বড় হওয়া এবং বংশবৃদ্ধির যথোপযুক্ত পরিবেশ। আর এর বাসস্থান হচ্ছে মানুষের ব্যবহৃত বিছানা, বালিশ, কার্পেট। মাইটের শরীর থেকে নির্গত মল, লালা, রস ধুলার সঙ্গে মিশে মানুষের শ্বাসের সঙ্গে দেহে প্রবেশ করে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে যা কিনা পরে হাঁপানিতে রূপ নেয়। এ কারণে ধুলাজনিত অ্যালার্জির কারণে অ্যাজমা রোগীর পরিমাণ বেশি। গ্রামের তুলনায় শহরের বেশির ভাগ লোক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যাদের ধুলোর কারণে শ্বাসকষ্ট অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়, তাদের কতগুলো বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে- এমন পরিবেশে চলা যাবে না যেখানে ধূলোর পরিমাণ বেশি। *ঘর পরিষ্কার এবং বিছানাপত্র ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। *মাইট বেড়ে উঠার উপযুক্ত পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। *অ্যালার্জি প্রতিরোধক টিকা ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা। ইমিউনোথেরাপি হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ যা কিনা দেহের ভিতরে অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।  সূূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জামায়াত আমিরের সঙ্গে পাকিস্তান হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

» নতুন সরকারের মন্ত্রীদের জন্য কোনো গাড়ি কেনা হচ্ছে না: অর্থ উপদেষ্টা

» বাড়ল স্বর্ণের দাম

» মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব বাতিল

» বিদ্যুৎকেন্দ্রে যান্ত্রিক গোলযোগ, দেশব্যাপী লোডশেডিং

» বুধবার ঢাবির সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ

» আপত্তিকর ছবি ভাইরাল, আদালতে ঐশ্বরিয়া

» ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

» মধুর ক্যান্টিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল প্যানেল

» কর্মীদের সুরক্ষায় গার্ডিয়ানের সাথে ব্যাংক এশিয়ার পার্টনারশিপ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাঁপানির কারণ ও প্রতিকার

ফাইল ছবি

অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন :শ্বাসকষ্টজনিত কারণে সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির সৃষ্টি হয়ে থাকে। হাঁপানি মানুষের দেহের এক অসহনীয় ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। আর এই শ্বাসকষ্টের উপদ্রব হয় নানা রকম অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী এলার্জনের কারণে। এলার্জেন হচ্ছে, ধুলোবালি, ফুলের রেণু, মাইটের মল, পরিবেশের ধুলা, পোষা প্রাণীর লোম ইত্যাদি। অ্যালার্জিজনিত হাঁপানির একটি প্রধান কারণ হচ্ছে ধুলো। বাসাবাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা ধুলোবালি, অফিসের খাতাপত্র বা ফাইলে জমে থাকা ধুলো এবং রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত যে ধুলো উড়ছে তা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রধান উদ্রেগকারী। ধুলোবালি মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অন্য সব এলার্জেনের চেয়ে ধুলো খুব সহজে নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। ফলে খুব দ্রুত সর্দি-কাশি হয় এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের বা সব জায়গায় ধুলোই যে হাঁপানি বা অ্যাজমার জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। ঘরে বা অফিসে জমে থাকা ধুলো রাস্তার ধুলোর চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। রাস্তার ধুলোতে থাকে অজৈব পদার্থ যাতে হাঁপানি, অ্যাজমা, সর্দি, কাশি, হাঁচি বা শ্বাসকষ্টের তেমন কষ্ট হয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইটের কারণেই প্রধানত ধুলোবালি অ্যাজমা রোগীদের জন্য বিপজ্জনক। এটি হচ্ছে এক প্রকার অর্থোপড জীব। এই পোকা এত ছোট যে খালি চোখে দেখা যায় না। আর্দ্রতাপূর্ব আবহাওয়া মাইট বড় হওয়া এবং বংশবৃদ্ধির যথোপযুক্ত পরিবেশ। আর এর বাসস্থান হচ্ছে মানুষের ব্যবহৃত বিছানা, বালিশ, কার্পেট। মাইটের শরীর থেকে নির্গত মল, লালা, রস ধুলার সঙ্গে মিশে মানুষের শ্বাসের সঙ্গে দেহে প্রবেশ করে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে যা কিনা পরে হাঁপানিতে রূপ নেয়। এ কারণে ধুলাজনিত অ্যালার্জির কারণে অ্যাজমা রোগীর পরিমাণ বেশি। গ্রামের তুলনায় শহরের বেশির ভাগ লোক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যাদের ধুলোর কারণে শ্বাসকষ্ট অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়, তাদের কতগুলো বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে- এমন পরিবেশে চলা যাবে না যেখানে ধূলোর পরিমাণ বেশি। *ঘর পরিষ্কার এবং বিছানাপত্র ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। *মাইট বেড়ে উঠার উপযুক্ত পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। *অ্যালার্জি প্রতিরোধক টিকা ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা। ইমিউনোথেরাপি হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ যা কিনা দেহের ভিতরে অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।  সূূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com