সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ওলিকুল শিরোমণি হজরত শাহজালাল (রহ.) এর ৭০৬তম ওরস মোবারক ২ দিনব্যাপী রোববার (১৮ মে) সকাল থেকে শুরু হয়েছে। শেষ হবে আজ সোমবার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্ত ও আশেকানদের ঢল নেমেছে পুণ্য ভূমি সিলেটে।
এ উপলক্ষে জেলা ও টুরিস্ট পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা।
প্রতি বছর আরবি মাসের ১৯ ও ২০ জিলক্বদ ওরস মোবারক অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে মাজারে গিলাফ প্রদান আগত ভক্ত ও আশেকানরা গিলাফ প্রদান করেছেন।
রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভক্ত-আশেকানরা বলেন, হজরত শাহজালালের (রহ.) টানে প্রতিবছর শত কষ্ট স্বীকার করেও হলেও ছুটে আসেন তারা। নিজেদের জীবনের সন্তুষ্টির পাশাপাশি ভক্তরা প্রার্থনা করেন দেশ ও দশের মঙ্গল। কেবল ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাই নয়, বিভিন্ন জাতি ধর্মের মানুষের পদচারণায় দরগাহ প্রাঙ্গণ যেন হয়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক মিলন মেলার তীর্থভূমি।
কুমিল্লা থেকে আসা আরফে রাব্বানী শাহ আবদুস সোবহান রিসার্চ সোসাইটির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতি বছর আমরা রিসার্চ সোসাইটির পক্ষ থেকে গিলাফ প্রদান করে থাকি। এর ধারাবাহিকতায় রিসার্চ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন সাবের সোবহানী আলক্বাদেরীর নেতৃত্বে আমরা ওরসে এসেছি।
কয়েকদিন ধরে ভক্ত-আশেকানদের ভিড় বেড়েই চলেছে মাজার এলাকায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওরসে শরিক হতে আসতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের অনেকেই অবস্থান করছেন মাজারের আশপাশের হোটেলগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আবাসিক হোটেলের কোনো সিট খালি নেই।
দরগাহ্ এর পাশের হোটেল আল আরবের সিনিয়র ম্যানেজার হুমায়ুন কবির নবীন জানান, দরগাহ্ পাশে ওরস শরীফ উপলক্ষে আবাসিক হোটেলের কোনো রুম খালি নেই ৪ দিন ধরে। লোকজন কোনোমতে একটি খালি রুমের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বললেও পাওয়া যায়নি।
আবার অনেকেই বাস ট্রাক নিয়ে এসেছেন, অবস্থান করছেন গাড়িতেই। ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই মাজার এলাকা মুখর হয়ে উঠেছে হাজারও লোক সমাগমে।
ওরস উপলক্ষে ভক্ত-আশেকানরা শতাধিক গরু ও খাসি এনেছেন নজরানা হিসাবে। যা দিয়ে সারাদেশ থেকে আসা ভক্ত-আশেকানদের জন্য শিরনি করা হয়। শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত জিকির ও এবাদত বন্দেগির মাধ্যমে ভক্তরা সময় অতিবাহিত করবেন।
শান্তিপূর্ণভাবে বার্ষিক এই উৎসব সম্পন্ন করতে মাজার কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি রয়েছে দরগাহর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম। দরগাহর নিজস্ব আইনশৃঙ্খলা তদারকি বাহিনীর সদস্য প্রায় ৫ শতাধিক।
হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহর সাধারণ সম্পাদক শামুন মাহমুদ খান বলেন, মাজার কমিটি সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এবার পরিবেশ অনুকূলে থাকায় ওরসকে কেন্দ্র করে ভক্ত ও আশেকানদের ভিড় লক্ষণীয়। প্রথম দিন ওরসের দিন বৃষ্টি না থাকায় শাহজালাল বাবার ওরসে ভক্ত ও আশেকানদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়। ভক্তদের আনাগোনায় দরগাহ এর আশপাশের এলাকায় তিল ধারনের জায়গা নেই।