লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি : স্যার আন্নেরা আঙ্গরে স্কুল আঙ্গরে ফিরিয়ে দিন। যমুনা নদী ভাঙ্গনের সময় আঙ্গরে স্কুল দক্ষিণ চিনাডুলি গ্রামে নিয়ে গেছে। সেখানে তিনটা স্কুল আছে। আঙ্গরে বাড়ি কাছে এহন কোন স্কুল নাই। আমরা স্কুলের অভাবে পড়বের পাইতেছিনা। আমরা পড়বের চাই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই দাবী তুলেছেন জামালপুরের ইসলামপুরের সাপধরী ইউনিয়নের উত্তর জোরডোবা গ্রামের তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
জানা গেছে, উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের উত্তর জোরডোবা গ্রামটি আজ থেকে বিশ বছর আগে যমুনা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। সে সময় যমুনা গর্ভে সম্পূর্ণরুপে বিলীন হয়ে যায় গ্রামটি। ওই সময় উত্তর জোরডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পার্শবর্তী দক্ষিণ চিনাডুলি গ্রামে স্থানান্তর করা হয়। এরপর দীর্ঘ ২০ বছরের ভাঙ্গা গড়ার এক পর্যায়ে যমুনার বুকে জেগে উঠে নতুন চর। ওই চরেই উত্তর জোরডোবা এলাকাটি সমস্ত ভূমি আবারো বিশ বছর পূর্বের অবস্থা ফিরে পায়। আবার শুরু হয়েছে নতুন করে বসতিভিটা স্থাপন ও ফসল উৎপাদন। ইতোমধ্যেই উত্তর জোড়ডোবা গ্রামে পাঁচ শতাধিক বসত ভিটা গড়ে উঠেছে। তবে এই গ্রামের তিন শতাধিক শিশুদের লেখা পড়ার জন্য নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে তিন শতাধিক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এই কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এলাকাবাসী তাদের পুরনো বিদ্যালয়টি আবারো উত্তর জোরডোবা গ্রামে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন।
এলাবাসীর দাবীর মুখে সোমবার দুপুরে উত্তর জোরডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গৃহটির বর্তমান ও সাবেক অবস্থানের এলাকা দুটি পরিদর্শন করেন ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন । এসময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক আজম আলী ও উত্তর জোরডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম শামীম।
পরিদর্শন কালে স্থানীয় জনতা উত্তর জোরডোবা গ্রামে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করেন। সমাজ সেবক নায়েব আলী নবাবের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন,সাপধরী ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহ আলম মন্ডল, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিল্লুর রহমান ও বিএনপির সাবেক সভাপতি সাংবাদিক আজিজুর রহমান চৌধুরী।
এ সময় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, উত্তর জোরডোবা গ্রামের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধের জন্য উত্তর জোরডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দক্ষিণ চিনাডুলি গ্রাম থেকে স্থানান্তর করে উত্তর জোরডোবায় পূন:স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।