স্বাভাবিক প্রসবে ৩৩ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন

প্রতীকী ছবি

 

সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফর উইমেনস অ্যান্ড চিলড্রেনস হেলথ রিসার্চ এর আওতায় “প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রফিল্যাক্সিস ব্যবহার (এ-প্লাস)” নামে একটি বহুদেশীয় গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক এর দুই-গ্রাম ওরাল ডোজ গ্রহণ করলে মায়েদের সেপসিস বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৩% কমে যায়।

 

সেপসিস তখনই হয় যখন শরীর কোন একটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠে। এর ফলে মানবদেহের এক বা একাধিক অঙ্গ অকেজো হয় যেতে পারে এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই গবেষণাটি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।

 

এ-প্লাস গবেষণাটি সাতটি দেশের ২৯,২৭৮ জন গর্ভবতী নারীদের উপর করা হয়। দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, কঙ্গো, গুয়াতেমালা, ভারত, কেনিয়া, পাকিস্তান এবং জাম্বিয়া। সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত এসকল গর্ভবতী নারীদের দুটি ভাগে বিভক্ত করে একটি গ্রুপকে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও অন্য গ্রুপটিকে প্লাসিবো (মূল ঔষধের মতই দেখতে, কিন্তু এতে স্টাডি ড্রাগের উপাদান থাকে না) দেওয়া হয়। প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রুপে মাতৃকালীন সেপসিস বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৩% কম দেখা যায়।

গবেষণার বাংলাদেশ সাইটের সহ-নেতৃত্বে ছিলেন ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. রাশিদুল হক এবং আইসিডিডিআর,বি-র অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট এসকে মাসুম বিল্লাহ এবং আমেরিকার ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. উইলিয়াম পেট্রি।

 

গবেষণার প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ড. রাশিদুল হক বলেন, বাংলাদেশে যেখানে প্রায় প্রতি তিনটি প্রসবের মধ্যে দুটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়, সেখানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রসবের সময় দেওয়া দুই-গ্রাম অ্যাজিথ্রোমাইসিনের একক ডোজ অনেকের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি আশা করেন যে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী এবং নীতিনির্ধারকরা স্বাভাবিক প্রসবের সময় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করবেন।

এনআইএইচ-এর ইউনিস কেনেডি শ্রীভার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ও গবেষণাটির প্রাথমিক অনুদান প্রদানকারী ডায়ানা ডব্লিউ বিয়াঞ্চি, এম.ডি, বলেন, “গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে একটি নিরাপদ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক মাতৃত্বকালীন সেপসিস এবং মাতৃ মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।”

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা হাসনাতের

» আমরা যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী দল আছি, তারা যেন ঐক্য ধরে রাখি: সারজিস

» সরকারের ইশারাতেই আবদুল হামিদ দেশ ছাড়েন : ভিপি নুর

» পলাশ থানা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আলম মোল্লা

» ভোটের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই: মির্জা ফখরুল

» রাষ্ট্রপতির দেশ ত্যাগের দায় উপদেষ্টাদের নিতে হবে- ওসমান হাদী

» আমাদের লড়াইয়ের মূল বিষয় গণতন্ত্রের সংস্কার, যা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়ছি :মির্জা ফখরুল

» ৯ মাস পরে আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা : সারজিস

» দলের নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে এনসিপি, জানালেন নাহিদ ইসলাম

» জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

স্বাভাবিক প্রসবে ৩৩ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন

প্রতীকী ছবি

 

সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফর উইমেনস অ্যান্ড চিলড্রেনস হেলথ রিসার্চ এর আওতায় “প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রফিল্যাক্সিস ব্যবহার (এ-প্লাস)” নামে একটি বহুদেশীয় গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক এর দুই-গ্রাম ওরাল ডোজ গ্রহণ করলে মায়েদের সেপসিস বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৩% কমে যায়।

 

সেপসিস তখনই হয় যখন শরীর কোন একটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠে। এর ফলে মানবদেহের এক বা একাধিক অঙ্গ অকেজো হয় যেতে পারে এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই গবেষণাটি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।

 

এ-প্লাস গবেষণাটি সাতটি দেশের ২৯,২৭৮ জন গর্ভবতী নারীদের উপর করা হয়। দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, কঙ্গো, গুয়াতেমালা, ভারত, কেনিয়া, পাকিস্তান এবং জাম্বিয়া। সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত এসকল গর্ভবতী নারীদের দুটি ভাগে বিভক্ত করে একটি গ্রুপকে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও অন্য গ্রুপটিকে প্লাসিবো (মূল ঔষধের মতই দেখতে, কিন্তু এতে স্টাডি ড্রাগের উপাদান থাকে না) দেওয়া হয়। প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রুপে মাতৃকালীন সেপসিস বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৩% কম দেখা যায়।

গবেষণার বাংলাদেশ সাইটের সহ-নেতৃত্বে ছিলেন ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. রাশিদুল হক এবং আইসিডিডিআর,বি-র অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট এসকে মাসুম বিল্লাহ এবং আমেরিকার ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. উইলিয়াম পেট্রি।

 

গবেষণার প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ড. রাশিদুল হক বলেন, বাংলাদেশে যেখানে প্রায় প্রতি তিনটি প্রসবের মধ্যে দুটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়, সেখানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রসবের সময় দেওয়া দুই-গ্রাম অ্যাজিথ্রোমাইসিনের একক ডোজ অনেকের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি আশা করেন যে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী এবং নীতিনির্ধারকরা স্বাভাবিক প্রসবের সময় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করবেন।

এনআইএইচ-এর ইউনিস কেনেডি শ্রীভার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ও গবেষণাটির প্রাথমিক অনুদান প্রদানকারী ডায়ানা ডব্লিউ বিয়াঞ্চি, এম.ডি, বলেন, “গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে একটি নিরাপদ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক মাতৃত্বকালীন সেপসিস এবং মাতৃ মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।”

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com