সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ৫ আগস্টের পরে দেশ নতুন করে গঠনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে না লাগাতে পারলে আবারও ‘যেই লাউ, সেই কদু’ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন- যে জাতি নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন না ঘটায়, আমি ঘটাই না। আমরা যেন আর কেউ চাঁদাবাজদের সহযোগী না হই, খুনিদের সহযোগী না হই, আয়নাঘরদের সহযোগী না হই, টাকা পাচারকারীদের সহযোগী না হই। বাংলার জমিনকে চাঁদাবাজমুক্ত ঘোষণা করতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
রেজাউল করীম বলেন, ৫ আগস্ট খুনি-ফ্যাসিস্ট হাসিনা বুঝতেও পারিনি তার দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। চাঁদাবাজ, খুনি ও স্বার্থান্বেষী মহলকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- বাংলাদেশের মানুষ, ইসলাম প্রেমী মানুষ এবং দেশপ্রেমিক মানুষ সর্বত্র ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে দেশ গঠনের যে ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, তা নষ্ট করতে চায় স্বার্থান্বেষী মহল। আমরা দেশপ্রেমিক সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ব। দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। চাঁদাবাজ, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করতে হবে।
দেশের নীতি-নৈতিকতা ও ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাঠ যদি ফাঁকা থাকে, আগাছা জন্মাবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, যাতে আর কেউ বাংলাদেশের সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যার মতো ঘটনা ঘটাতে না পারে। মায়ের কলিজা ফাঁটা চিৎকার, কান্না আর শুনতে মন চায় না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৮৭ সালে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি এমপিও সংসদে যায়নি, কারণ তারা কখনো খুনি, চাঁদাবাজ ও টাকা পাচারকারীদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হননি।
চরমোনাই পীর বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন করতে লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছিল, পঙ্গু হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর যে তিনটি স্লোগান ছিল- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ৫৩ বছরে যারা দেশ পরিচালনা করেছেন, তাদের মাধ্যমে আমরা কী পেয়েছি? চোরের তালিকায় বাংলাদেশকে পাঁচবার বিশ্বের শীর্ষে উঠতে হয়েছে। ন্যায়ের পক্ষে আওয়াজ তুলতে গিয়ে শত শত তরুণকে গুলি করে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে, হাজারো মায়ের কোলে সন্তান হারিয়েছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ৬২০টি বাড়ির খোঁজ মিলেছে, ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকার এ বাড়িগুলো এই সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাপের? আপনার আমার কষ্টে অর্জিত টাকার। যা জনগণের ট্যাক্সের টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দেশের ভেতরে তৈরি হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর নির্যাতন কেন্দ্র ‘আয়নাঘর’। মানুষের পশম দাঁড়িয়ে যায় এসব শুনে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন নগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব ও মহানগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইন।