কবি বেগম সুফিয়া কামাল তার কাব্য প্রতিভা ও কর্মগুণে চিরকাল বেঁচে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, মহীয়সী এই নারীর জীবনাদর্শ ও সাহিত্যকর্ম একটি বৈষম্যহীন এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আজ (২০ নভেম্বর) সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
আবদুল হামিদ বলেন, গণতন্ত্র, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামালের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় যোদ্ধা। তার জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ যখন একেবারে সীমিত তখন তিনি নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং কবিতা চর্চা শুরু করেন। প্রাঞ্জল ভাষায় ও ব্যঞ্জনাময় ছন্দে তার কবিতায় ফুটে উঠেছে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের সার্বিক চিত্র। তিনি নারী সমাজকে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। মহান ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার, মুক্তিযুদ্ধসহ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলনে তিনি আমৃত্যু সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তিনি ছিলেন তার অন্যতম উদ্যোক্তা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কবি সুফিয়া কামাল পিছিয়ে পড়া নারী সমাজের শিক্ষা ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেছিলেন এবং গড়ে তোলেন ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ’। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অবদানের জন্য তাকে ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।