এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে হাট-বাজারে শাপলা বিক্রি করে কোনোমতে চলছে দিনমজুর হানিফ শেখের (৪৫) সংসার। বাড়ি থেকে ভোর ৬টায় বের হয়ে ৯ কিলোমিটার দূরত্বে বিল থেকে শাপলা তুলে এনে গ্রামে, হাট-বাজারে দৈনন্দিন বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোদিন দুমুঠো খাবার জোটে আবার কোনো কোনো দিন অভুক্তও থাকতে হয়। সরকারিভাবে কোনো সহায়তার আওতায় নেই এ পরিবারটি বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি চালের কার্ড, টিসিবি, ১৫ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি চালের সুবিধা ভোগীর তালিকায়ও নাম নেই তার।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের তেলিগাতী গ্রামের দিনমজুর হতদরিদ্র হানিফ শেখ বলেন, জনপ্রতিনিধিদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধার তালিকায় নাম নেই। এ কথাগুলো বলতে গিয়ে দু’চোখ থেকে অশ্রু ঝরে দিনমজুর হানিফ শেখের। কষ্ট করে
ভোর ৬টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে দূরবর্তী দেবরাজ গ্রামের বিল থেকে বেলা ৩টায় শাপলা তুলে এনে ভ্যানে করে নারকেলবাড়িয়া, চিংড়াখালী, দৈবজ্ঞহাটী ও পাশ্ববর্তী জিয়ানগর উপজেলার চন্ডিপুরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ৫ বছর ধরে এ শাপলা বিক্রি করেন তিনি। প্রতি আঁটি শাপলা বিক্রি করেন ২০ টাকা দরে, শেষ বাজারে ১৫ টাকা দরেও বিক্রি করতে হয়। এ শাপলা বিক্রি করে বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত ১০টাও বেজে যায়। পৈত্রিক সম্পত্তি শুধু ভিটেমাটি মাথা গোজার ঠাঁই একখানা বসতঘর রয়েছে। মাঠে কোনো বিলান জমি নাই। শাপলা তুলে বিক্রি করতে পারলে সেদিন ঘরে বাজার করা সম্ভব হয়, নতুবা সংসারের বাজার হয় না। পরিবারে স্ত্রী ও ২ ছেলে নিয়ে ৪ জনের সংসার। এরপর ছোট ছেলের লেখাপড়ার খরছ জোগাতে হয় এ থেকে। হতদরিদ্র হানিফ শেখের সংসার চালাতে এখন খুবই কষ্ট হয়। তিনি সরকারের খাদ্য সহায়তার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি দাবি জানান।