ছবি সংগৃহীত
বহু বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের ১২তম বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
আজ সন্ধ্যায় রাজধানী ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। এর আগে সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হওয়ার পর মামলাগুলোর কী হবে? জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি বলেন, এটা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। বিগত সময়ে নানা কালো আইন দিয়ে মানুষের মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। যেমন কোনো ব্যক্তি বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে নিয়ে আপনি কিছু লিখেছেন, সেজন্য আপনার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে এবং সাত বছরের সাজা হয়ে গেছে। এসব মামলা বাতিল করা হবে। অর্থাৎ মত প্রকাশে স্বাধীনতা সংক্রান্ত যেসব মামলা রয়েছে সেগুলোও বাতিল করা হবে। অন্যান্য মামলা যেমন পর্নোগ্রাফি, মেয়েদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে; এসব আইন অনুযায়ী চলবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, গত বছর পতিত স্বৈরাচার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে নতুন বোতলে এনে নাম দিয়েছিল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। কিন্তু, উদ্দেশ্য একই ছিল। উদ্দেশ্য ছিল মানুষের কণ্ঠরোধ করা, দমানো। এই অ্যাক্টের মাধ্যমে কত মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে, এর বিশাল অংশ ছিল মাইনরিটি। তাদের জেল দেওয়া হয়েছে, হ্যারেজ করা হয়েছে। কেবিনেট নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বাতিল করার।
তিনি বলেন, এটা বাতিল করার পরে একটা বিষয় তৈরি হয় সেটা হচ্ছে, সাইবার সিকিউটির একটা উল্লেখযোগ্য জিনিস হচ্ছে আমরা যারা সাইবার সেফটির কথা বলি, আমরা প্রায় সবাই সবাই স্পেসে ব্যবহার করে, বিশেষ করে নারীদের সেফটি। আমরা যারা ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি ব্যবহার করছি, অনেকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম ব্যবহার করেন। যেগুলোর মাধ্যমে সাইবার সমস্যা তৈরি বা হ্যাকিং হয়, এগুলো নিয়ে দ্রুত একটা ল’ (আইন) করা হবে। মূল ফোকাস থাকবে আমাদের ভালনারেবল জনগোষ্ঠী বা ফিন্যান্সিয়াল ইনফ্র্যাস্টাকচার যাতে আমরা প্রটেক্ট করতে পারি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে গত ৮ আগস্ট। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদের ১১টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের সংখ্যা ৬৫টি। এর মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৯টি সিদ্ধান্ত। অনুমোদিত নীতি/নীতিমালার সংখ্যা ২টি। অনুমোদিত চুক্তি/প্রটোকল ৮টি। জারি করা অধ্যাদেশ ১০টি। সরকারের অগ্রগতির এ প্রতিবেদন উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা হয়।