সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, এ সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি কমন প্লাটফর্মে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার কিছু দলকে তাদের পোষ্য দল হিসেবে অলিখিতভাবে এক ধরনের স্বীকৃতি দিয়েছে। আর অন্য দলগুলোকে বৈরী অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
আজ রবিবার একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
রুমিন ফারহানা বলেন, বিশেষ করে যে দলটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং যারা লাগাতার ১৭ বছর নানা রকমের নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্যেও শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে এসেছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে এসেছে এই দলটিকে এই সরকার মুখোমুখি দাঁড়া করানোর এক ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা দেখলাম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথমে বললেন, এই সরকার আমাদের সরকার, কোনোভাবেই এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। কিন্তু সরকার যদি নিজেই নিজেকে ব্যর্থ করে আমরা কী করতে পারি? আমার মনে হয় সরকার যেন নিজেই নিজেকে ব্যর্থ করার দিকে যাচ্ছে।
প্রত্যাশা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্তিটা কম মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের এবং দেশের মানুষের বিরাট প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আমরা দেখছি অন্তর্বর্তী সরকারের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তিটা খুবই সামান্য। হাসিনার পতনের পর মানুষ আশা করেছিল আওয়ামী লীগের মূল আসামিরা বিচারের মুখোমুখি হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই সরকার কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি, বরং তারা নিরাপদে দেশ ছেড়ে চলে গেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা, তাদের কারাগারে নেওয়া হচ্ছে বা বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। কিন্তু শত শত হত্যাকাণ্ডের, গুম-খুন-অবিচারের মূল নির্দেশদাতা, যারা এসব অপরাধ তত্ত্বাবধান করেছিল তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
করিডর প্রসঙ্গ টেনে সরকারের সমালোচনা করে রুমিন বলেন, যে সরকারের কাজ কেবল প্রতিদিনের নির্বাহী কাজগুলো সম্পাদন করা, তারা কীভাবে করিডর দেওয়ার মতো একটি ভীষণ রকমের রাজনৈতিক ও দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে যুক্ত কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় তিনি বলেন, সরকার এই সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টভাবে রয়েছে, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা কোনো ব্যক্তি কোনোভাবেই এমপি-মন্ত্রী হতে পারবেন না। আপনাকে কেবল বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। অথচ এই সরকারের বেশিরভাগ উপদেষ্টার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। সুতরাং তাদের হাতে দেশ কতটা নিরাপদ; আমি সেই প্রশ্ন রাখতে চাই।
সরকার এখনো রোডম্যাপ দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সরকার ৯ মাসে কোনো নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়নি। এমনকি ডিসেম্বর থেকে জুন—এই অর্ধবছরের মতো বিশাল সময়ের মধ্যে নির্বাচন যে কোনো সময় হতে পারে, এটা বলে মানুষকে এক ধরনের ধোঁয়াশার মধ্যে রাখা হয়েছে। সুতরাং এই সরকারের খুব দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে অন্তত আমি মনে করি না।