সবজির দাম কিছুটা কম, মাছ-মাংস আগের মতোই চড়া

বাজারে শীতকালীন সবজির দাম অন্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম। তবে মাছ-মাংসের মূল্য আগের মতোই চড়া। ক্রেতাদের অভিযোগ, মাছ-মাংসের বাজার দিন দিন নিম্ন-মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, শীতসহ নানা কারণে বাজারে ক্রেতা কম। ফলে, ব্যবসাও কমে গেছে।

 

রাজধানীর খিলগাঁও বাজার ঘুরে জানা গেছে, পাঙাশ ছাড়া বাজারে ২৫০ টাকার নিচে কোনো মাছ বিক্রি হচ্ছে না। আর সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। এ ক্ষেত্রে বাজারে শিং মাছ ৩ থেকে ৪ শত টাকা। পাবদা মাছ ৪০০ টাকা। রুই ৩০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা কালিবোস ২৫০ টাকা। টাকি মাছ ৩ শত টাকা, ছোট ৫ মিশালী মাছ ২৫০ টাকা। কই ২ শত টাকা, পাঙাশ ১৬০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০ টাকা, বাঘা মাছ ৯০০ টাকা কেজি, বাইং (বাইন) মাছ কেজি ৭৫০ টাকা, চিতল সাড়ে ৫০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ টাকা।

এছাড়ও বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়, খিরাই ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ১৫০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, আলু ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুল কপি পিস ৩৫ টাকা, বাঁধা কপি ৩০ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। গোল বেগুন ৭০ টাকা কেজি, আর লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বরবটি কেজি প্রতি ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

মাছ ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ বলেন, শীতের কারণে বাজারে মানুষ নেই। আর যারা আছে তারাও বাজারে দ্রব্যের দামের ঊর্ধ্বগতি জেনে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও ফুটপাতের দোকানের কারণে বাজারে ক্রেতা কম।

 

তিনি আরও বলেন, ফুটপাতে ও ভ্যানের বিক্রেতাদের তো দোকান ভাড়া, কারেন্ট বিল ও অন্যান্য খরচ লাগে না। তাদের শুধু চাঁদা দিলেই হয়ে যায়। ফলে আমাদের তুলনায় তারা একটু কম দামে বিক্রি করতে পারে। ফলে, ক্রেতারা সেই দিকে চলে যায়।

আরেক মাছ ব্যবসায়ী বাবুল জানান, বিক্রি খারাপ না মোটামুটি হয়। আমাদের কিনতে হয় বেশি দামে, ফলে বিক্রি করতে হয় বেশি দামে। যার কারণে আগের মতো মানুষ মাছ-মাংস কিনতে পারে না। এখন মাছের মধ্য পাঙাশ ও বিদেশি কই মাছের চাহিদা একটু বেশি। এই মাছগুলোর দাম অন্যগুলোর তুলনায় কম।

 

শীতকালীন বাজারে মাংসের মধ্যে হাঁসের চাহিদা একটু বেশি। খিলগাঁও বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, শীতকালে মুরগির তুলনায় হাঁস একটু বেশি বিক্রি হয়। অন্যদিকে সোনালী কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। বয়লার মুরগি কেজি ১৬০ টাকা। আর গরু মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

 

হাঁস ও মুরগির ব্যবসায়ী আলাল হোসেন জানান, হাঁসের পিস ও কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। হাঁসের কেজি ৪০০ থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত আছে। এটা হাঁসের ওজন ও জাতের ভিন্নতার ওপর নির্ভর করে।

 

খিলগাঁও বাজারে মাছ ক্রয় করতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, এই দেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সেটা আর কমে না। বরং দিন দিন বাড়তে থাকে। কিন্তু আমাদের আয় তো সেভাবে বাড়ে না। ফলে, আয়ের সঙ্গে মিল রেখে চলতে গিয়ে মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে দিতে হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, আগে সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবার ইলিশ বা মাংস খাওয়া হতো। এখন সেটা মাসে একবার বা দুইবারে বেশি সম্ভব হয় না। আজকে মাসের শুরু প্রথম শুক্রবার। অফিসের বেতন হয়েছে, তাই শখ করে ১২ শত টাকা দিয়ে একটা ইলিশ ক্রয় করেছি। কিছু সবজি কিনে বাড়ি ফিরছি। আর অন্য মাছ কেনার মতো সামর্থ্য নেই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মিটফোর্ডের ঘটনায় তাঁবেদার শক্তির ধারকবাহক জড়িত : রিজভী

» মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা : দুই ভাই রিমান্ডে

» সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরির নির্দেশ

» অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৪৯৬ জন অপরাধী গ্রেফতার

» রাকিব হত্যা মামলায় কামরুল-মানিক নতুন মামলায় গ্রেফতার

» নারীকে যথাযথ সম্মান না দিয়ে দমিয়ে রাখলে রাষ্ট্র পিছিয়ে যাবে: আলী রীয়াজ

» তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি বরদাস্ত করা হবে না : ফারুক

» মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» অপরাধ বাড়ার দাবি পুরোপুরি সত্য নয়: অন্তর্বর্তী সরকার

» প্রবাসীদের সেবা নিশ্চিতে জোহর বাহরুতে চালু হচ্ছে কনস্যুলেট

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সবজির দাম কিছুটা কম, মাছ-মাংস আগের মতোই চড়া

বাজারে শীতকালীন সবজির দাম অন্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম। তবে মাছ-মাংসের মূল্য আগের মতোই চড়া। ক্রেতাদের অভিযোগ, মাছ-মাংসের বাজার দিন দিন নিম্ন-মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, শীতসহ নানা কারণে বাজারে ক্রেতা কম। ফলে, ব্যবসাও কমে গেছে।

 

রাজধানীর খিলগাঁও বাজার ঘুরে জানা গেছে, পাঙাশ ছাড়া বাজারে ২৫০ টাকার নিচে কোনো মাছ বিক্রি হচ্ছে না। আর সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। এ ক্ষেত্রে বাজারে শিং মাছ ৩ থেকে ৪ শত টাকা। পাবদা মাছ ৪০০ টাকা। রুই ৩০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা কালিবোস ২৫০ টাকা। টাকি মাছ ৩ শত টাকা, ছোট ৫ মিশালী মাছ ২৫০ টাকা। কই ২ শত টাকা, পাঙাশ ১৬০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০ টাকা, বাঘা মাছ ৯০০ টাকা কেজি, বাইং (বাইন) মাছ কেজি ৭৫০ টাকা, চিতল সাড়ে ৫০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ টাকা।

এছাড়ও বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়, খিরাই ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ১৫০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, আলু ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুল কপি পিস ৩৫ টাকা, বাঁধা কপি ৩০ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। গোল বেগুন ৭০ টাকা কেজি, আর লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বরবটি কেজি প্রতি ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

মাছ ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ বলেন, শীতের কারণে বাজারে মানুষ নেই। আর যারা আছে তারাও বাজারে দ্রব্যের দামের ঊর্ধ্বগতি জেনে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও ফুটপাতের দোকানের কারণে বাজারে ক্রেতা কম।

 

তিনি আরও বলেন, ফুটপাতে ও ভ্যানের বিক্রেতাদের তো দোকান ভাড়া, কারেন্ট বিল ও অন্যান্য খরচ লাগে না। তাদের শুধু চাঁদা দিলেই হয়ে যায়। ফলে আমাদের তুলনায় তারা একটু কম দামে বিক্রি করতে পারে। ফলে, ক্রেতারা সেই দিকে চলে যায়।

আরেক মাছ ব্যবসায়ী বাবুল জানান, বিক্রি খারাপ না মোটামুটি হয়। আমাদের কিনতে হয় বেশি দামে, ফলে বিক্রি করতে হয় বেশি দামে। যার কারণে আগের মতো মানুষ মাছ-মাংস কিনতে পারে না। এখন মাছের মধ্য পাঙাশ ও বিদেশি কই মাছের চাহিদা একটু বেশি। এই মাছগুলোর দাম অন্যগুলোর তুলনায় কম।

 

শীতকালীন বাজারে মাংসের মধ্যে হাঁসের চাহিদা একটু বেশি। খিলগাঁও বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, শীতকালে মুরগির তুলনায় হাঁস একটু বেশি বিক্রি হয়। অন্যদিকে সোনালী কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। বয়লার মুরগি কেজি ১৬০ টাকা। আর গরু মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

 

হাঁস ও মুরগির ব্যবসায়ী আলাল হোসেন জানান, হাঁসের পিস ও কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। হাঁসের কেজি ৪০০ থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত আছে। এটা হাঁসের ওজন ও জাতের ভিন্নতার ওপর নির্ভর করে।

 

খিলগাঁও বাজারে মাছ ক্রয় করতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, এই দেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সেটা আর কমে না। বরং দিন দিন বাড়তে থাকে। কিন্তু আমাদের আয় তো সেভাবে বাড়ে না। ফলে, আয়ের সঙ্গে মিল রেখে চলতে গিয়ে মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে দিতে হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, আগে সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবার ইলিশ বা মাংস খাওয়া হতো। এখন সেটা মাসে একবার বা দুইবারে বেশি সম্ভব হয় না। আজকে মাসের শুরু প্রথম শুক্রবার। অফিসের বেতন হয়েছে, তাই শখ করে ১২ শত টাকা দিয়ে একটা ইলিশ ক্রয় করেছি। কিছু সবজি কিনে বাড়ি ফিরছি। আর অন্য মাছ কেনার মতো সামর্থ্য নেই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com