সন্তানের জীবনে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব যেন না পড়ে

হাসিনা আকতার নিগার :  ‘বিচ্ছেদ’- শব্দটি যেন কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভীষণ রকমের বেদনাময়। যা জীবনের অনেক কিছু এলোমেলো করে দেয় এক নিমিষেই। বিশেষ করে পারিবারিক সম্পর্কে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব পড়ে সন্তানদের উপর। বিচ্ছেদের আগে এবং পরে সন্তান যে মানসিক যন্ত্রণাতে থাকে তা হয়তো তোয়াক্কাই করে না মা-বাবা নিজেদের ইগোর কারণে।

 

বিচ্ছেদের আগে তারা নিজেদের পারস্পরিক দোষগুলো নিয়ে করে লড়াই। যা দেখে বাচ্চারা হয় আতঙ্কগ্রস্ত। আবার বিচ্ছেদের পর দু’জনেই সন্তানদের মনে করে তাদের নিজের সম্পদ। আর তাই যে যার নিজের মত করে কাছে রাখতে চায় সন্তানকে তার কাছে। আইন আর আবেগের এ লড়াইয়ে সন্তানরা বুঝতে পারে না কে ভালো কে মন্দ। এ অবস্থায় তারা বাবা-মায়ের থেকে দূরে সরে নিজেদের মতো করে একটা মনোজগৎ তৈরি করে নেয়। যার পরিণতির ছাপ পড়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনে।

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যখন বিচ্ছেদ আসে তখন সন্তানদের বিষয়ে দু’জনকে সচেতন হবে। মনে রাখতে হবে  তাদের সম্পর্কের তিক্ততার ফলে সন্তান পরিবার সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই এ সময় সন্তানের মনোবল দৃঢ় রাখার বিষয়ে ভারতের বিশিষ্ট মনোবিদ ডা. কেদাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বাবা-মাকে কিছু বিশেষ পরামর্শ দেন-

 

১. স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যখন ডিভোর্স ছাড়া আর কোন পথ নেই অবস্থার সৃষ্টি হলে সন্তানের সাথে বিষয়টা শেয়ার করতে হবে দু’জনকে। কোন পরিস্থিতির চাপে পড়ে তারা আলাদা থাকতে হচ্ছে তা বলতে হবে। কিন্তু তাই বলে সন্তান তাদের কাছে হেলাফেলার বিষয় নয়। আর বিচ্ছেদের জন্য সন্তান দায়ী নয় এটা জানাতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় মা-বাবা সন্তানের সামনেই নিজেদের ঝগড়াতে সন্তানকে ইস্যু করে। যার নেতিবাচক প্রভাবে সন্তান অপরাধ প্রবণতাতে ভোগে।

২. একই ভাবে দু’জনকেই আশ্বস্ত করতে হবে সন্তান যার কাছেই থাকুক, থাকবে আদরে-যত্নে। কোনও ক্ষতি বা অসুবিধা তারা হতে দেবেন না। সন্তান চাইলে আলাদা করে মা-বাবার কাছেও থাকতে পারে। যদিও এ রকম ঘটনা খুব কমই ঘটে। একসঙ্গে বসতে না চাইলে আলাদাভাবে সন্তানের সঙ্গে কথা বলে নিবে মা-বাবা। কিন্তু দু’জনের বক্তব্য যেন এক থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

৩. বিচ্ছেদের কারণে পরিবারের সবার সঙ্গে এক সাথে থাকার নিয়মের ব্যতয় ঘটে সন্তানের। বাবা বা মা কে ছেড়ে একা হয়ে যাওয়ার কারণে বাচ্চাদের কিছু মানসিক সংকট দেখা দিতে পারে। কনডাক্ট ডিজ-অর্ডার, হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজ-অর্ডার, বিহেভিয়ারাল প্রবলেম (যেমন- ট্রুয়েন্সি, স্কুল রিফিউজাল, অপজিশনাল ডিফিয়েন্ট ডিজ-অর্ডার ইত্যাদি), ইমপালস কন্ট্রোল ডিজ-অর্ডার, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ-অর্ডারের মতো মনোবিকার। কনডাক্ট ডিজ-অর্ডারে শিশুর মধ্যে অপরাধমূলক কাজের প্রতি আগ্রহ দেখা দেয়। ১৮ বছরের পরেও এই স্বভাব থেকে গেলে সম্তান হয়ে ওঠে সমাজবিরোধী। হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজ-অর্ডারে শিশু অতিরিক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। আবার হয়তো একবারেই চুপ করে যায়। বিহেভিয়েরাল প্রবলেমে দেখা যায় শিশু বাড়ি থেকে পালাচ্ছে, স্কুলে যেতে চাইছে না, বড়রা যা বলছেন তার ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে। বন্ধুদের বুদ্ধিই তখন বেশি গ্রহণযোগ্য। ইমপালস কন্ট্রোল ডিজ-অর্ডারে অকারণেই বাচ্চা রেগে ওঠে। অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ-অর্ডারে ক্ষুদেরাও শুচিবাইগ্রস্ত হয়ে ওঠে বড়দের মতো।

 

এক্ষেত্রে হাল ধরতে হবে মাকে। ঠান্ডা মাথায়, সহানুভূতির সঙ্গে বোঝাতে হবে, কোনটা করা উচিত। কোনটা নয়। মা কর্মরত হলে, কাজের ফাঁকে সঙ্গ দিতে হবে। সন্তানকে বুঝতে হবে। বোঝাতে হবে, ‘বিচ্ছেদ’কে মেনে নিয়েও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। ভুলেও প্রতিপক্ষের নামে কোনও অপমানসূচক কথা বলা চলবে না। কেউ বললে তার কাছ থেকে বাচ্চাকে সরিয়ে আনতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাচ্চাকে বোঝাতে সাহায্য করবেন। নিতান্তই অপারগ হলে দ্বারস্থ হতে হবে মনোবিদের।

 

৪. বিচ্ছেদের কারণকে নিজেদের দুর্বলতা মনে করে সন্তানকে অতিরিক্ত আদর, তার বায়না আবদার মেটাতে চেষ্টা করা ভুল। তাই স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত করতে হলে- অতিরিক্ত প্রশ্রয়, আদর, শাসন কোনওটাই করবেন না। স্বাভাবিক আচরণ করুন। ঘরোয়া কাজে সন্তানকে জড়িয়ে নিন। ছোট ছোট দায়িত্ব পালন করতে দিন তাকে। আবার নতুন ভাবে সংসার করতে চাইলে সন্তানকে আগে থেকে নতুন মানুষটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে রাখুন। কারণ একটু বড় বাচ্চা চট করে নতুন কাউকে মানতে পারে না। দু’জনকে একান্তে মেলামেশার সুযোগ করে দিন। এতে বন্ডিং তৈরি হবে। আচমকা ‘নতুন বাবা, মা’য়ের মুখোমুখি দাঁড় করালে সন্তান বিব্রতবোধ করতে পারে।

 

অনেক সময় সন্তান বড় হয়ে এই দুর্ঘটনার সুযোগ নিয়ে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করতে পারে। একে বলে ম্যানুপুলেটিক বিহেভিয়ার্স। এ বিষয় থেকে রেহাই পেতে হলে বিচ্ছেদের শুরু থেকে সন্তানকে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে হবে।

 

সর্বোপরি, সাবালক হলে সন্তান অন্যপক্ষের কাছে ফিরে যেতে পারে এ বাস্তবতার সঙ্গে আপনাকেও মানিয়ে নিতে হবে।

 

সন্তানের জন্মে বাবা-মায়ের নিজেদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ঠিক একইভাবে বাবা-মায়ের প্রধান ও অন্যতম দায়িত্ব সন্তানদের সুষ্ঠু সুন্দর জীবন গড়া। তাদের ভুলে গেলে চলবে না বিচ্ছেদ নামের শব্দটি দিয়ে সবার আগে বিপর্যস্ত হয় তাদেরই সন্তানদের জীবন। তাই আইনগত ও সামাজিক অবস্থানকে বিবেচনায় রেখে সন্তানদের স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে বাবা-মাকে। কারণ তাদের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদের   দায় সন্তানদের নয়।

লেখক: কলামিস্ট     । সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৫৩ বছর পর দেশ গড়ার এক সুবর্ণ সুযোগ আমাদের এসেছে: মাসুদ সাঈদী

» নির্বাচনে যত দেরি ষড়যন্ত্র তত বাড়বে: তারেক রহমান

» অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ চারজন মাদক চোরা কারবারি আটক

» সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব, যা জানালেন বদিউল আলম

» ২ মার্চ ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান মঈন খানের

» কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়: আইজিপি

» সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের বিনিময়ে জান্নাত! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

» বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পট লোন পেলেন সিলেটের সিএমএসএমই উদ্যোক্তারা

» ‘ইউসিবি নাইট’ আয়োজনে গ্রাহক ও অংশীদারদের অব্যাহত সহযোগিতার স্বীকৃতি

» ইসলামপুর ওয়ার্ড কৃষক দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সন্তানের জীবনে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব যেন না পড়ে

হাসিনা আকতার নিগার :  ‘বিচ্ছেদ’- শব্দটি যেন কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভীষণ রকমের বেদনাময়। যা জীবনের অনেক কিছু এলোমেলো করে দেয় এক নিমিষেই। বিশেষ করে পারিবারিক সম্পর্কে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব পড়ে সন্তানদের উপর। বিচ্ছেদের আগে এবং পরে সন্তান যে মানসিক যন্ত্রণাতে থাকে তা হয়তো তোয়াক্কাই করে না মা-বাবা নিজেদের ইগোর কারণে।

 

বিচ্ছেদের আগে তারা নিজেদের পারস্পরিক দোষগুলো নিয়ে করে লড়াই। যা দেখে বাচ্চারা হয় আতঙ্কগ্রস্ত। আবার বিচ্ছেদের পর দু’জনেই সন্তানদের মনে করে তাদের নিজের সম্পদ। আর তাই যে যার নিজের মত করে কাছে রাখতে চায় সন্তানকে তার কাছে। আইন আর আবেগের এ লড়াইয়ে সন্তানরা বুঝতে পারে না কে ভালো কে মন্দ। এ অবস্থায় তারা বাবা-মায়ের থেকে দূরে সরে নিজেদের মতো করে একটা মনোজগৎ তৈরি করে নেয়। যার পরিণতির ছাপ পড়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনে।

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যখন বিচ্ছেদ আসে তখন সন্তানদের বিষয়ে দু’জনকে সচেতন হবে। মনে রাখতে হবে  তাদের সম্পর্কের তিক্ততার ফলে সন্তান পরিবার সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই এ সময় সন্তানের মনোবল দৃঢ় রাখার বিষয়ে ভারতের বিশিষ্ট মনোবিদ ডা. কেদাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বাবা-মাকে কিছু বিশেষ পরামর্শ দেন-

 

১. স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যখন ডিভোর্স ছাড়া আর কোন পথ নেই অবস্থার সৃষ্টি হলে সন্তানের সাথে বিষয়টা শেয়ার করতে হবে দু’জনকে। কোন পরিস্থিতির চাপে পড়ে তারা আলাদা থাকতে হচ্ছে তা বলতে হবে। কিন্তু তাই বলে সন্তান তাদের কাছে হেলাফেলার বিষয় নয়। আর বিচ্ছেদের জন্য সন্তান দায়ী নয় এটা জানাতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় মা-বাবা সন্তানের সামনেই নিজেদের ঝগড়াতে সন্তানকে ইস্যু করে। যার নেতিবাচক প্রভাবে সন্তান অপরাধ প্রবণতাতে ভোগে।

২. একই ভাবে দু’জনকেই আশ্বস্ত করতে হবে সন্তান যার কাছেই থাকুক, থাকবে আদরে-যত্নে। কোনও ক্ষতি বা অসুবিধা তারা হতে দেবেন না। সন্তান চাইলে আলাদা করে মা-বাবার কাছেও থাকতে পারে। যদিও এ রকম ঘটনা খুব কমই ঘটে। একসঙ্গে বসতে না চাইলে আলাদাভাবে সন্তানের সঙ্গে কথা বলে নিবে মা-বাবা। কিন্তু দু’জনের বক্তব্য যেন এক থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

৩. বিচ্ছেদের কারণে পরিবারের সবার সঙ্গে এক সাথে থাকার নিয়মের ব্যতয় ঘটে সন্তানের। বাবা বা মা কে ছেড়ে একা হয়ে যাওয়ার কারণে বাচ্চাদের কিছু মানসিক সংকট দেখা দিতে পারে। কনডাক্ট ডিজ-অর্ডার, হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজ-অর্ডার, বিহেভিয়ারাল প্রবলেম (যেমন- ট্রুয়েন্সি, স্কুল রিফিউজাল, অপজিশনাল ডিফিয়েন্ট ডিজ-অর্ডার ইত্যাদি), ইমপালস কন্ট্রোল ডিজ-অর্ডার, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ-অর্ডারের মতো মনোবিকার। কনডাক্ট ডিজ-অর্ডারে শিশুর মধ্যে অপরাধমূলক কাজের প্রতি আগ্রহ দেখা দেয়। ১৮ বছরের পরেও এই স্বভাব থেকে গেলে সম্তান হয়ে ওঠে সমাজবিরোধী। হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজ-অর্ডারে শিশু অতিরিক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। আবার হয়তো একবারেই চুপ করে যায়। বিহেভিয়েরাল প্রবলেমে দেখা যায় শিশু বাড়ি থেকে পালাচ্ছে, স্কুলে যেতে চাইছে না, বড়রা যা বলছেন তার ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে। বন্ধুদের বুদ্ধিই তখন বেশি গ্রহণযোগ্য। ইমপালস কন্ট্রোল ডিজ-অর্ডারে অকারণেই বাচ্চা রেগে ওঠে। অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ-অর্ডারে ক্ষুদেরাও শুচিবাইগ্রস্ত হয়ে ওঠে বড়দের মতো।

 

এক্ষেত্রে হাল ধরতে হবে মাকে। ঠান্ডা মাথায়, সহানুভূতির সঙ্গে বোঝাতে হবে, কোনটা করা উচিত। কোনটা নয়। মা কর্মরত হলে, কাজের ফাঁকে সঙ্গ দিতে হবে। সন্তানকে বুঝতে হবে। বোঝাতে হবে, ‘বিচ্ছেদ’কে মেনে নিয়েও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। ভুলেও প্রতিপক্ষের নামে কোনও অপমানসূচক কথা বলা চলবে না। কেউ বললে তার কাছ থেকে বাচ্চাকে সরিয়ে আনতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাচ্চাকে বোঝাতে সাহায্য করবেন। নিতান্তই অপারগ হলে দ্বারস্থ হতে হবে মনোবিদের।

 

৪. বিচ্ছেদের কারণকে নিজেদের দুর্বলতা মনে করে সন্তানকে অতিরিক্ত আদর, তার বায়না আবদার মেটাতে চেষ্টা করা ভুল। তাই স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত করতে হলে- অতিরিক্ত প্রশ্রয়, আদর, শাসন কোনওটাই করবেন না। স্বাভাবিক আচরণ করুন। ঘরোয়া কাজে সন্তানকে জড়িয়ে নিন। ছোট ছোট দায়িত্ব পালন করতে দিন তাকে। আবার নতুন ভাবে সংসার করতে চাইলে সন্তানকে আগে থেকে নতুন মানুষটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে রাখুন। কারণ একটু বড় বাচ্চা চট করে নতুন কাউকে মানতে পারে না। দু’জনকে একান্তে মেলামেশার সুযোগ করে দিন। এতে বন্ডিং তৈরি হবে। আচমকা ‘নতুন বাবা, মা’য়ের মুখোমুখি দাঁড় করালে সন্তান বিব্রতবোধ করতে পারে।

 

অনেক সময় সন্তান বড় হয়ে এই দুর্ঘটনার সুযোগ নিয়ে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করতে পারে। একে বলে ম্যানুপুলেটিক বিহেভিয়ার্স। এ বিষয় থেকে রেহাই পেতে হলে বিচ্ছেদের শুরু থেকে সন্তানকে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে হবে।

 

সর্বোপরি, সাবালক হলে সন্তান অন্যপক্ষের কাছে ফিরে যেতে পারে এ বাস্তবতার সঙ্গে আপনাকেও মানিয়ে নিতে হবে।

 

সন্তানের জন্মে বাবা-মায়ের নিজেদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ঠিক একইভাবে বাবা-মায়ের প্রধান ও অন্যতম দায়িত্ব সন্তানদের সুষ্ঠু সুন্দর জীবন গড়া। তাদের ভুলে গেলে চলবে না বিচ্ছেদ নামের শব্দটি দিয়ে সবার আগে বিপর্যস্ত হয় তাদেরই সন্তানদের জীবন। তাই আইনগত ও সামাজিক অবস্থানকে বিবেচনায় রেখে সন্তানদের স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে বাবা-মাকে। কারণ তাদের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদের   দায় সন্তানদের নয়।

লেখক: কলামিস্ট     । সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com