সংস্কৃতি চর্চা হলে তরুণরা জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়ে চলছে একইভাবে আমাদের সংস্কৃতিও বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

বুধবার  গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি। আমাদের রয়েছে হাজার বছরের বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উত্তরাধিকার। জাতির পিতার জাতীয়তাবাদী ভাবনার পুরোটা জুড়ে ছিল বাঙালি সংস্কৃতি। তাই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলন করেছিলেন। নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, আত্মমর্যাদার জন্য দেশকে স্বাধীন করেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তার জগৎজুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য ও জীবনানন্দ দাশ। বাঙালি স্বভাবজাতভাবেই সংস্কৃতিমনা।

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি আমরা বাঙালি। আমাদের দেশে কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ বাস করে। সেখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই আছে।আমরা বলি ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। কাজেই উৎসব সকলে আমরা এক হয়ে পালন করবো। ‘ ’

সকল জাতি-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বিকশিত করতে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই যে সকল ধর্ম-বর্ণ, বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি, অর্থাৎ শুধু ধর্মালম্বী না, আমাদের যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদেরও কিন্তু নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা আছে, সংস্কৃতি আছে। সেগুলো যাতে বিকশিত হয়। সেদিকে দৃষ্টি রেখে আমরা প্রত্যেকটি এলাকায় তাদের সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছি।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবহমান কাল থেকে যা চলে আসছে তা যাতে বিকশিত হতে পারে, সেজন্য আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের ঐতিহ্য, এগুলো আমরা ভুলবো না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও এগিয়ে যাবো। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি সেটাও আমরা রপ্ত করবো।

সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি এক হয়ে আমরা এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। যেখানে সকলের একটা চমৎকার মিলন কেন্দ্র হয়। … আমাদের প্রবাসীরাও এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেন।

 

অতীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বাধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ পালন করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ সাল বরণ করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি রমনা বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, যাতে আমাদের এই সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ হয়ে যায়।

 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রান্ত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

 

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান রিজভীর

» বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

» জনগণের ৭০ ভাগ পিআরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে: মতিউর রহমান আকন্দ

» বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বহু রাজনীতিবীদের শিক্ষক: মির্জা ফখরুল

» বিএনপি সেই গণতন্ত্রের কথা বলে, যে গণতন্ত্রে মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে  : ড. মঈন খান

» সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে শাপলা বিক্রি করেই চলছে দিনমজুর হানিফের সংসার, সরকারী সহায়তা বঞ্চিত!

» লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রস্তুত ৪ শত ৬৮ টি পূজা মন্ডব

» আগৈলঝাড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ ললিতা সরকার শিক্ষা ও নৃত্যকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

» ঢাকা থেকে জামালপুরের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি ওলামা পরিষদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সংস্কৃতি চর্চা হলে তরুণরা জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়ে চলছে একইভাবে আমাদের সংস্কৃতিও বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

বুধবার  গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি। আমাদের রয়েছে হাজার বছরের বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উত্তরাধিকার। জাতির পিতার জাতীয়তাবাদী ভাবনার পুরোটা জুড়ে ছিল বাঙালি সংস্কৃতি। তাই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলন করেছিলেন। নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, আত্মমর্যাদার জন্য দেশকে স্বাধীন করেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তার জগৎজুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য ও জীবনানন্দ দাশ। বাঙালি স্বভাবজাতভাবেই সংস্কৃতিমনা।

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি আমরা বাঙালি। আমাদের দেশে কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ বাস করে। সেখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই আছে।আমরা বলি ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। কাজেই উৎসব সকলে আমরা এক হয়ে পালন করবো। ‘ ’

সকল জাতি-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বিকশিত করতে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই যে সকল ধর্ম-বর্ণ, বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি, অর্থাৎ শুধু ধর্মালম্বী না, আমাদের যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদেরও কিন্তু নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা আছে, সংস্কৃতি আছে। সেগুলো যাতে বিকশিত হয়। সেদিকে দৃষ্টি রেখে আমরা প্রত্যেকটি এলাকায় তাদের সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছি।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবহমান কাল থেকে যা চলে আসছে তা যাতে বিকশিত হতে পারে, সেজন্য আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের ঐতিহ্য, এগুলো আমরা ভুলবো না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও এগিয়ে যাবো। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি সেটাও আমরা রপ্ত করবো।

সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি এক হয়ে আমরা এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। যেখানে সকলের একটা চমৎকার মিলন কেন্দ্র হয়। … আমাদের প্রবাসীরাও এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেন।

 

অতীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বাধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ পালন করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ সাল বরণ করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি রমনা বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, যাতে আমাদের এই সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ হয়ে যায়।

 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রান্ত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

 

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com