ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে

ফাইল ছবি

 

বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে।

 

রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির বেঞ্চ আজ এই রায় দেন। এর আগে, সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

 

গত ১৫ আগস্ট বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে বলেন, অনেকদিন ধরে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে রয়েছে। শুনানি হওয়া প্রয়োজন।

 

এর আগে, বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় আসলেও শুনানি হয়নি।

 

প্রসঙ্গত, দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।

 

এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়।

 

পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়। যা এখনো একই অবস্থাতেই আছে। ফলে কার্যত কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা কীভাবে নিষ্পত্তি হবে সেটি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর দলান্ধ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম কোর্টে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নজিরবিহীন আন্দোলন হয়।

 

যদিও এর আগেই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তবে মোট ৩০ বিচারপতিকে অপসারণের দাবি করে ছাত্ররা। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয়, ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত শুনানি হবে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতার রিভিউ নিয়ে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি খালেদা জিয়াকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি আলালের

» থানায় এসে কেউ যেন সেবা বঞ্চিত না হয়: ডিএমপি কমিশনার

» ফ্যাসিস্ট শক্তি বিদায় হওয়ার পর আমরা আজ কথা বলতে পারছি

» অটোরিকশা চালকদের জুরাইন রেলগেট অবরোধ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ

» মাদক মামলার ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

» বিশেষ অভিযানে ২ দিনে কিশোর গ্যাং দলের সন্দেহে ১৯ জন আটক

» পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ওয়ান শুটারগান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার

» ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: উপদেষ্টা আদিলুর রহমান

» ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি

» ভাষা সৈনিক আজিজুল জলিল আর নেই

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে

ফাইল ছবি

 

বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে।

 

রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির বেঞ্চ আজ এই রায় দেন। এর আগে, সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

 

গত ১৫ আগস্ট বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে বলেন, অনেকদিন ধরে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে রয়েছে। শুনানি হওয়া প্রয়োজন।

 

এর আগে, বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় আসলেও শুনানি হয়নি।

 

প্রসঙ্গত, দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।

 

এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়।

 

পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়। যা এখনো একই অবস্থাতেই আছে। ফলে কার্যত কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা কীভাবে নিষ্পত্তি হবে সেটি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর দলান্ধ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম কোর্টে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নজিরবিহীন আন্দোলন হয়।

 

যদিও এর আগেই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তবে মোট ৩০ বিচারপতিকে অপসারণের দাবি করে ছাত্ররা। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয়, ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত শুনানি হবে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতার রিভিউ নিয়ে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com