ফাইল ফটো
অনলাইন ডেস্ক :জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আগামীকাল রোববার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে প্রসিকিউশন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দাখিল করা হবে। অন্য দুই জন হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন।
শনিবার (৩১ মে) চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জুলাই আগস্টের হত্যাযজ্ঞের বিচার দৃশ্যমান হবে। বিচার এমনভাবে করা হবে কেউ যেন মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এর আগে গত ১২ মে শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত শেষ হয়। ওইদিন ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে নির্বিচারে ১৪শ’র বেশি মানুষ হত্যার দায় শেখ হাসিনার। তার বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার নির্দেশনা, প্ররোচনা,উসকানিসহ ৫ অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও মিলেছে একই অপরাধের প্রমাণ।
এর আগে ১২ মে জুলাই- আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই- আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই- আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা,ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।