ছবি সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
দুদু বলেন, ‘ফ্যাসিস্টকে আশ্রয় দিয়েছেন, এখন তাকে দেশে ফেরত পাঠান। তাকে রক্ষা করার মধ্য দিয়ে আপনারা গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো কাজ করতে পারবেন না। শেখ হাসিনা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত একজন খুনি। তাকে বিচারের আওতায় আনা ছাড়া বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে না।
আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে এ প্রতিবাদ সভা করে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম।
প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশকে আমরা বন্ধু হিসেবে জানি। কিন্তু সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যে কথা বললেন, আমি জানি না তার উদ্দেশ্য কী। তার দেশের নিরাপত্তা, তার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু সেটি যদি উদ্দেশ্যপূর্ণ হয়, শান্তিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশকে গাজার সঙ্গে তুলনা করা, ইসরায়েলের সঙ্গে তুলনা করা, ইউক্রেনের সঙ্গে তুলনা করা- সেটা মনে হয় তারা ঠিক করেনি। ভারতের থেকেও বাংলাদেশ অনেক দিক থেকে নিরাপদ এবং শান্তিতে রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকারকে বলবো অনতিবিলম্বে আমাদের সেনাবাহিনীকে অর্ডার দেওয়া হয় যেন তারা তৈরি থাকে। দেশবাসীকে সংগঠিত করে এ দেশের পুলিশ, বিডিআর, সেনাবাহিনী এবং জনগণ সংগঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন যেভাবে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশে স্বাধীনতা এনেছিল, তেমনিভাবে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবে। গত এক মাস আগে আমরা যেটা দেখেছি।
বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ন্যূনতম মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ আমাদের ব্যবহার করতে হবে। আমাদের সন্তানরা, আমাদের তরুণ সমাজ তাদের জীবন উৎসর্গ করে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সম্মুখে এসে গণঅভ্যুত্থান করেছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আমাদের সেটা রক্ষা করতে হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
দুদু বলেন, ‘যারা গত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্রবিরোধী ভূমিকা পালন করেছে, ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জড়িত থাকা নেতাদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। যারা বাংলাদেশের টাকা লুট ও পাচার করেছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে সব টাকা উদ্ধার করতে হবে।
বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমরা চারদিকে খেয়াল করছি, বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং দখলদারি হচ্ছে। বিএনপিকে বদনামের ভাগীদার করতে কিছু কিছু মানুষ বিএনপি এবং ছাত্রদল সেজে এগুলো করছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা যেখানেই দেখা যাবে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে। আইনের মাধ্যমে তার বিচার হবে। আমাদের মহাসচিবও একই নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান। এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইকবাল হাসান স্বপন, কৃষকদলের নেতা কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।