ছবি সংগৃহীত
প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রতি উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার কাছে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবস্থান অনেক উপরে, অনেক উচ্চতায়। আপনাদের প্রতি তার যে দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ, তার যে ভালোবাসা, এটাকে কোনো স্বীকৃতি দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না।
শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু হত্যার সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের সংগঠন প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি প্রয়াত মানু মজুমদারের স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণ সভায়টি আয়োজন করেন প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদ।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রতি শেখ হাসিনার যে দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে মানু মজুমদার সংসদ সদস্য হিসাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা তুলে ধরেছেন। প্রতীকী অর্থে মানু মজুমদার ছিলেন আপনাদের (প্রতিরোধ যোদ্ধা) প্রতিনিধি। একজন আওয়ামী লীগের নেতা হিসাবে, কর্মী হিসেবে, মানু মজুমদার সুবেদিত ছিল। তিনি ছিলেন জাতির পিতার একজন আদর্শ কর্মী। জাতির পিতাকে যখন হত্যা করা হয় তখন তিনি তার জীবনকে মৃত্যুর মুখে দাঁড় করিয়ে, আপস করেন নাই। জাতির পিতা হত্যাকারীর খুনি জিয়া-মোশতাককে নির্মূল করার জন্য অস্ত্র হাতে নিয়ে তারা প্রতিরোধ করেছিল।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে পক্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমরা কাজ করেছি। সেখানে মানু মজুমদারের ভিতরে কোন লোভ কাজ করেনি। যারা জাতির পিতাকে ভালোবেসে তাদের ভিতর কোন ষড়যন্ত্র ছিল না। বিশ্বাসঘাতকদের অবস্থান সবসময় থাকে,ষড়যন্ত্র কারীরা থাকে। জাতির পিতার আদর্শের শেখ হাসিনার নেতৃত্বের একজন বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন মানু মজুমদার।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে কেউ নাকি প্রতিবাদ করেনি, এটা ছিল নির্মম অসত্য কথা। মিথ্যা কথা। কারণ, আপনার হলেন সেই সময়ের সাহসী সন্তান। যারা প্রতিরোধ যোদ্ধা রচনা করেছিলেন। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের দুঃখের সাথে, বেদনার সাথে আপনারা প্রতিবাদের মহান দায়িত্বটি পালন করেছেন। সেই মহান দায়িত্ব পালনের জন্য আমরা সারা জীবন, যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে, যতদিন জাতির পিতার আদর্শ বিরাজমান থাকবে ততদিন প্রতিটি যোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমৃদ্ধ মানুষের হৃদয়ে জায়গা থাকবে৷ এ নিয়ে কোন সংশয় নেই। এ নিয়ে সমালোচনা করার কোন পর্যায়ে নেই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা জানি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আপনাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি নতুন করে চেতনায় সমৃদ্ধ হয়েছিল। আপনার তৎকালীন জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাকের নির্মম নির্যাতনের দিনগুলো, সামরিক জান্তার কারাগারে রিমান্ডের নামে মাসের পর মাস কষ্ট করেছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন। আপনাদেরকে যারা দুষ্কৃতী বলা হয়, ওই শ্রেণীর মানুষেরা আইনের দাবিদারি করত তৎকালীন সময়। তাদের দুষ্কৃতি বলার মধ্য দিয়ে আপনাদের কষ্ট পাওয়ার কোন কারণ নেই।’
প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি আ হা. সেলিম তালুকদারের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বাবু দীপঙ্কর তালুকদার ও কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও স্মরণ সভায় প্রয়াত মানু মজুমদারের সহধর্মিণী ক্যামেলিয়া বিশ্বাস।
স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের নেতা ও নেত্রকোনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. অসিত সরকার সজল, প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের নেতা মীর দেলোয়ার হোসেন, আব্দুস সামাদ পিন্টু, আব্দুল কাইয়ুম খসরু, আব্দুর উফ শিকদার, দূর্গাপুর উপজেলা প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি গিলভাট, ধোবাউড়া উপজেলা প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বজলুর রহমান, প্রতিরোধ যোদ্ধা আমজাদ হোসেন।
প্রথম প্রয়াত মানু মজুমদারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম