শিক্ষকের বেতের আঘাতে চোখ নষ্ট মাদ্রাসা ছাত্রের

যশোরে মাদ্রাসা শিক্ষক হাফিজুর রহমানের বেতের আঘাতে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামে এক ছাত্রের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। পড়া বলতে পারায় ওই শিক্ষক শাস্তি দিতে গিয়ে বেত্রাঘাত করতে থাকেন । একপর্যায়ে বেতের আঘাত ছাত্রের চোখে গিয়ে লাগে এবং চশমা ভেঙে চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যায়।

 

যশোরের মণিরামপুর শ্যামকুড়ের বুজতলা ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হাফিজীয়া মাদ্রাসায় গত সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

আরিফুল মনিরামপুরের জোঁকা গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে। গত তিনদিন ধরে ওই কিশোর ঢাকা ইস্পাহানি ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে দুই দফা অপারেশনের পর চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই চোখ দিয়ে আর কোনো দিন সে দেখতে পারবে না। এদিকে এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়েছেন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জে।

 

অসুস্থ আরিফুল বলে, দেড় বছর ধরে আমি ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হাফিজীয়া মাদ্রাসায় পড়ি। আমি আল কোরআনের ১৫ পারা হেফজ সম্পন্ন করেছি। গেল সোমবার সকালে মাদ্রাসায় পড়ছিলাম। আমার চোখে চশমা ছিল। তখন পড়া থামিয়ে বসে থাকায় হুজুর আমাকে ডেকে পাঠান। গেলে পরে মারপিট করেন। একপর্যায়ে বেতের আঘাত আমার বাম চোখে লাগে। চশমা ভেঙে কাচ গিয়ে ভেতরে ঢুকে চোখের কালো অংশ তিন ভাগ হয়ে যায়।

আরিফুলের বড় ভাই মামুন হোসেন বলেন, সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটলেও শিক্ষকরা আমাদের কিছু জানাননি। তারা নিজেরা আরিফুলকে মনিরামপুর ও যশোরে ডাক্তারের কাছে নেন। সেখানে ব্যর্থ হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় আমাদের খবর দেন।

 

আরিফুলের বাবা আয়ুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে আসি। এখানে দুই দফা অপারেশন করেও আমার ছেলের চোখ ভালো হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, সে ওই চোখ দিয়ে আর কোনো দিন দেখতে পারবে না।

আয়ুব হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে ঢাকায় আছেন। তারা চিকিৎসার সব খরচ দিচ্ছেন।

 

শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে ওই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ছেলেটার একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।

 

এদিকে যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপন কুমার সরকার জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে ঘটনাটি আমরা অনুসন্ধান করব।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আশুলিয়ায় বিএনপির জনসভা শুরু

» যারা নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করছে, তারা স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন

» জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা এগোচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে

» অতিরিক্ত সিম বন্ধ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত, ১ আগস্ট থেকে প্রক্রিয়া শুরু

» ৫ আগস্ট ঘিরে নিরাপত্তা হুমকি নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আরও একজনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র, আশঙ্কাজনক ৩

» তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা

» শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছে বাংলাদেশ

» ঝালমুড়ি বিক্রেতার এক মাসে বিদ্যুৎ বিল ১১ লাখ টাকা

» পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শহীদ মিনার থেকে সরিয়ে নেওয়ায় ছাত্রদলকে ধন্যবাদ জানান সারজিস

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিক্ষকের বেতের আঘাতে চোখ নষ্ট মাদ্রাসা ছাত্রের

যশোরে মাদ্রাসা শিক্ষক হাফিজুর রহমানের বেতের আঘাতে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামে এক ছাত্রের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। পড়া বলতে পারায় ওই শিক্ষক শাস্তি দিতে গিয়ে বেত্রাঘাত করতে থাকেন । একপর্যায়ে বেতের আঘাত ছাত্রের চোখে গিয়ে লাগে এবং চশমা ভেঙে চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যায়।

 

যশোরের মণিরামপুর শ্যামকুড়ের বুজতলা ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হাফিজীয়া মাদ্রাসায় গত সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

আরিফুল মনিরামপুরের জোঁকা গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে। গত তিনদিন ধরে ওই কিশোর ঢাকা ইস্পাহানি ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে দুই দফা অপারেশনের পর চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই চোখ দিয়ে আর কোনো দিন সে দেখতে পারবে না। এদিকে এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়েছেন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জে।

 

অসুস্থ আরিফুল বলে, দেড় বছর ধরে আমি ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হাফিজীয়া মাদ্রাসায় পড়ি। আমি আল কোরআনের ১৫ পারা হেফজ সম্পন্ন করেছি। গেল সোমবার সকালে মাদ্রাসায় পড়ছিলাম। আমার চোখে চশমা ছিল। তখন পড়া থামিয়ে বসে থাকায় হুজুর আমাকে ডেকে পাঠান। গেলে পরে মারপিট করেন। একপর্যায়ে বেতের আঘাত আমার বাম চোখে লাগে। চশমা ভেঙে কাচ গিয়ে ভেতরে ঢুকে চোখের কালো অংশ তিন ভাগ হয়ে যায়।

আরিফুলের বড় ভাই মামুন হোসেন বলেন, সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটলেও শিক্ষকরা আমাদের কিছু জানাননি। তারা নিজেরা আরিফুলকে মনিরামপুর ও যশোরে ডাক্তারের কাছে নেন। সেখানে ব্যর্থ হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় আমাদের খবর দেন।

 

আরিফুলের বাবা আয়ুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে আসি। এখানে দুই দফা অপারেশন করেও আমার ছেলের চোখ ভালো হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, সে ওই চোখ দিয়ে আর কোনো দিন দেখতে পারবে না।

আয়ুব হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে ঢাকায় আছেন। তারা চিকিৎসার সব খরচ দিচ্ছেন।

 

শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে ওই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ছেলেটার একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।

 

এদিকে যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপন কুমার সরকার জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে ঘটনাটি আমরা অনুসন্ধান করব।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com