সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : শাহবাগই হাসিনাকে স্বৈরাচারী হতে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্রঐক্য মঞ্চ’। আজ বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা। জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্রঐক্য মঞ্চ’ ও ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট’-এর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে শাহাবাগবিরোধী ছাত্রঐক্য মঞ্চ। আর বেলা বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট’।
সংবাদ সম্মেলনে ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চ’ জানায়, শাহাবাগীদের শাস্তির দাবিতে ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও এ হামলায় অংশ নেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তথাকথিত ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের’ ব্যানারে বাম-শাহবাগী গোষ্ঠী মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একটি মশাল মিছিল ঘোষণা করে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্রঐক্য মঞ্চের’ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি কিছুটা বিলম্ব করা হয়।
পরে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের’ সদস্যরা মিছিল না করার খবরে রাবির পরিবহন চত্বরের একটি ফাঁকা জায়গায় সমবেত হয় ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চের’ সদস্যরা। এ সময় পরিবহন চত্বরে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের সংগঠক ও নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেওয়ার সময় বাম সংগঠনের গুটিকয়েক মশালধারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার, জামায়াত-শিবির বলে বুলিং করতে থাকে এবং স্লোগান দিয়ে বারবার মশাল নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের’ সদস্যরা তাদের দিকে তেড়ে আসে বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইচ্ছে করেই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ভিক্টিম কার্ড খেলার পুরোনো চেষ্টা চালানো হয়। এক পর্যায়ে ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্রঐক্য মঞ্চের’ সদস্যদের লক্ষ করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করা হয়। ঢিলের আঘাতে তারেক নামে শাহাবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্যের এক সদস্য আহত হয়। এরপরই এমন ঘটনার সূত্রপাত ঘট বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘শাহবাগে মব ক্রিয়েট করে দেশে হাসিনার ফ্যাসিবাদের বীজ রোপণ করেছিল লাল সন্ত্রাসীরা। ইনসাফ ও ন্যায়ের লড়াইয়ে আঞ্জাম দিতে মঙ্গলবার রাবিতে সেই শাহবাগতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চের’ ব্যানারে একত্রিত হয়েছিলাম। শাহবাগই মূলত হাসিনাকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে ‘রাজাকার, জাময়াত-শিবির’ ট্যাগ দিয়ে যারা দেশের নাগরিকদের নাগরিক অধিকার ও মানবিক অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলতে থাকবে। তবে এ লড়াই হবে আইনি লড়াই, এ লড়াই হবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াই।’
রাবি ছাত্রদলও লালবাহিনীর ফাঁদে পা দিয়ে বিবৃতি ও মিছিল করেছে অভিযোগ করে ‘শাহাবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চের’ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘২০১৩ সালে শাহবাগে সৃষ্ট মবের পরিপূর্ণ বিরোধিতা করেছিল ছাত্রদল। শাহবাগবিরোধী ঐক্যের অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে আমরা ছাত্রদলকে পাশে পাব ভেবেছিলাম। কিন্তু শাহবাগ নিয়ে ছাত্রদলের বর্তমান স্ট্যান্ড চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ এই শাহবাগই বিএনপির সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ এর অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী ডিহিউম্যানাইজ করে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা সাজিয়ে ফাঁসির সম্মতি উৎপাদন করেছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শাহবাগবিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক মো. রাকিবুল ইসলাম, ছাত্র মিশনের সভাপতি জি এ ছাব্বির ও সদস্য সচিব জসীম রানা, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মো. মাহফুজার রহসান, সাবেক সমন্বয়ক মো. নুরুল ইসলাম শহীদ প্রমুখ।