শরীরের কিছু ব্যথাই জানান দেবে সুগার বাড়ার লক্ষণ

বিশ্বজুড়েই বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। অগ্ন্যাশয় থেকে তৈরি হয় শরীরের প্রয়োজনীয় ইনসুলিন হরমোন। যখন এই হরমোন সঠিক পরিমাণে উৎপন্ন হয় না কিংবা উৎপাদনে কোনও কারণে বাধা পায় সেখান থেকেই আসে ডায়াবেটিসের সমস্যা। ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করলে অতিরিক্ত শর্করা রক্তে জমতে থাকে। যে কারণে বেড়ে যায় ব্লাড সুগারের মাত্রা। প্রতি বছর বিশ্বে ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যু হয় প্রায় ১১ লাখ মানুষের। দিনের পর দিন তা বেড়েই চলেছে। 

 

ডায়াবেটিস ২ ধরণের হয়। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস। টাইপ ১ ডায়াবেটিস অটোইমিউন রোগ। এতে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন তৈরিই হয় না। যে কারণে যারা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের নিয়ম করে ইনসুলিন দিতে হয়। তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যাই এখন সবচাইতে বেশি। যেভাবে ডায়াবেটিস বাড়ছে তাতে সব মানুষেরই উচিত ৬ মাস অন্তর সুগার পরীক্ষা করানো। এছাড়াও শরীরের কিছু ব্যথাও কিন্তু সুগার বাড়ারই ইঙ্গিত দেয়।

 

ডায়াবেটিসে শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। বিশেষত কিডনি, হার্ট, চোখ। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে সেখান থেকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হতে পারে, যাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিও বলা হয়। এতে হাত-পায়ে সঠিক সংকেত পৌঁছায় না। ফলে বিভিন্ন অনুভূতিও নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় রক্তনালীও। তাই পায়ের আঙুল, পায়ের পাতা ঝিনঝিন করে। এমনকি, পায়ের পাতা অসাড় হয়েও আসতে পারে।

 

এছাড়াও হাত-পায়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথার সঙ্গে থাকে জ্বালাভাব। যাদের ডায়াবেটিসের কারণে এই হাত-পায়ে ব্যথা হয় তাদের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হয়। সবথেকে বেশি সমস্যা হয় হাঁটুতে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নইলে সমস্যা আরও অনেক বেশি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, বার বার তৃষ্ণা পাওয়া, খুব ক্লান্তি, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়া এবং বার বার মূত্র ত্যাগের মত সমস্যা থাকে।

 

বার বার মূত্রাশয়ের সংক্রমণ এবং ত্বকের সংক্রমণও কিন্তু সুগার বৃদ্ধির ইঙ্গিত। এছাড়াও হতে পারে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা। খাবার খেলে পেটে ব্যথা, হজম না হওয়া নানা সমস্যা কিন্তু সুগার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাই বলা হয় সুগার থাকলে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ার দিকে জোর দিতে। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকলে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।

 

সেই সঙ্গে যে সব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি সেই সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলি দ্রুত ভেঙে যায়, সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর যে কারণে চিনিযুক্ত খাবার, শর্করা, আলু, ভাত এসব ডায়াবেটিক রোগীদের এড়িয়ে চলতে বলা হয়।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ডেসটিনির এমডিসহ ১৯ জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড

» শ্রীপুরে প্রেমিকার সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

» ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

» বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

» সিদ্ধিরগঞ্জে দুই কারখানায় আগুন

» বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি আটক

» উইজডেনের বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে তাসকিন

» ট্রাম্পের শপথ ঘিরে নিরাপত্তা বলয়ে মোড়া থাকবে ক্যাপিটল হিল

» প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দিলো কমিশন

» কারাগারে অসুস্থ সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ঢামেকে ভর্তি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শরীরের কিছু ব্যথাই জানান দেবে সুগার বাড়ার লক্ষণ

বিশ্বজুড়েই বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। অগ্ন্যাশয় থেকে তৈরি হয় শরীরের প্রয়োজনীয় ইনসুলিন হরমোন। যখন এই হরমোন সঠিক পরিমাণে উৎপন্ন হয় না কিংবা উৎপাদনে কোনও কারণে বাধা পায় সেখান থেকেই আসে ডায়াবেটিসের সমস্যা। ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করলে অতিরিক্ত শর্করা রক্তে জমতে থাকে। যে কারণে বেড়ে যায় ব্লাড সুগারের মাত্রা। প্রতি বছর বিশ্বে ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যু হয় প্রায় ১১ লাখ মানুষের। দিনের পর দিন তা বেড়েই চলেছে। 

 

ডায়াবেটিস ২ ধরণের হয়। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস। টাইপ ১ ডায়াবেটিস অটোইমিউন রোগ। এতে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন তৈরিই হয় না। যে কারণে যারা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের নিয়ম করে ইনসুলিন দিতে হয়। তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যাই এখন সবচাইতে বেশি। যেভাবে ডায়াবেটিস বাড়ছে তাতে সব মানুষেরই উচিত ৬ মাস অন্তর সুগার পরীক্ষা করানো। এছাড়াও শরীরের কিছু ব্যথাও কিন্তু সুগার বাড়ারই ইঙ্গিত দেয়।

 

ডায়াবেটিসে শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। বিশেষত কিডনি, হার্ট, চোখ। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে সেখান থেকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হতে পারে, যাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিও বলা হয়। এতে হাত-পায়ে সঠিক সংকেত পৌঁছায় না। ফলে বিভিন্ন অনুভূতিও নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় রক্তনালীও। তাই পায়ের আঙুল, পায়ের পাতা ঝিনঝিন করে। এমনকি, পায়ের পাতা অসাড় হয়েও আসতে পারে।

 

এছাড়াও হাত-পায়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথার সঙ্গে থাকে জ্বালাভাব। যাদের ডায়াবেটিসের কারণে এই হাত-পায়ে ব্যথা হয় তাদের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হয়। সবথেকে বেশি সমস্যা হয় হাঁটুতে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নইলে সমস্যা আরও অনেক বেশি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, বার বার তৃষ্ণা পাওয়া, খুব ক্লান্তি, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়া এবং বার বার মূত্র ত্যাগের মত সমস্যা থাকে।

 

বার বার মূত্রাশয়ের সংক্রমণ এবং ত্বকের সংক্রমণও কিন্তু সুগার বৃদ্ধির ইঙ্গিত। এছাড়াও হতে পারে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা। খাবার খেলে পেটে ব্যথা, হজম না হওয়া নানা সমস্যা কিন্তু সুগার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাই বলা হয় সুগার থাকলে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ার দিকে জোর দিতে। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকলে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।

 

সেই সঙ্গে যে সব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি সেই সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলি দ্রুত ভেঙে যায়, সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর যে কারণে চিনিযুক্ত খাবার, শর্করা, আলু, ভাত এসব ডায়াবেটিক রোগীদের এড়িয়ে চলতে বলা হয়।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com