ছবি সংগৃহীত
ফকির লালন শাহকে বৈষম্যবিরোধী উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, লালন ফকির ১৩৪ বছর আগেই সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন। মরমী সাধকের ১৩৪তম তিরোধান দিবসে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী ছেউড়িয়ার লালন আখড়ায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ বলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপদেষ্টা বলেন, ফকির লালন সম্রাট ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাধক। তার বাণী সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান। আমরা যদি লালনকে ভালবাসি – তাহলে নারীর ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন করতে পারি না। কৃষিকাজে বিষ দিয়ে, নদীতে বিষ দিয়ে মাছ মারতে পারি না। লালন একাডেমির প্রতি লালন শাহ’র সকল বাণী সংরক্ষণ ও গবেষণারও দাবি জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারে, আপনারা শুধরে দেবেন, বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন। এই যে ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর আমরা যে সরকার গঠন করেছি, দায়িত্ব পেয়েছি, তা দায়সারা হতে পারে না।
উপদেষ্টা বলেন, লালন শুধু গান গাওয়ার বিষয় না, শুধু ভক্তির ব্যাপারও না, সবার জন্য লালন একটা জীবনব্যবস্থা। লালন আমাদের শিখিয়েছেন, কীভাবে প্রকাশ করতে হয় যে আমি কিছু না। লালন শুধু কুষ্টিয়ার নয়, লালন সারা বাংলাদেশের, লালন সারা বিশ্বের। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র এই আধ্যাত্মিক বাণী সামনে রেখে ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উৎসবের উদ্বোধন করেন।
সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি লালনের তিরোধান দিবস অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গেস্ট অব অনার সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর; কবি, দার্শনিক, মানবাধিকারকর্মী ফরহাদ মজহার; সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামান। শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন লালন আখড়ার খাদেম ফকির মহম্মদ আলী। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, কুষ্টিয়া ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১ কার্তিক আধ্যাত্বিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র তিরোধানের পর থেকে প্রতিবছর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।