ছবি: সংগৃহীত
চলতি জুলাই মাসে ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সরকার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে রোববার (৯ জুলাই) খুলছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় ডেঙ্গুভীতি নিয়েই ক্লাসে যাবে শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকবে কোমলমতি শিশুরা।
সরকারি তরফ থেকে বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ছুটির শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খোলার আগে ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করার ব্যাপারে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা রাখছি শনিবারের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস উপযোগী করে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা প্রস্তুত করবেন দায়িত্বশীলরা।
মাউশি মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গু ও বন্যার ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘স্টান্ডিং অর্ডার’ (সর্বদা পালনীয়) দেওয়া আছে। এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব ঘটে। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাতিল করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন- নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কর্মচারী, স্কাউটস, বিএনসিসি ও শিক্ষার্থী সমন্বয়ে এক বা একাধিক টিম গঠন করতে হবে। ওই টিম ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম চালাবে।
নেহাল আহমেদ আরও বলেন, বিদ্যালয় ও এর আশপাশে স্বচ্ছ পানি জমার স্থান চিহ্নিত করে পরিষ্কার করবে; খোলা পাত্রে জমাট পানিতে ডেঙ্গু ডিম ছাড়ে। তাই বাথরুমের বদনা ও বালতি যাচাই করতে হবে। হাইকমোডে হারপিক ঢেলে ঢাকনা বন্ধ ও প্যানে হারপিক ঢেলে বস্তা বা অন্য কিছু দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে হবে, কোনো স্থানে জমাটবদ্ধ পানি থাকলে লার্ভিসাইড স্প্রে এবং পানি নিষ্কাশন করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) উপপরিচালক নুরুল আমিন গণমাধ্যমকে জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্ট চালানোর লক্ষ্যে ঈদের ছুটির শুরুতেই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। শনিবার সব প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতা চলবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে ২ হাজার ১৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী আছে। তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৭২ জন ও ঢাকার বাইরে ১১০ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় একজন মারা গেছে। আর গত জানুয়ারি থেকে মারা গেছে ৬৫ জন। বর্তমানে ডেঙ্গু শুধু ঢাকা নয়, প্রায় সারা দেশেই বিস্তার লাভ করেছে। শুক্রবার পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রামে ২৪৩ জন, খুলনায় ৫৫ জন, রাজশাহীতে ১৪ জন রংপুরে ৩৩ জন, বরিশালে ৫২ জন ও সিলেটে ১১ জন আক্রান্ত আছে।
প্রসঙ্গত ২৫ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ ছুটিতে পরিচ্ছন্নতার অভাবে খেলার মাঠ, আশপাশ এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ডেঙ্গু মশার বংশ বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে। কেননা বিগত বন্ধের দিনে বৃষ্টির স্বচ্ছ পানি জমে থাকার সম্ভাবনা থাকায় এ শঙ্কা আরও বাড়ছে।