সংগৃহীত ছবি
স্পোর্টস ডেস্ক :আগের ইনিংসেই ব্যাট হাতে রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের ব্যাটাররা। লিটন দাস আর তানজিদ তামিমের জোড়া শতকে শাকিব খানের দল গড়ে রেকর্ড ২৫৪ রানের সংগ্রহ। বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা রাজশাহীকে জিততে হলে তাই রেকর্ডই গড়তে হতো। তবে তা আর হলো কোথায়। উল্টো অসহায় আত্মসমর্পণ করলো এনামুল হক বিজয়ের দল।
এবারের বিপিএলে নিজেদের প্রথম ছয় ম্যাচের হারের স্বাদ নিতে হয়েছিল ঢাকা ক্যাপিটালসকে। অবশেষে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেল শাকিব খানের দল। লিটন দাস-তানজিদ তামিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দলীয় সংগ্রহ গড়ার রেকর্ড গড়েছিল ঢাকা, দুর্বার রাজশাহীকে লক্ষ্য দিয়েছিল ২৫৫ রানের। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এনামুল হক বিজয়ের দল ১৫.২ ওভারে ১০৫ রান করেই অল আউট হয়েছে। আর তাতে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ঢাকা। চলমান আসরে এটিই ফ্র্যাঞ্চাইজিটির প্রথম জয়।
আগে ব্যাট করতে নামা ঢাকাকে বড় সংগ্রহ গড়ে দিয়েছিলেন লিটন-তামিম। পরে বল হাতে দলের বড় জয় নিশ্চিত করেছেন আবু জায়েদ- মুকিদুল ইসলাম- ফরমানুল্লাহ- মোসাদ্দেক হোসেনরা। ঢাকার এ চার বোলারই নিয়েছেন ২টি করে উইকেট, এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজু রহমান। রান আউট হয়েছেন রাজশাহীর শফিউল ইসলাম, আর তাতেই ১০৫ রানে মুখ থুবড়ে পড়ে বড় ব্যবধানে হারে রাজশাহী।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল রাজশাহী। এক পর্যায়ে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিজয়ের দল পড়ে অথৈ সাগরে। দলটির কোনো ব্যাটারই আজ হাল ধরতে পারেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল রায়ান বার্ল। তিনি করেছেন ৪৭ রান, তাঁর ৩২ বলে ৪৭ রানের সুবাদেই একশ রানের দলীয় সংগ্রহ পার করতে পারে রাজশাহী, তবে বড় হার এড়াতে পারেনি।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইতিহাস গড়ে ঢাকা। বিপিএলের ইতিহাসে ঢাকার সর্বোচ্চ দলীয় রান সংগ্রহের রেকর্ড গড়ার পথে আজ তান্ডব চালিয়েছেন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ঘোষিত বাংলাদেশের দলে জায়গা পাননি লিটন। সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁর ফর্ম ভালো নয় বলেই দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এদিকে দল থেকে বাদ পড়ার ক্ষোভই যেন আজ রাজশাহীর বোলারদের উপর ঝেড়েছেন লিটন।
তিনি আজ ওপেনিংয়ে নেমে খেলেছেন ৫৫ বলে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। ২২৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে ১০ চার আর ৯ ছয়ে মারকুটে এই ইনিংস খেলেন তিনি। এদিকে লিটনের মতোই আজ আগ্রাসী খেলেছেন ঢাকার আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। তিনিও করেছেন সেঞ্চুরি। ৬৪ বলে ১০৮ রান করে তামিম আউট হন শেষ ওভারে।
এদিকে তামিম-লিটনের জুটিও আজ গড়েছে দারুণ এক রেকর্ড। উদ্বোধনী জুটিতে এ দুজন মিলে আজ করেছেন ২৪১ রান। বিপিএলে উদ্বোধনী জুটিতে সবথেকে বেশি রান করার রেকর্ড এটিই। এমনকি বিপিএলে যে কোনো উইকেটেই সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড এটিই।
ঢাকার বোলারদের উপর আজ শুরু থেকেই তাণ্ডব চালিয়েছেন লিটন-তামিমরা। পাওয়ার প্লে তে ঢাকার স্কোরবোর্ডে ওঠে ৫৯ রান। এরপর তামিম-লিটন মিলে রাজশাহীর বোলারদের বল একের পর এক বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেন এটি। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি এটিই।
৪৪ বলে সেঞ্চুরি করে বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুতগতির সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েছেন লিটন। আর তাঁর করা এই সেঞ্চুরি বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি।
বিপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম দ্বিতীয় শতকে এই রেকর্ড ভাগাভাগি করছেন ক্রিস গেইলের সঙ্গে। ইউনিভার্স বস খ্যাত গেইল ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১২ সালে, সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে। লিটন সমানসংখ্যক বলে করেছেন সেঞ্চুরি।
বিপিএল ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি আহমেদ শেহজাদের। ২০১২ সালেই রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাত্র ৪০ বলে।