ছবি- সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২২-২৩ সেশনে স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষা আগামী সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরীক্ষা চলাকালে কোন ধরণের অনিয়ম প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
উপাচার্য বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল ও সংশ্লিষ্টরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। এছাড়া কোন প্রতারকের প্ররোচনায় সাড়া না দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উপাচার্য আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষা বিশাল এক যজ্ঞ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একার পক্ষে এটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই সকলের সহযোগিতা কাম্য। তাছাড়া ক্যাম্পাসে ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের সার্বিক নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মেডিকেল টিম সর্বদা কাজ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় তিন ইউনিটে আবেদন (কোটাসহ) পড়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪টি। এরমধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৫০টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩০ হাজার ৬৭৪টি এবং ‘সি’ ইউনিটে ৭৫ হাজার ৮৫০টি। আসন সংখ্যা রয়েছে ৩ হাজার ৯৩০টি। সেই হিসেবে প্রতি আসনে লড়বেন ৪৫ জন ভর্তিচ্ছু। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে ৮০টি। নূন্যতম পাশ নম্বর ৪০।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরী জুড়ে প্রকট আবাসন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও হোটেল কিংবা মেসে হচ্ছে না থাকার ব্যবস্থা। ফলে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান জানান, আমরা মেসগুলোতে সাধ্য অনুযায়ী থাকার ব্যবস্থা রেখেছি। কিন্তু অতিরিক্ত জনসমাগমের কারণে সকলের থাকা কষ্টসাধ্য। মেসে থাকার ক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর থেকে টাকা নেয়া হবে না। তবে অভিভাবকদের ক্ষেত্রে মেস বা বাড়ি ভেদে অতিরিক্ত ২০০-৫০০ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীতে ছোট-বড় প্রায় ৬৫ আবাসিক হোটেল আছে। যেখানে বড়জোর আড়াই হাজার লোক থাকতে পারবেন। অন্যদিকে মেসে প্রায় পঞ্চাশ হাজার শিক্ষার্থী থাকার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবক মিলে প্রায় ৩ লক্ষাধিক জনসমাগম হবে। ফলে একমাস পূর্বেই হোটেলগুলো ভাড়া হয়ে গেছে।
এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও অবিভাবকের সমাগম ঘটে। কিন্তু সেই তুলনায় নগরীতে আবাসন খুবই সীমিত। তাই ক্যাম্পাসের হলসহ বিভিন্ন জায়গায় রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আশেপাশের জেলাগুলোতে থেকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকলে অভিভাবকেরা সেটা বিবেচনা করতে পারেন। ক্যাম্পাসে সার্বিক সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।