রহস্যময় এক পুকুর

এই পুকুরে প্রতিবছর কেউ না কেউ ডুবে মরে যায়। শহীদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হলের মাঝামাঝি জায়গায় এই পুকুরটি অবস্থিত। পুকুরটির আনুমানিক বয়স ১৫০ বছর। এই পুকুরে সব সময় ৪০ থেকে ৪২ ফুট পানি থাকে। 

 

অনেকের মতে,তিথি-র(চান্দ্র দিন)সময় বেশির ভাগ সময় এই পুকুরে মৃত্যু ঘটে।বি শেষ করে অষ্টম তিথিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ১৯৮৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একবার পুকুরটির সব পানি সেচে ফেলার ব্যবস্থা করে। কিন্তু,সে সময় পুকুরটির সব পানি পুরোপুরি সেচে ফেলা সম্ভব হয়নি। পুকুরের চারপাশে আছে চারটি বড় গর্ত যাকে বলে পাতাল কূপ। ফলে এ পুকুরের পানির স্তর সব সময় একই থাকে।

রূপকথার মতো নানা গল্প রয়েছে এই পুকুরটিকে ঘিরে। জনশ্রুতি আছে,পুকুরটির মাঝখানে গেলে নাকি প্রাণ নিয়ে আর বেঁচে ফিরতে পারে না। তবে,কথাটির পক্ষে জোরালো প্রমাণও রয়েছে। সর্বপ্রথম ১৯৩৪ সালে একজন এ পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। ওই মৃত ব্যক্তির নাম পুকুর ঘাটে লেখা ছিল বর্তমানে তা অস্পষ্ট। এই পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে অনেকেই মারা গেছে।

এ কারণে ঘাটের পাশে একটি সাইনবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে বিজ্ঞপ্তি আকারে লেখা রয়েছে-‘পুকুরে গোসল ও সাঁতার কাটা নিষেধ’। এই পুকুরে সাতার কাটা নিষিদ্ধ। এর আগেও বেশ কয়েকজন পুকুরটি ডুবে মারা গেছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গোসলে নামেন শিক্ষার্থীরা।

লোক মুখে শোনা যায় যে,২০১৭ সালে কর্মচারী নোটিশটি টাঙিয়ে দিয়েছিল। এরপর একদিন সে স্বপ্ন দেখে তাকে এক লম্বা চুলওয়ালা ডাইনি বলছে, তুই আমার আহার কেড়ে নিয়েছিস,তোর খবর আছে। এরপর ওই কর্মচারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।

আরও কথিত আছে, এই পুকুরে যারা ডুবে মারা যায়,ডুবুরিরা তাদের লাশ পায় বসা অবস্থায়! কিন্তু পুকুরে ডুবে মারা গেলে তো তাদের লাশ বসা অবস্থায় থাকার কথা না। এছাড়া,কেউ পানিতে ডুবে মারা যাবার পর তাদের পেটে পানি থাকার কথা। এ পর্যন্ত যারা মরছে তাদের কারো পেটে পানি ছিল না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি

ভাগ্যক্রমে কেউ কেউ ডুবতে গিয়ে ফিরে আসে অন্যদের সহযোগিতায়। এক শিক্ষার্থীর ডুবতে ডুবতে বেঁচে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এক কর্মচারী জানিয়েছেন- ওই শিক্ষার্থী পুকুরের মাঝখানে গিয়ে ডুবে যাচ্ছিল।পরে আশপাশের মানুষের সহায়তা তাকে উদ্ধার করা হয়।ওই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, তার শরীরে বিদ্যুতের তারের মতো কী যেন একটা স্পর্শ করেছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় তার বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে শুধু হাত নাড়িয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি থাকায় পানিতে অক্সিজেনের স্বল্পতা আছে। হয়তো সে কারণে সাঁতার কাটতে গিয়ে অক্সিজেনের স্বল্পতায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

 

এছাড়া এই পুকুরের পানিতে পানির যে মান থাকা দরকার,তা নেই। পানিতে ‘H2’ রাসায়নিক কম আছে। আর ‘B2’ নামের রাসায়নিক বেশি। ফলে এই পানিতে ডুব দিলে রক্তচাপ-জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
প্রকৃত কারণ কি তা এখনও সবার অজানাই রয়ে গেছে।

সূূএ: ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পবিত্র আশুরা ৬ জুলাই

» তোষামোদি করতে কিছু নেতা তারেক রহমানকে মাস্টারমাইন্ড বলছেন: সারজিস

» নতুন বাংলাদেশের জন্ম ৫ আগস্ট, ৮ নয়: হাসনাত আব্দুল্লাহ

» গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই: প্রেসসচিব

» গণতন্ত্র ধ্বংসকারী তিন সিইসির বিচার হওয়া উচিত : রিজভী

» ইরান কখনও আত্মসমর্পণ করবে না: খামেনি

» আগস্টে মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

» প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ

» যেকোনও সময় ভোটার তালিকাভুক্তির ক্ষমতা চায় ইসি

» আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস লক্ষ্মীপুরে বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতা  

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রহস্যময় এক পুকুর

এই পুকুরে প্রতিবছর কেউ না কেউ ডুবে মরে যায়। শহীদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হলের মাঝামাঝি জায়গায় এই পুকুরটি অবস্থিত। পুকুরটির আনুমানিক বয়স ১৫০ বছর। এই পুকুরে সব সময় ৪০ থেকে ৪২ ফুট পানি থাকে। 

 

অনেকের মতে,তিথি-র(চান্দ্র দিন)সময় বেশির ভাগ সময় এই পুকুরে মৃত্যু ঘটে।বি শেষ করে অষ্টম তিথিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ১৯৮৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একবার পুকুরটির সব পানি সেচে ফেলার ব্যবস্থা করে। কিন্তু,সে সময় পুকুরটির সব পানি পুরোপুরি সেচে ফেলা সম্ভব হয়নি। পুকুরের চারপাশে আছে চারটি বড় গর্ত যাকে বলে পাতাল কূপ। ফলে এ পুকুরের পানির স্তর সব সময় একই থাকে।

রূপকথার মতো নানা গল্প রয়েছে এই পুকুরটিকে ঘিরে। জনশ্রুতি আছে,পুকুরটির মাঝখানে গেলে নাকি প্রাণ নিয়ে আর বেঁচে ফিরতে পারে না। তবে,কথাটির পক্ষে জোরালো প্রমাণও রয়েছে। সর্বপ্রথম ১৯৩৪ সালে একজন এ পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। ওই মৃত ব্যক্তির নাম পুকুর ঘাটে লেখা ছিল বর্তমানে তা অস্পষ্ট। এই পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে অনেকেই মারা গেছে।

এ কারণে ঘাটের পাশে একটি সাইনবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে বিজ্ঞপ্তি আকারে লেখা রয়েছে-‘পুকুরে গোসল ও সাঁতার কাটা নিষেধ’। এই পুকুরে সাতার কাটা নিষিদ্ধ। এর আগেও বেশ কয়েকজন পুকুরটি ডুবে মারা গেছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গোসলে নামেন শিক্ষার্থীরা।

লোক মুখে শোনা যায় যে,২০১৭ সালে কর্মচারী নোটিশটি টাঙিয়ে দিয়েছিল। এরপর একদিন সে স্বপ্ন দেখে তাকে এক লম্বা চুলওয়ালা ডাইনি বলছে, তুই আমার আহার কেড়ে নিয়েছিস,তোর খবর আছে। এরপর ওই কর্মচারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।

আরও কথিত আছে, এই পুকুরে যারা ডুবে মারা যায়,ডুবুরিরা তাদের লাশ পায় বসা অবস্থায়! কিন্তু পুকুরে ডুবে মারা গেলে তো তাদের লাশ বসা অবস্থায় থাকার কথা না। এছাড়া,কেউ পানিতে ডুবে মারা যাবার পর তাদের পেটে পানি থাকার কথা। এ পর্যন্ত যারা মরছে তাদের কারো পেটে পানি ছিল না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি

ভাগ্যক্রমে কেউ কেউ ডুবতে গিয়ে ফিরে আসে অন্যদের সহযোগিতায়। এক শিক্ষার্থীর ডুবতে ডুবতে বেঁচে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এক কর্মচারী জানিয়েছেন- ওই শিক্ষার্থী পুকুরের মাঝখানে গিয়ে ডুবে যাচ্ছিল।পরে আশপাশের মানুষের সহায়তা তাকে উদ্ধার করা হয়।ওই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, তার শরীরে বিদ্যুতের তারের মতো কী যেন একটা স্পর্শ করেছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় তার বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে শুধু হাত নাড়িয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি থাকায় পানিতে অক্সিজেনের স্বল্পতা আছে। হয়তো সে কারণে সাঁতার কাটতে গিয়ে অক্সিজেনের স্বল্পতায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

 

এছাড়া এই পুকুরের পানিতে পানির যে মান থাকা দরকার,তা নেই। পানিতে ‘H2’ রাসায়নিক কম আছে। আর ‘B2’ নামের রাসায়নিক বেশি। ফলে এই পানিতে ডুব দিলে রক্তচাপ-জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
প্রকৃত কারণ কি তা এখনও সবার অজানাই রয়ে গেছে।

সূূএ: ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com