যে ডায়েটে হার্ট ভালো থাকবে, কমবে স্ট্রোকের ঝুঁকি

ছবি সংগৃহীত

 

বর্তমান লাইফস্টাইলের প্রকোপে বাড়ছে হার্টের সমস্যা। সঠিক ডায়েট ও লাইফস্টাইল এর একমাত্র সমাধান। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে কেমন ডায়েট মেনে চলবেন? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানরা।

 

যত দিন যাচ্ছে, আমরা উন্নত থেকে উন্নততর সমাজে পা রাখছি। সেইসঙ্গে ততই বাড়ছে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির প্রকোপ। হৃদযন্ত্রের সমস্যাও এখন জ্বরের মতো প্রত্যেক বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকক্ষেত্রেই বংশগত কারণে হার্টের সমস্যা দেখা দিলেও সঠিক চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে তা প্রতিরোধযোগ্য।

 

হার্টের সমস্যার মূলে রয়েছে ধূমপান, অতিরিক্ত স্ট্রেস ও শরীরচর্চার অভাব ইত্যাদি নানাবিধ কারণ। এই কারণগুলো বাদ দিলেও প্রধান যে ফ্যাক্টরটি কাজ করে তা হলো ডায়েট। অতিরিক্ত ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলে ধমনির গায়ে সেই ফ্যাট জমতে শুরু করে। ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে ধমনিতে রক্ত জমাট বেঁধে সৃষ্টি করে হার্ট অ্যাটাকের।

 

আর এই ধরনের ব্লাড ভেসেল যদি মস্তিষ্কে যায়, তাহলেই দেখা দেয় স্ট্রোক। তাই আপনি কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন এর ওপরও আপনার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। এমনকি যদি আপনার আগে থেকেও হার্টের সমস্যা থেকে থাকে, সেক্ষেত্রেও সঠিক ডায়েট মেনে চললে উপকার পাবেন। সঠিক খাবার আপনার ধমনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়। ফলে রক্ত তরল ও জমাটবিহীন থাকে এবং হার্টও ভালো থাকে।

কী খাবেন?

১. হোলগ্রেন সিরিয়াল যেমন গম, ব্রাউন রাইস, জোয়ার, বাজরা ইত্যাদি বেশি করে খান।

 

২. প্রতিদিন একগ্লাস করে টাটকা সবজির রস খেতে পারেন। সেটা ধনেপাতা ও পুদিনার রসও হতে পারে আবার হুইট গ্রাস জুসও হতে পারে। সবুজ সবজির রস যকৃতের জন্য ভালো। আর যকৃতই ফ্যাট হজম করতে সাহায্য করে। তাই যকৃৎ ভালো থাকলে ফ্যাট হজমও ভালো হয়। এছাড়া সবুজ সবজির রস অ্যানিমিয়া, শরীর কিংবা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং রক্ত বিশুদ্ধ ও তরল রাখতে সাহায্য করে। ফলে স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

 

৩. খেয়াল রাখুন আপনার দৈনন্দিন ডায়েটের অন্তত ২৫ শতাংশ যেন সবজি হয় (আলু বাদে)। সবজিতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৪. দিনে অন্তত ২-৩ রকমের ফল খান।

 

৫. প্রতিদিন ২ কোয়া রসুনকুচি খেতে পারেন। রসুন ভ্যাসোডায়ালেটর, অর্থাৎ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে এবং রক্ত তরল রাখতেও সাহায্য করে।

 

৬. সব ধরনের ভাজাপোড়া, ময়দাযুক্ত খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলুন। কারণ এই জাতীয় খাবারই পরবর্তীকালে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।

৭. যদি আপনি হার্টের সমস্যায় ভুক্তভোগী হন, সেক্ষেত্রে ডায়েটে বেশি করে কাঁচা পেঁয়াজ, আদা, কালো মাশরুম, রসুন এবং গ্রিন টি রাখুন। এগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। আপনার রক্ত জমাট বাঁধছে কি না এবং বাঁধলেও কীভাবে বাঁধছে, তার ওপরই আপনার হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা নির্ভর করছে।

৮. আপনার করোনারি হার্ট ডিজ়িজ় থাকলে প্রতিদিন একবাটি করে সেদ্ধ কালো বা সবুজ ছোলা খান। সামান্য অলিভ অয়েল এবং পেঁয়াজ মিশিয়ে স্যালাড বানিয়েও খেতে পারেন। এতেও কোলেস্টেরল কমবে।

৯. ভিটামিন ই এলডিএল কোলেস্টেরলের জারণে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন ২০০-৪০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।

১০. প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট জোর পায়ে হাঁটুন। এতে ব্লাড সুগার, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল সবই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ঈদ উল আযহা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষন ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি

» সৌদির সাথে মিল রেখে জামালপুরে ২০ গ্রামে ঈদুল আযহা উদযাপন

» আমিরাতে ঈদুল আজহা উদযাপন

» সীমান্তে গরু চোরাচালান কমলেও হত্যা থামেনি : আজাদ মজুমদার

» দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান

» এবার নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ কনফিডেন্ট আছি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা

» বিপুল পরিমাণ মাদকসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার

» ঢাকার একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

» তারুণ্যনির্ভর আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে ডায়েটে হার্ট ভালো থাকবে, কমবে স্ট্রোকের ঝুঁকি

ছবি সংগৃহীত

 

বর্তমান লাইফস্টাইলের প্রকোপে বাড়ছে হার্টের সমস্যা। সঠিক ডায়েট ও লাইফস্টাইল এর একমাত্র সমাধান। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে কেমন ডায়েট মেনে চলবেন? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানরা।

 

যত দিন যাচ্ছে, আমরা উন্নত থেকে উন্নততর সমাজে পা রাখছি। সেইসঙ্গে ততই বাড়ছে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির প্রকোপ। হৃদযন্ত্রের সমস্যাও এখন জ্বরের মতো প্রত্যেক বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকক্ষেত্রেই বংশগত কারণে হার্টের সমস্যা দেখা দিলেও সঠিক চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে তা প্রতিরোধযোগ্য।

 

হার্টের সমস্যার মূলে রয়েছে ধূমপান, অতিরিক্ত স্ট্রেস ও শরীরচর্চার অভাব ইত্যাদি নানাবিধ কারণ। এই কারণগুলো বাদ দিলেও প্রধান যে ফ্যাক্টরটি কাজ করে তা হলো ডায়েট। অতিরিক্ত ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলে ধমনির গায়ে সেই ফ্যাট জমতে শুরু করে। ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে ধমনিতে রক্ত জমাট বেঁধে সৃষ্টি করে হার্ট অ্যাটাকের।

 

আর এই ধরনের ব্লাড ভেসেল যদি মস্তিষ্কে যায়, তাহলেই দেখা দেয় স্ট্রোক। তাই আপনি কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন এর ওপরও আপনার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। এমনকি যদি আপনার আগে থেকেও হার্টের সমস্যা থেকে থাকে, সেক্ষেত্রেও সঠিক ডায়েট মেনে চললে উপকার পাবেন। সঠিক খাবার আপনার ধমনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়। ফলে রক্ত তরল ও জমাটবিহীন থাকে এবং হার্টও ভালো থাকে।

কী খাবেন?

১. হোলগ্রেন সিরিয়াল যেমন গম, ব্রাউন রাইস, জোয়ার, বাজরা ইত্যাদি বেশি করে খান।

 

২. প্রতিদিন একগ্লাস করে টাটকা সবজির রস খেতে পারেন। সেটা ধনেপাতা ও পুদিনার রসও হতে পারে আবার হুইট গ্রাস জুসও হতে পারে। সবুজ সবজির রস যকৃতের জন্য ভালো। আর যকৃতই ফ্যাট হজম করতে সাহায্য করে। তাই যকৃৎ ভালো থাকলে ফ্যাট হজমও ভালো হয়। এছাড়া সবুজ সবজির রস অ্যানিমিয়া, শরীর কিংবা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং রক্ত বিশুদ্ধ ও তরল রাখতে সাহায্য করে। ফলে স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

 

৩. খেয়াল রাখুন আপনার দৈনন্দিন ডায়েটের অন্তত ২৫ শতাংশ যেন সবজি হয় (আলু বাদে)। সবজিতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৪. দিনে অন্তত ২-৩ রকমের ফল খান।

 

৫. প্রতিদিন ২ কোয়া রসুনকুচি খেতে পারেন। রসুন ভ্যাসোডায়ালেটর, অর্থাৎ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে এবং রক্ত তরল রাখতেও সাহায্য করে।

 

৬. সব ধরনের ভাজাপোড়া, ময়দাযুক্ত খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলুন। কারণ এই জাতীয় খাবারই পরবর্তীকালে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।

৭. যদি আপনি হার্টের সমস্যায় ভুক্তভোগী হন, সেক্ষেত্রে ডায়েটে বেশি করে কাঁচা পেঁয়াজ, আদা, কালো মাশরুম, রসুন এবং গ্রিন টি রাখুন। এগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। আপনার রক্ত জমাট বাঁধছে কি না এবং বাঁধলেও কীভাবে বাঁধছে, তার ওপরই আপনার হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা নির্ভর করছে।

৮. আপনার করোনারি হার্ট ডিজ়িজ় থাকলে প্রতিদিন একবাটি করে সেদ্ধ কালো বা সবুজ ছোলা খান। সামান্য অলিভ অয়েল এবং পেঁয়াজ মিশিয়ে স্যালাড বানিয়েও খেতে পারেন। এতেও কোলেস্টেরল কমবে।

৯. ভিটামিন ই এলডিএল কোলেস্টেরলের জারণে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন ২০০-৪০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।

১০. প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট জোর পায়ে হাঁটুন। এতে ব্লাড সুগার, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল সবই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com