যমুনার বিস্তৃর্ণ চর রাঙাচ্ছে লাল মরিচ, বাম্পার ফলনেও হতাশ কৃষকরা

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে নতুন পলি মাটিতে চাষ হয়েছে লাল সোনা খ্যাত মরিচের। এখন চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ক্ষেত রাঙাচ্ছে লাল মরিচ। এই মৌসুমে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ মরিচ চাষীরা। গেলো বছর মরিচ চাষে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছর লোকসানের শঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তপ্ত রৌদে মরিচ শুকাচ্ছেন চাষীরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত কুলকান্দি, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারি, গাইবান্ধা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার। চলতি বছর মরিচের ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি মৌসুমে কাঁচা মরিচের বাজার দর কম থাকায় লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠনো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। যমুনার বিস্তৃর্ণ চরে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করতে আসেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহে ইসলামপুরের উলিয়া ও গুঠাইল বাজারে বসে মরিচের হাট। এই হাট থেকে ব্যাপারীরা মরিচ ক্রয় করে চরের তপ্ত বালুর ওপর শুকিয়ে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

 

কৃষকরা জানান, এবার মরিচের ফলন অনেক ভালো। তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। এছাড়া এবার রোগবালাই ও পোকা মাকড়ও আক্রমণ করেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে রোগবালাই দমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বাজারে মরিচের দাম নেই। গুঠাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর মরিচ চাষীদের মাথায় হাত। বাজারে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে ক্রয় করতে পারছি।

 

মরিচ চাষী সোলায়মান হোসেন জানান, এ বছর কাঁচা মরিচ প্রাইকারি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। সেই টাকা মরিচ তোলা শ্রমিক দের দিতেই শেষ। সেজন্য কাঁচা মরিচ বিক্রি না করে শুকনো মরিচ বিক্রি করতে তপ্ত বালুতে শুকাচ্ছি। লাভবান হওয়ার আশায় আমার মত অনেকেই মরিচ শুকাতে তপ্ত রৌদে দিন পার করছে।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএলএম রেজুয়ান বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে দেশি বালিঝুড়ি সহ বিভিন্ন হাইব্রিড প্রজাতীর মরিচ চাষ করে বাম্পার ফলন পাচ্ছে চাষীরা। এ বছর ইসলামপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলাদেশ থেকেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

» রমজানে সিএনজি স্টেশন বন্ধের নতুন সময়সূচি

» আধুনিক সেবার আওতায় আসছেন হজ যাত্রীরা : ধর্ম উপদেষ্টা

» অবশেষে শাহিদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণ জানালেন কারিনা

» অস্ট্রেলিয়ায় ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়

» বিশ্বমান বজায় রেখে শ্রম আইন সংস্কারের আহ্বান ড. ইউনূসের

» আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপন

» মোরেলগঞ্জ সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার মাহফিল

» আগৈলঝাড়ায় চুরির সময় চোরদের দেখে ফেলায় হত্যার ভয় দেখানোর জন্য আতঙ্কিত হয়ে শিশুর মৃত্যু

» নিরবচ্ছিন্ন দানের জন্য ‘সদকাহ্ জারিয়াহ্’ অ্যাকাউন্ট চালু করলো প্রাইম ব্যাংক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যমুনার বিস্তৃর্ণ চর রাঙাচ্ছে লাল মরিচ, বাম্পার ফলনেও হতাশ কৃষকরা

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে নতুন পলি মাটিতে চাষ হয়েছে লাল সোনা খ্যাত মরিচের। এখন চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ক্ষেত রাঙাচ্ছে লাল মরিচ। এই মৌসুমে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ মরিচ চাষীরা। গেলো বছর মরিচ চাষে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছর লোকসানের শঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তপ্ত রৌদে মরিচ শুকাচ্ছেন চাষীরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত কুলকান্দি, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারি, গাইবান্ধা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার। চলতি বছর মরিচের ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি মৌসুমে কাঁচা মরিচের বাজার দর কম থাকায় লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠনো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। যমুনার বিস্তৃর্ণ চরে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করতে আসেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহে ইসলামপুরের উলিয়া ও গুঠাইল বাজারে বসে মরিচের হাট। এই হাট থেকে ব্যাপারীরা মরিচ ক্রয় করে চরের তপ্ত বালুর ওপর শুকিয়ে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

 

কৃষকরা জানান, এবার মরিচের ফলন অনেক ভালো। তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। এছাড়া এবার রোগবালাই ও পোকা মাকড়ও আক্রমণ করেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে রোগবালাই দমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বাজারে মরিচের দাম নেই। গুঠাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর মরিচ চাষীদের মাথায় হাত। বাজারে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে ক্রয় করতে পারছি।

 

মরিচ চাষী সোলায়মান হোসেন জানান, এ বছর কাঁচা মরিচ প্রাইকারি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। সেই টাকা মরিচ তোলা শ্রমিক দের দিতেই শেষ। সেজন্য কাঁচা মরিচ বিক্রি না করে শুকনো মরিচ বিক্রি করতে তপ্ত বালুতে শুকাচ্ছি। লাভবান হওয়ার আশায় আমার মত অনেকেই মরিচ শুকাতে তপ্ত রৌদে দিন পার করছে।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএলএম রেজুয়ান বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে দেশি বালিঝুড়ি সহ বিভিন্ন হাইব্রিড প্রজাতীর মরিচ চাষ করে বাম্পার ফলন পাচ্ছে চাষীরা। এ বছর ইসলামপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com